বলিউড
নজরুলের সুর বদল, বিতর্কের ঝড়ে এ আর রহমান
একশো বছরের বেশি সময় আগে বিখ্যাত ‘ভাঙার গান’‘কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙে ফেল কর রে লোপাট’ গানটি রচনা করেন কবি নজরুল ইসলাম। কবির নিজের সুর করা এই গানটিকে বাংলা সঙ্গীত ও কবিতার ইতিহাসে সর্বকালের সেরা বিপ্লবী গান হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।বলিউডে সাম্প্রতিক অতীতে নজরুলগীতির ব্যবহার হয়নি বলা চলে।সম্প্রতি এই গানটি বলিউডের একটি চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।তবে গানটির সুর বদল করেছেন চলচ্চিত্রটির সংগীত পরিচালক এ আর রহমান।আর এতেই বিতর্ক আর সমালোচনার ঝড়ে পড়েছেন ভারতের এই ‘শেষ্ঠ’ সংগীত পরিচালক।
আনন্দবাজারসহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, কারার ওই লৌহ কপাট গানটি’র খোলনলচে বদলে দিয়েছেন অস্কারজয়ী ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক রহমান। তা নিয়েই বিরক্ত বাঙালি। বিরক্ত সঙ্গীতপ্রেমী এবং শিল্পীমহলও।
সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে ঝড় উঠেছে প্রতিবাদের। অধিকাংশেরই বক্তব্য, নজরুলগীতির সুর বদলে যে নবরূপ দিয়েছেন রহমান, তা কর্ণকুহরে বিষের মতো ঢুকছে। যদিও উদারবাদীদের একাংশ তা মনে করছেন না।
(বাঁ দিক থেকে) পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, এ আর রহমান, হৈমন্তী শুক্ল। ছবি: সংগৃহীত।
নজরুলগীতি বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে সুরকার এ আর রহমানের বিরুদ্ধে। সমাজমাধ্যমে বাঙালিরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত স্বয়ং রহমান এই বিষয়ে মুখ খোলেননি। বাংলার সঙ্গীত জগতেও সুরকারের এই ‘কীর্তি’ আঘাত হেনেছে। রহমানের এই সৃষ্টি দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী এবং হৈমন্তী শুক্লা।
উদারবাদীদের একাংশের বক্তব্য, রবীন্দ্র সঙ্গীতের সুর-কথা বদল করা নিয়ে একটা সময়ে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এখন তা নেই। কিন্তু নজরুলগীতিতে তো কখনওই তেমন বিধি নিষেধ ছিল না। তা হলে আপত্তি কিসের! এই দলে রয়েছেন খোদ বাংলার এক সঙ্গীতশিল্পীও।এই শিল্পী নিজেই বছর খানেক আগে নজরুলের এই ভাঙার গান গেয়ে একটি অ্যালবাম বানিয়েছিলেন। নাম শোভন গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর সেই অ্যালবামে তাঁর সঙ্গে গান গেয়েছিলেন আরও কয়েকজন শিল্পী। এঁদেরই একজনের নাম আবার দেখা যাচ্ছে রহমানের ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানেও। তিনি কী বলছেন?
এক সংবাদ সংস্থাকে শোভন জানিয়েছেন, তিনি এতে কিছু দোষের দেখছেন না। কারণ, নজরুল গীতির সুর নিয়ে কোনও বাঁধাধরা নিয়মকানুন নেই। নজরুলের লেখা কবিতাকে কোনও সুরকার বা শিল্পী তাঁর নিজের মতো নজরে দেখতেই পারেন।সেটা শিল্পীর স্বাধীনতা হিসাবে দেখা যেতে পারে।শোভনের মতোই উদারপন্থীদের একাংশের আরও একটি যুক্তি হল, এ আর রহমানের সুরের দৌলতে নজরুলের লেখা এই গান বিশ্বের দরবারে পৌঁছচ্ছে। সেটাও তো দেখতে হবে। যাঁরা কখনও এ গান শোনেননি, তাঁরা এই গান শুনছেন। এটাও তো প্রাপ্তি হিসাবে ধরতে হবে।
শিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘শিল্পী হিসাবে এবং বাঙালি হিসাবে আমি এই গান একেবারেই মেনে নিতে পারছি না। রহমান গানটিকে যথেচ্ছ বদলে দিয়েছেন। তার উপর আবার দাবি করেছেন এই গানটির সুর দিয়েছেন তিনি নিজে। যেখানে ছোট থেকে জানি, এই গান লিখেছিলেন এবং সুর দিয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম স্বয়ং। আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হল, এই গানটি যাঁরা গেয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই বাঙালি। অথচ তাঁরা একবারও এই গান গাওয়ার জন্য প্রতিবাদ করলেন না।’
(বাঁ দিক থেকে) দেবজ্যোতি মিশ্র, এআর রহমান, প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
শিল্পী লোপামুদ্রাও লিখেছেন প্রতিবাদের কথা। লিখেছেন, বাঙালি কোনও রকম অন্যায় সহ্য করে না। তবে একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই যত প্রতিবাদ তার সবটাই সমাজমাধ্যম ভিত্তিক।
অপছন্দের কথা জানিয়েছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীও। তিনি বলেছেন,‘রহমানকে আমি ব্যক্তিগত পর্যায়ে চিনি। তাই বলছি, ওঁর কাছ থেকে এটা আশা করা যায়নি।’ সমালোচনা করেছেন শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা, সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র, প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু কী এমন আছে ওই গানে? কেন রহমানের গান নিয়ে বিতর্ক? তিনি কি সত্যিই কারার ওই লৌহ কপাট গানটিকে বদলে দিয়েছেন?
বিতর্কের শুরু যেভাবে: নানা মহলে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে-কী এমন আছে ওই গানে? কেন রহমানের গান নিয়ে বিতর্ক? তিনি কি সত্যিই কারার ওই লৌহ কপাট গানটিকে বদলে দিয়েছেন? তার আগে জেনে নেওয়া যাক বিতর্কের শুরু কোথা থেকে। অভিনেত্রী বিদ্যা বালনের স্বামী সিদ্ধার্থ রয় কাপুর এবং ইউটিভি মোশন পিকচার্সের প্রধান রনি স্ক্রুওয়ালার প্রযোজনায় ‘পিপ্পা’ সিনেমা নিয়ে এর আগে যত না আলোচনা হয়েছে, ওই গান মুক্তি পাওয়ার পর তা শতগুণ বেড়ে যায়। ১০০ বছরের বেশি আগে এই গান রচনা করেছিলেন বাঙালি কবি নজরুল। ১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে এই গান রচনা করেছিলেন তিনি। ওই বছরই দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘বাংলার কথা’ পত্রিকা। গান্ধীজির সত্যাগ্রহ আন্দোলনের জন্য বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী তখন ইংরেজদের হাতে বন্দি। ওই বছরই জেলে যেতে হয় চিত্তরঞ্জনকেও। নজরুল ‘ভাঙার গান’ লিখেছিলেন চিত্তরঞ্জনের স্ত্রী বাসন্তী দেবীর অনুরোধে। শোনা যায়, ১৯২২ সালের ২০ জুন কবিতা হিসাবে প্রকাশিত হয় এটি। পরে নাকি হুগলির জেলে দেশবন্ধু ও অন্য বন্দিরা একসঙ্গে এই গান গাইতেনও। গানের কথায় বন্দিশালায় আগুন জ্বালানো, তালা ভাঙার মতো শব্দ এবং তার প্রভাব জনমানসে পড়তে দেখে তড়িঘড়ি ব্রিটিশ সরকার নিষিদ্ধ করে এই গান।
পরবর্তী কালে ১৯৪৯ সালে ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ সিনেমায় ব্যবহার করা হয় ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল ‘ভাঙার গান’। এমন যার ইতিহাস সেই গানের সুর বদলে দিয়েছেন রহমান। যা নিয়ে এখন বিতর্ক।
স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। ভারত এবং বাংলাদেশ দু‘দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে এই গান। বাংলার এক সঙ্গীত পরিচালক জানিয়েছেন, এ গান শুনে গায়ে কাঁটা দিত। আর এখন রহমানের কম্পোজিশন শুনে চিৎকার ছাড়া কিছু মনে হচ্ছে না।
সমাজমাধ্যমে কেউ কেউ আবার বলেছেন, ‘এই গানকেও যে প্রেমের গান হিসাবে ব্যবহার করা যায়, তা রহমানই দেখালেন। তবে এ গান শুনে কান চাপা দেব না কি মাথা ঠুকব, বুঝে উঠতে পারছি না।’ সূত্র: আনন্দবাজার
বলিউড
সামান্থা অতীত, শোভিতার সঙ্গে বাগদান সারলেন নাগা চৈতন্য
সামান্থার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নতুন জীবনে পা রাখলেন ভারতের দক্ষিণী সিনেমার অভিনেতা নাগা চৈতন্য। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) প্রেমিকা শোবিতা ঢুলিপালার সঙ্গে বাগদান সারলেন এই অভিনেতা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে হায়দরাবাদের বাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাগদান সম্পন্ন করেন নাগা চৈতন্য ও শোবিতা ঢুলিপালার। বাগদান অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যগত সাজে সাজেন তারা। এসময় দুই পরিবারের সদস্য ছাড়াও এ জুটির ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিজাইনার মনীষ মালহোত্রা তার ইনস্টাগ্রামে শোবিতা ও নাগার বাগদানের ছবি পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যায়, শোবিতার পরনে পিঙ্ক কালারের সিল্ক শাড়ি। এর সঙ্গে মিলিয়ে সোনার গহনাও পরেন এই অভিনেত্রী।
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় তারকা জুটির মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু ও অভিনেতা নাগা চৈতন্য। দীর্ঘদিন প্রেম করার পর বিয়ে করেছিলেন তারা। কিন্তু ২০২১ সালে এ সংসারের ইতি টানেন এই যুগল।
গেল বছর গুঞ্জন চাউর হয়— বিয়েবিচ্ছেদের পর অভিনেত্রী শোবিতা ঢুলিপালার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন নাগা চৈতন্য। যদিও এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি এই জুটি। তারপরও অনেকবার একসঙ্গে দেখা গেছে তাদের। সর্বশেষ বাগদানের মাধ্যমে গুঞ্জনকে বাস্তবে রূপ দিলেন এই জুটি।
এসআই/
ঢালিউড
সমালোচনা ভয় পেতেন শেখ হাসিনা: ভারতীয় নির্মাতা হংসল মেহতা
কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে ক্ষমতা ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচনায়। এই প্রসঙ্গে এবার পুরোনো স্মৃতি সামনে আনলেন বলিউড নির্মাতা হংসল মেহতা।
২০২২ সালে হংসল মেহেতার সিনেমা ‘ফারাজ’ মুক্তি পেয়েছিল। তবে ছবির শুটিং-এ লাগাতার হুমকির শিকার হয়েছিলেন পরিচালক। কারণ, ছবিটি ঢাকার হোলি আর্টিজানে সংগঠিত নৃশংস হামলা ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে ছবিটি বাংলাদেশের ঘটনায় নির্মিত হলেও বাংলাদেশেই নিষিদ্ধ হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ সেই স্মৃতি তুলে ধরে হংসল মেহতা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনাগুলো দেখে আমার ‘ফারাজ’-এর মুক্তির কথা মনে পড়ছে। এটি বাংলাদেশ ছাড়া নেটফ্লিক্সে বিশ্বব্যাপী স্ট্রিম হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে ছবিটি নিষিদ্ধ হয়েছিল।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে একাধিক কল পেয়েছি। কথিত সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট, সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছ থেকে অনুভূত হুমকির কারণে আমাকে শেষ পর্যন্ত পুলিশ সুরক্ষা দেয়া হয়েছিল। ভারতীয় আদালতে দীর্ঘ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অনেক অভদ্র অভিযোগ করা হয়েছিল। আমি এখনও বাংলাদেশের আদালতের মিথ্যা মামলা লড়ছি। এসব একটি চলচ্চিত্রের মুক্তি ঠেকানোর জন্য। যা দৃশ্যত শেখ হাসিনার সরকারকে চিত্রিত করেছিল। সরকার চায়নি যে বাংলাদেশের বাইরে কেউ জানুক যে তারা অযোগ্য এবং স্বৈরাচারী নেতা দ্বারা চালিত, যিনি নিজের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচককে ভয় পেতেন। তারা আমাদের কণ্ঠ চেপে ধরে নিজেদের রক্তাক্ত হাত ঢাকতে চেয়েছেন।’
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ঘটে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা। সেই ঘটনা নিয়ে তৈরি ‘ফারাজ’ প্রযোজনা করেছেন অনুভব সিনহা ও ভূষণ কুমার। ছবিটি দিয়ে কারিনা কাপুরের চাচাতো ভাই জাহান কাপুর ও পরেশ রাওয়ালের ছেলে আদিত্য রাওয়ালের অভিষেক হয়েছে।
এসআই/
বলিউড
‘বিগবস’ ওটিটি সিজন-৩ বিজয়ী সানা মকবুল
‘বিগবস’ ওটিটি সিজন-৩ বিজয়ীর মুকুট পরলেন সানা মকবুল। রিয়ালিটি শো জিতে তিনি ঘরে তুলেছেন ট্রফি আর ২৫ লাখ রুপি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৪ লাখ টাকার বেশি।
চলতি বিগবস সিজন ৩-এর শুরু থেকেই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন সানা। প্রতিবারই দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছেন বিপুল ভোট। তবে বিতর্কেও জড়িয়েছেন। আবার সেখান থেকে নিজেকে মুক্তও করেছেন।
বিগবসের ঘরে সবার সঙ্গেই সুসম্পর্ক রেখে চলতেন সানা। তার খেলা দেখে ভীষণ আনন্দ পেতেন দর্শকরা। তাই প্রত্যেকবারই বিপুলসংখ্যক ভোট পেয়েছেন তিনি। শোতে তাকে যখনই কোনো কাজ দেওয়া হয়েছে, তা সঠিকভাবে পালন করতেন সানা।
বিগবসের আসরে সানার বন্ধু ছিল নাজী। বিজয়ীর মুকুট পরে জয়ের কৃতিত্ব নাজীকেই দিতে চাইলেন তিনি। মজার ব্যাপার, বিগবসে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন নাজী।
‘বিগ বস’-এর চলতি আসরের ফাইনালিস্ট হিসেবে ছিলেন সানা মকবুল ও নাজী, রণবীর শোরে, সাই কেতন রাও, কৃতি মালিক।
এসআই/