ময়মনসিংহ
বিয়ের ১১ দিনেই তালাক, দুধে গোসল করে বিয়ে না করার শপথ
তিন বছর প্রেম করে বিয়ের ১১ দিনের মাথায় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় ঈশান মাহমুদ শ্রাবণ নামে এক যুবকের। তাই এক মণ দুধ দিয়ে গোসল করে জীবনে আর কখনোই প্রেম-বিয়ে না করার শপথ নেন ওই যুবক। এ সময় বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে বহ্মপুত্র নদে গুনে গুনে ৭টি ডুবও দেন তিনি।
গেলো শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পড়াগলী এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনার ভিডিও সোমবার (১৩ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়ে।
ঈশান মাহমুদ শ্রাবণের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। তার নানিবাড়ি মেলান্দহে পড়াগলী এলাকায়। ছোট বেলা থেকে তিনি নানির কাছেই বড় হয়েছেন।
শ্রাবণের নানি রওশন আরা বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে জামালপুর সদর উপজেলার নান্দিনা শেখ আনোয়ার হোসেন কলেজে ভর্তি হয় ঈশান। কলেজে ভর্তির পর শ্রাবণ তার বাবা-মায়ের কাছে জামালপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় থাকতো। সেখানে বাড়ির পাশে এক তরুণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্ক চলে টানা তিন বছর। এক পর্যায়ে গত ২৯ অক্টোবর জামালপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মেয়ের পরিবার ঈশানের বাড়ি আসে।
নানি আরও জানান, মেয়ের বাবা শ্রাবণের পরিবার আর্থিকভাবে গরিব হওয়ায় তাদের বিয়ের বিষয়টি মেনে নেয়নি। মেয়ের বাবা বিয়ের ১১ দিনেই মাথায় মেয়েকে দিয়ে ঈশান মাহমুদ শ্রাবণকে তালাক দেওয়ান। গত ৮ নভেম্বর স্ত্রীর দেয়া তালাকের কাগজ হাতে পায় শ্রাবণ। এরপর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। শ্রাবণ আবারও নানির কাছে পড়াগলী এলাকায় চলে আসে। এখানে তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে একটি স্কুলমাঠে এক মণ দুধ দিয়ে গোসল করে এবং পাশেই ব্রহ্মপুত্র নদে সাতটি ডুব দিয়ে শপথ গ্রহণ করে। শ্রাবণ জীবনে আর কখনো প্রেম ও বিয়ে করবে না। এমন শপথ গ্রহণ করেই ছেলেটি জামালপুর ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় চলে যায়।
এ বিষয়ে ঈশান মাহমুদ শ্রাবণ বলেন, আমরা দুজনেই একই কলেজে পড়তাম। তারপর থেকেই পরিচয়, ভালোলাগা প্রেম, টানা ৩ বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমাদের। কিছুদিন আগে আমরা কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করি। বিয়ের কথা জানাজানি হলে মেয়ের বাবা আমাদের পরিবার দরিদ্র হওয়ায় বিয়ে মেনে নেয়নি। পরে জোর করে মেয়েকে দিয়ে আমাকে তালাক দেওয়ায়। আমি ৮ নভেম্বর কাগজ হাতে পেয়েছি। কাগজ পেয়ে কি করবো এটাই ভেবে পাচ্ছিলাম না। শুক্রবারে দুধ দিয়ে গোসল করে শপথ করেছি বাকি জীবনে আর প্রেম বা বিয়ে কখনই করবো না।
পড়াগলী এলাকার হেলাল উদ্দিন বলেন, শ্রাবণ ছেলেটি সম্পর্কে আমার নাতি হয়। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় গত ৯ নভেম্বর আমাকে বলে দুধ লাগবে ২০ কেজি। আমি তাকে বলি, দুধ দিয়ে কি করবি; ও বলে পরে বলল একটা কাজ আছে। পরে আরেকজনের কাছ থেকে ২০ কেজি দুধ নিয়ে স্কুলমাঠে গোসল করে শপথ গ্রহণ করেছে ছেলেটি জীবনের বিয়ে ও প্রেম করবে না। ঘটনাটি জানতে পারলাম, প্রেম করে বিয়ে করছিল ঈশান। বিয়ের ১১ দিন পরেই বউ তাকে তালাক দিয়েছে; এর জন্য এই কাণ্ড করেছে।
এমদাদুল হক নামে স্থানীয় একজন বলেন, ছেলেটি প্রেম করে বিয়ে করেছিল। ছেলের পরিবার গরিব হওয়া মেয়ের পরিবারের বিয়ের বিষয়টি মেনে নেয়নি। মেয়েকে জোর করে ধরে তার ভাই ও বাবা তালাক দিয়েছেন। এতে ছেলেটি আঘাত পেয়ে এক মণ দুধ দিয়ে গোসল করেছেন। এবং একই সময় ব্রহ্মপুত্র নদে গোসল করে নামাজ পড়ে শপথ করেছেন। জীবনে প্রেম ও বিয়ে করবেন না।
ময়মনসিংহ
বন্ধুদের নিয়ে নববধূকে ধর্ষণ,স্বামীসহ গ্রেপ্তার ২
টাঙ্গাইলে স্বামীর সহযোগিতায় বাসর রাতে বন্ধুদের নিয়ে নববধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী আব্দুল বাছেদ (২৫) ও বন্ধু জহুরুল ইসলামকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অপর বন্ধুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গেলো বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) অভিযুক্ত দু আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বিয়ে করে ওই নববধূকে নিজের বাড়িতে তোলেন আব্দুল বাছেদ। বাসর রাতে প্রবেশের পর বাছেদের সহযোগিতায় তার দুই বন্ধু কৌশলে ভুক্তভোগী নববধূকে ধর্ষণ করেন। পরে ভুক্তভোগী ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা পাড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গেলো ২৭ জুলাই ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় গ্রেপাত দুই আসামিসহ বর্তময়ানে পলাতক রবিন মিয়াকে (২৬) আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী ও তার বন্ধুকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় নববধূর শারীরিক পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আই/এ
জনদুর্ভোগ
বন্যার পানিতে গোসলে নেমে ৪ জনের মৃত্যু
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বালুচর এলাকায় বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে লোকজন গিয়ে দেখেন মরদেহ পানিতে ভেসে উঠেছে। এ সময় বেঁচে ফেরেন মারিয়া (১২) নামের এক শিশু।
রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৫টায় এ ঘটনা ঘটে। মেলান্দহ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- দক্ষিণ বালুচর এলাকার দিশা আক্তার (১৭), সাদিয়া (১০), খাদিজা (১০) ও রোকশানা (২৫)।
স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে দক্ষিণ বালুচর এলাকার পাশাপাশি বাড়ির তিন শিশু, এক কিশোরী ও এক গৃহবধূ ফসলি জমিতে বন্যার পানিতে গোসল করতে যান। গোসল করার একপর্যায়ে হঠাৎ করেই চারজন পানিতে তলিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় দূরে থাকা এক কিশোরী তাদের তলিয়ে যাওয়া দেখে দৌড়ে বাড়িতে এসে খবর দেন।
স্থানীয়দের বরাতে (ওসি) রাজু বলেন, এলাকার লোকজন বলছেন, অল্প পানিতেই সবাই গোসল করতে গিয়েছিল। এই পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনাতে সবাই হতবাক। এর মধ্যে আগামী শুক্রবার দিশার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ আলী বলেন, দুপুরে এমন খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। এমন ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এএম/
ময়মনসিংহ
বন্যায় টাঙ্গাইলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি কমলেও এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও, কিছু এলাকায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যমুনা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় অনেক নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।এর ফলে প্রায় ছয়টি উপজেলার ১১ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি কৃষিজমি তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই)টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানায় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, বন্যার পানিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে রয়েছে। তবে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় নতুন এলাকার ফসলি জমি বন্যাকবলিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন জানায়, জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, বাসাইল উপজেলার ৪৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ছাড়া যমুনাসহ তিনটি নদীর পানি কমতে শুরু করলেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষদের দুর্ভোগ কমেনি। বর্তমানে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গোখাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ বছর বন্যায় যেসকল মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম।
জেড/এস