চট্টগ্রাম
ঋণের টাকায় কেনা বাস হারিয়ে দিশাহারা সিরাজুল
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার মাদারবাড়ির মডেল মসজিদ এলাকায় পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে দুটি বাস। সোমবার (২০ নভেম্বর) ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
পুড়ে যাওয়া শ্যামলী পরিবহন নামের বাসগুলোর মালিক ছিলেন উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের জনার কেঁওচিয়ার মাদারবাড়ি এলাকার সিরাজুল ইসলাম।
গণমাধ্যমকে সিরাজুল বলেন, ‘আমি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ৬০ লাখ টাকা দিয়ে দুই থেকে আড়াই বছর আগে এ দুটি বাস কিনছিলাম। আজ (সোমবার) ভোরে সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা আমার বাসগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এখন আমি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। ব্যাংকের লোন কীভাবে শোধ করব, জানি না।’
তিনি আরও বলেন, গাড়ি দুটির আয় দিয়েই তার সংসার চলে, চিকিৎসার খরচ চলে। গতকাল রোববার (১৯ নভেম্বর) রাতে বাস দুটি হালকা মেরামত করার পর চট্টগ্রাম নগরের শাহ আমানত সেতু থেকে যাত্রী নিয়ে কেরানীহাট আসে। পরে রাত ১২টার দিকে মাদারবাড়ির মডেল মসজিদ এলাকায় বাস দুটি রেখে চালকেরা বাড়িতে চলে যান। আজ সোমবার ভোর পৌনে চারটার দিকে এক ব্যক্তি ফোন করে তাকে জানান, তার বাসে আগুন দিয়েছে কেউ। পরে সেখানে গিয়ে দেখেন, তিনটি বাস দাউ দাউ করে জ্বলছে। আর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। এ দেখে তার আর হুঁশ ছিল না।
থানা-পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, পুড়ে যাওয়া আরেকটি বাস হানিফ পরিবহনের। বাসটির মালিক চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার রশিদের পাড়া এলাকার মোহাম্মদ রিদোয়ান। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার মাদারবাড়ি মডেল মসজিদ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রাতেরবেলা যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। গতকাল রাতেও ওই এলাকায় পাশাপাশি শ্যামলী পরিবহনের দুটি ও হানিফ পরিবহনের একটি বাস দাঁড় করিয়ে রেখে চালকেরা বাড়িতে চলে যান।
মহাসড়কের মাদারবাড়ি এলাকার পাহারাদার ছালেহ আহমদ বলেন, ভোর চারটার আগে আগে মহাসড়কের উত্তর দিক থেকে দুটি মোটরসাইকেলে করে পাঁচ যুবক দক্ষিণ দিকে যাচ্ছিলেন। তারা সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা বাসগুলো পেরিয়ে যাওয়ার পরপরই তিনটি বাসে আগুন জ্বলে ওঠে। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা এস এম হুমায়ুন কার্ণায়েন বলেন, আজ ভোর চারটার পরে বাসে আগুন লাগার খবর পান। পরে দ্রুত বের হয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্ত ছাড়া আগুন লাগার কারণ বলা সম্ভব নয়।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান বলেন, সাতকানিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যরা ঘটনস্থল পরিদর্শন করেছেন। এখন বাস তিনটির মালিক, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কারা এবং কীভাবে বাসে আগুন দিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/