আন্তর্জাতিক
ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাজ্যজুড়ে লাখো মানুষের বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন চার হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
ইসরাইলি এ হামলার বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনিদের পক্ষে রাজধানী লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। লন্ডনের পাশাপাশি বিক্ষোভ হয়েছে বার্মিংহাম, কার্ডিফ, বেলফাস্ট ও সালফোর্ডেও। কেবল লন্ডনের বিক্ষোভেই অংশ নিয়েছেন এক লাখ মানুষ।
রোববার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন বলছে, টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো লন্ডনে ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন লাখও মানুষ। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুমান, শনিবারে এ বিক্ষোভ ও পদযাত্রায় এক লাখ মানুষ অংশ নেন। পরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটের কাছে সমাবেশের মাধ্যমে বিক্ষোভটি শেষ হয়।
বিবিসি বলছে, শনিবার লন্ডনের পাশাপাশি বার্মিংহাম, বেলফাস্ট, কার্ডিফ ও সালফোর্ডেও তুলনামূলক ছোট বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইলি বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত চার হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, লন্ডনে শনিবার আয়োজিত বিক্ষোভে এক হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা মোতায়েন ছিলেন। পরে আতশবাজি ব্যবহার, জন শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানো এবং জরুরি পরিষেবা কর্মীকে লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িত অপরাধের জন্য লন্ডনে বিক্ষোভ থেকে মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
অন্যদিকে কার্ডিফে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনি পতাকা ও সমর্থনমূলক নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে ওয়েলস পার্লামেন্টের দিকে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।
বিবিসি বলছে, বেশ কয়েকটি গ্রুপের আয়োজিত এই বিক্ষোভ থেকে ব্রিটিশ ও ওয়েলস সরকারকে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য প্রচেষ্টা চালানো এবং পূর্ণ মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি সলিডারিটি ক্যাম্পেইন কার্ডিফের ম্যাগি মরগান বলেছেন, ‘আমরা গাজার জনগণের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের অংশ হিসাবে রাস্তায় নামছি, তাদের প্রতি আমরা আমাদের সমর্থন জানাতে চাই।’
গেলো ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর পর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালানো শুরু করে ইসরাইলি বিমানবাহিনী। তাদের এ নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত চার হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই এক হাজার ৫০০ জনের বেশি।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি সতর্ক করে দিয়েছেন, চলমান এই সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে গ্রাস করার হুমকি দিচ্ছে। ক্লিভারলি অবশ্য ইসরাইল এবং অধিকৃত অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান সংকটকে ঘিরে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ইসরাইল, তুরস্ক এবং কাতার সফর করেছেন।
বিবিসি বলছে, শনিবার লন্ডনের বিক্ষোভ মিছিলে বিক্ষোভকারীদের ফিলিস্তিনপন্থি নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইসরাইলসহ জর্ডান নদী এবং ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী সব ভূমি ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণের দেওয়ার দাবি জানান।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান বলেছেন, ‘নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন দেশ হবে’ স্লোগানটির মাধ্যমে কার্যত ইসরাইলকে ‘ধ্বংস করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়া বেলফাস্টে বিবিসি নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সদর দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভকারীরা বেশ বড় বিক্ষোভ করেছেন। পিপল বিফোর প্রফিট অ্যাসেম্বলির সদস্য গেরি ক্যারল বলেছেন, বিবিসি যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান এই সংঘাতের খবর প্রকাশ করেছে, সেটিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করাই তাদের লক্ষ্য।
অন্যদিকে স্যালফোর্ডে আয়োজিত বিক্ষোভটিও মিডিয়া সিটি কমপ্লেক্সের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। মূলত সেখানেই বিবিসির অফিস রয়েছে এবং বিক্ষোভকারীরা এ সময় গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিবিসির বিভিন্ন প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//