জাতীয়
আওয়ামী লীগ-বিএনপি যেভাবে ক্ষমতায় আসতে পারে
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক ধরে নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি মনে করে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল বিন্যাসে আওয়ামী লীগের পক্ষে সরকার গঠনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি—তা জোটবদ্ধ তো বটেই এককভাবেও হতে পারে। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষে সরকার গঠন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির অডিটরিয়ামে একটি প্রেস কনফারেন্সে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। ‘ভোটারের মন ও আসন্ন ২০১৪ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল’ শীর্ষক সেমিনারে সূচনা বক্তব্য রাখেন অর্থনীতির সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।
মূল প্রবদ্ধ উপস্থাপনকালে সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত বলেন, ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেতে পারে ১৪৮- ১৬৬টি আসন, বিএনপি ১১৯-১৩৭টি আসন এবং অন্যান্য দলের ১৫টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টি ১১টি, জামায়াতে ইসলামী ২টি, এলডিপি ১টি, বিজেপি ১টি আসন পাবে। নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল বিন্যাসে আওয়ামী লীগের পক্ষে সরকার গঠনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তা জোটবদ্ধও হতে পারে আবার এককভাবেও হতে পারে। আওয়ামী লীগকে জোটবদ্ধ সরকার গঠন করতে হলে জাতীয় পার্টির সাথে জোট করতে হবে।
অন্যদিকে বিএনপির পক্ষে সরকার গঠন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিএনপির পক্ষে জোটবদ্ধ সরকার গঠনের একটি পাটিগাণিতিক সম্ভাবনা আছে। যে সম্ভাবনা অনেক বেশি শর্তসাপেক্ষ বিধায় দুর্বল। শর্তগুলো হলো (১) বিএনপিকে পেতে হবে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সংখ্যাক আসন (১৩৭টি আসন) (২) জোট করতে হবে জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, বিজেপি এবং এলডিপির সাথে, (৩) আওয়ামী লীগকে তার সম্ভাব্য সর্বনিম্নসংখ্যাক আসনের (১৪৮ আসন) বেশি পাওয়া চলবে না।
তিনি বলেন, আসন্ন ২০২৪ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার প্রায় ১২ কোটি। এসব ভোটারের ৭০ শতাংশই দলীয় অনুগত ভোটার—এসব ভোটার তাদের অনুগত দলে ভোট দেবেন। এসব ভোট হলো দলের জন্য ভিত্তি ভোট। মোট ভোটে দলীয় অনুগত ভোটের অনুপাত: ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগ, ৩০ শতাংশ বিএনপি, ১০ শতাংশ অন্যান্য দল। দলীয় অনুগত ভিত্তি ভোটের বাইরে বাকি ৩০ শতাংশ ‘দলীয় অনুগত নন।’ এসবই হলো ‘দোদুল্যমান ভোট,’ এরা কাকে ভোট দেবেন, তা পূর্বনির্ধারিত নয়। দেশের ৩০০টি সংসদ আসনের মধ্যে ১৫৫টি আসনের ভাগ্য মোটামুটি নির্ধারিত বলা চলে। এসবই হলো ‘ভিত্তি আসন’ বা ‘সম্ভাব্য বিজয়-নিশ্চিত আসন’। এ ১৫৫টি আসনের মধ্যে ৭০টি আসন পাবে আওয়ামী লীগ, ৭০টি আসন পাবে বিএনপি, আর বাকি ১৫টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টি ১১টি, জামায়াতে ইসলামী ২টি, এলডিপি ১টি, বিজেপি ১টি।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—উভয়েরই ৭০টি করে ‘ভিত্তি আসন’ আছে। দুটি দলের মধ্যে যেকোনো দলের জন্য সরকার গঠনের জন্য আরও ৮১টি আসন প্রয়োজন। তা পেতে হলে দুই বড় দলকে নির্ভর করতে হবে ‘দোদুল্যমান ভোটারদের’ ভোটের ওপর। এবারে দোদুল্যমান ভোটারদের ভোট প্রদান সিদ্ধান্তে ৫টি অবজেক্টিভ ফ্যাক্টর ও সংশ্লিষ্ট কাউন্টার-ফ্যাক্টর কাজ করবে বলে মনে হয়। তা হলো: দ্রব্যমূল্য, মানব নিরাপত্তা, পদ্মা সেতু, ২০১৮ সালের নির্বাচন এবং স্যাংশন।
বারকাত বলেন, ‘পদ্মা সেতু’ ও ‘স্যাংশন’ ফ্যাক্টর দুটি আওয়ামী লীগের ভোট কৌশলে কাজে লাগাবে, বিএনপি কাজে লাগাবে অন্য ৩টি ফ্যাক্টর— দ্রব্যমূল্য, ২০১৮ সালের নির্বাচন ও মানব নিরাপত্তা। একই সাথে প্রভাবক হিসেবে কয়েকটি সাবজেক্টিভ ফ্যাক্টরও কাজ করবে যেমন— আত্মীয়তা, বন্ধুবান্ধব, ঘনিষ্টজন, মুরুব্বিদের উপদেশ আদেশ-নির্দেশ, পিতৃতান্ত্রিকতা (নারীর ক্ষেত্রে)।
দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের ৬৮টি আসনের মধ্যে ২৩টি ‘বিজয়-অনিশ্চিত আসন’। এসব আসনে ‘পদ্মা সেতু ফ্যাক্টর’ কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগ দোদুল্যমান ভোটারদের ৬০ শতাংশ রায় পেতে পারে। ফলে এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ২৫টি ভিত্তি আসনের সাথে আরো ২৩টি আসন যোগ হয়ে তাদের মোট আসনসংখ্যা দাঁড়াতে পারে কমপক্ষে ৪৮টি।
দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের বাইরে— ঢাকাসহ পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর অঞ্চলে যে ২৩২টি আসন আছে, তার মধ্যে ১২২টি আসনে ‘বিজয়- অনিশ্চিত আসন’—জয়-পরাজয়ে দোদুল্যমান ভোটারদের ভোট নিয়ামক ভূমিকায় থাকবে। এসব আসনে দোদুল্যমান ভোটারদের ৪৫-৬০ শতাংশ ভোট পেতে পারে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি পেতে পারে ৪০-৫৫ শতাংশ। এই ১২২টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ জয়ী হতে পারে ৫৫-৭৩টি আসনে আর বিএনপি জয়ী হতে পারে ৪৯-৬৭টি আসনে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ