এশিয়া
‘গাজায় প্রতিদিন ২০০ জনকে আামি কাফন পরাই’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহবান সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও তিন হাজারের বেশি।
প্রায় প্রতিদিনই হামলায় ও হাসপাতালে মারা যাচ্ছেন ফিলিস্তিনের নাগরিক। এদের মধ্যে প্রতিদিন ২০০ লাশ কাফনে মোড়ানোর দায়িত্ব পালন করছেন আবু সাহের আল-মাঘারি (৫৩)। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরা্র প্রতিবেদনে এ মর্মস্পর্শী সত্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়,দেইর আল-বালাহ শহরের আল-আকসা শহিদ হাসপাতালে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লাশের কাফন পরিয়ে আসছেন ৫৩ বছর বয়সী আবু সাহের আল-মাঘারি।শান্ত স্বভাবের মানুষটি দায়িত্ব নিয়েছেন সব থেকে ভয়ংকর কাজের। তবে বিগত বছরগুলোর চাইতে চলতি বছরের চেহারা পুরোপুরি ভিন্ন,একেবারেই আলাদা। প্রতিদিনই বাড়ছে লাশের সংখ্যা। ছিন্নভিন্ন দেহ থেকে শুরু করে পচা গন্ধযুক্ত লাশে ভরে থাকে পুরো হাসপাতাল। সব লাশের কাফনের দায়িত্ব একা হাতে পালন করে যাচ্ছেন।
এত বেশি লাশ আগে দেখেছেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে আলজাজিরাকে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,‘আমার জীবনে এত কঠিন সময় কখনো দেখিনি। আমি সারা বছর দৈনিক ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০টি প্রাকৃতিক মৃত্যু দেখতাম। ওইসব লাশ কাফন করতাম। কিন্তু এখন বেশিরভাগ দিনই লাশের সংখ্যা ২০০ পর্যন্ত হয়।
‘লাশের কাফন দিয়ে দিন শুরু হয়’ উল্লেখ করে মাঘারি বলেন,‘সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত কাজ করি। অধিকাংশ লাশ খুব খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে পৌঁছায়। কিছু কিছু লাশে শুধু হাড় দেখা যায়। বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংস্তূপের নিচে কয়েকদিন পড়ে থাকায় কোনো কোনো লাশ থেকে অসহনীয় গন্ধ বের হয়। অন্যান্য লাশ ছেঁড়া টুকরো হয়ে আসে। ছেঁড়া অঙ্গ ও প্রচণ্ড ক্ষতে ভরে থাকে শরীর।’
শিশুদের লাশের ব্যাপারে প্রশ্ন করতেই কান্না আটকাতে পারেননি এই শান্ত স্বভাবের মানুষটি। তিনি বলেন, ‘শিশুদের কাফন দেওয়াটা আমাকে সবেচাইতে বেশি দুঃখ দেয়। বাচ্চাদের ছেঁড়া অঙ্গগুলো দেখলে আমার হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ওইদিন থেকেই অবরুদ্ধ গাজায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলায় প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে। ১৩ অক্টোবরের পর থেকে আল-আকসা শহিদ হাসপাতালে লাশের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। হাসপাতালের মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-হাজের মতে, গাজার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ২ হাজার ৪৭৬ ফিলিস্তিনির লাশ আল-আকসা শহিদ হাসপাতালে পৌঁছেছে।
প্রসঙ্গত, আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়,পবিত্র আল আকসা মসজিদের অপবিত্রতা এবং কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে গত ৭ অক্টোবর স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে তারা নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গাজায় অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। শুদু তাই নয়, গত বছর থেকে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের শহরগুলোতে সামরিক অভিযান দেশটির সেনাবাহিনী। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের ভূখন্ডে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে রকেট হামলা চালায় হামাস। আর এর জবাবে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/