বাংলাদেশ
শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন: হর্ষবর্ধন শ্রিংলা
বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সূচকে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের মূলে রয়েছে শেখ হাসিনার দৃঢ় শাসন,রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নীতিগত ও সাহসী সিদ্ধান্ত।বললেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও জি-২০ এর প্রধান সমন্বয়ক হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন মিশনের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় গত ১৫ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রশংসা করে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস নাউ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ লেখক স্যামুয়েল রিচার্ড প্রণীত ‘বাংলাদেশ: ফ্রম বাস্কেট কেস টু এশিয়ান টাইগার’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন শ্রিংলা। বইটিতে বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরা হয়েছে।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও জি-২০ এর প্রধান সমন্বয়ক হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি,মাথা পিছু আয় ছিল ১২৮ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে বছরের পর বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সামরিক শাসনের পর ২০০৬ সালে এটি বেড়ে হয় ৫০৩ মার্কিন ডলার। আর বর্তমানে মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৭ মার্কিন ডলারে। অন্যদিকে,১৯৭১ সালে স্থিতমূল্যে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল মাত্র ৮৭৫ কোটি মার্কিন ডলার। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১৬ বিলিয়ন ডলার বা ৪১ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক এই হাইকমিশনার বলেন,১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যখন তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়, তখন পাকিস্তান ছিল প্রবৃদ্ধির দেশ এবং বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ২০০৬ সাল থেকে রাজনৈতিক স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি এবং ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শক্তিশালী সরকার যাত্রা শুরুর পর তার দৃঢ় শাসন,রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নীতিগত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সহায়তা করেছে।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অনেক উন্নয়নশীল দেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশকেও ছাড়িয়ে গেছে। দৃঢ় শাসন, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নীতিগত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সহায়তা করেছে। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে, ভারত প্রবৃদ্ধির অংশীদার হতে পেরে খুশি।
তিনি বলেন, কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন, কারণ পাকিস্তানই এখন তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে এবং বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির দিক থেকে এশিয়ান টাইগার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
সাবেক এ কূটনীতিক আলোচনাকালে উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য সংযোগ ও জ্বালানি সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে যৌথভাবে বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন।
অন্যদের মধ্যে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. প্রবীর দে এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের প্রফেসর ধীরাজ শর্মা আলোচনায় অংশ নেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (কনস্যুলার) সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং বইটির ওপর আলোকপাত করেন।
গত ১৫ বছরে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, তথ্যপ্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য খাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্যের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং দেশটি এখন বিশ্বের দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির অন্যতম বলে বিবেচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সক্রিয় নেতৃত্বের কারণে এই সব উন্নয়নের মাইলফলক অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ কখনও তলাবিহীন ঝুড়ি ছিল না। এটা ওই সময় বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন সরকারের ‘ভুল ধারণা’ ছিল। স্বাধীনতার পর দারিদ্র্যের হাম কমেছে এবং সাক্ষরতার হার ১০০ শতাংশ নিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ‘স্মর্ট সোসাইটি’তে পরিণত হবে।’ এসময় তি্নি বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার জন্য ভারত সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ