জাতীয়
সড়ক দুর্ঘটনা: বছরে ২৪ হাজার ৯৫৪ জনের প্রাণহানি
বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন ২৪ হাজার ৯৫৪ জন মানুষ। সংস্থাটি আরও বলেছে, বাংলাদেশে বছরে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এ কথা বলেছে।
শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয় এ সংবাদ সম্মেলনের।
সংবাদ সম্মেলনে সড়ক আইন ও বিধি অনুযায়ী দুর্ঘটনায় আহত সব নাগরিককে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ, আহত রোগীকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান। এসময় ই-ট্রাফিকিং সিস্টেম চালু করা গেলে সড়কে দুর্ঘটনা ৮০ শতাংশ কমে আসবে বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার থাকলেও সড়ক নিরাপত্তায় দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই। দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে রোড সেফটি ইউনিট গঠিত হলেও মূলত গণমাধ্যমে কথা বলা ছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তাদের কোনো গবেষণা কার্যক্রম নেই। সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয়ে নানান ইউনিট ও প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও সড়ক দুর্ঘটনা থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষায় কোনো বাজেট নেই।
‘এ মন্ত্রণালয়ে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কোনো গবেষক নেই, গবেষণা নেই, কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই। ফলে প্রতি বছর সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছেই।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ হাজার মানুষের প্রাণহানির তথ্য মিলেছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সড়কে প্রতিদিন ৬৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। এ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ৩৬০ জন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আহত হচ্ছেন। প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছে। এরমধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়।
অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন। সংস্থাটির তথ্য মতে, হতাহতদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী। এক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি।
সংস্থাটি দাবি করছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এ নেতা বলেন, দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে।
বুয়েটের এআরআই-এর হিসাব বলছে, গেলো তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় এমন ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা যদি নির্ভরশীল মানুষের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে সেটিকে জনসংখ্যা বোনাস বা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা হয়। বাংলাদেশ এ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের জন্য গর্ব করে। সড়ক দুর্ঘটনা এ গর্বের জায়গাতেই বেশি আঘাত হানছে।
পুলিশের তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ করে এআরআই বলছে, গত এক দশকে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের সাড়ে ১৮ শতাংশ শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব মতে নিহতদের ৫১ শতাংশ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ