উত্তর আমেরিকা
এবার যুক্তরাষ্ট্রে শিখ নেতাকে হত্যাচেষ্টা, দিল্লিকে সতর্ক করলো ওয়াশিংটন
কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী একজনকে হত্যার পর এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এক শিখ নেতাকে হত্যার ব্যর্থ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে ভারতের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে নয়া দিল্লিকে সতর্ক করেছে ওয়াশিংটন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সেদেশের নাগরিক একজন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যার ষড়যন্ত্র তারা ব্যর্থ করে দিয়েছে এবং ওই ষড়যন্ত্রে ভারত সরকারের জড়িত থাকার বিষয়ে সাবধান করে দিয়েছে ওয়াশিংটন।
প্রতিবেদন অনুযায়ি, হত্যা ষড়যন্ত্রের টার্গেটে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার নাগরিক গুরপতওয়ন্ত সিং পান্নু। ‘শিখস্ ফর জাস্টিস’ নামে একটি সংগঠনের আইনজীবী হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। একটি স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র ‘খালিস্তান’ গঠনের প্রচারাভিযান চালায় ওই সংগঠনটি। পান্নুকে ২০২০ সালে ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করে ভারত সরকার।
নয়া দিল্লির বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের যেসব অভিযোগ
ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ি, গত জুনে কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী হরদীপ সিং নিজ্জা খুন হওয়ার পর মার্কিন নাগরিক পান্নুকে হত্যার ষড়যন্ত্রের তথ্য তার মিত্র দেশগুলিকে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, গত জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওয়াশিংটন সফরের পরে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
নরেন্দ্র মোদি প্রশাসনকে সতর্ক করার পাশাপাশি মার্কিন সরকারি আইনজীবীরা কথিত ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নিউইয়র্ক জেলা আদালতে একটি ‘সিলমোহর খামে’ মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে দেশটির বিচার বিভাগে আলোচনা চলছে-ওই মামলাটি জনসমক্ষে আনা হবে, নাকি নিজ্জারের মৃত্যু নিয়ে কানাডা যে তদন্ত চালাচ্ছে, সেটা শেষ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। এবিষয়ে অবশ্য মার্কিন বিচার বিভাগ এবং এফবিআই কোনও মন্তব্য করতে রাজী হয়নি বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফিনান্সিয়াল টাইমস।
শিখ নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র নিয়ে ফিনান্সিয়াল টাইমস প্রতিবেদন প্রকাশ কবার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালণয় বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র কয়েকজন অপরাধী ও সন্ত্রাসীসহ অন্য কয়েকজনের সম্পর্কে কিছু তথ্য দিয়েছে, সেগুলি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, ‘ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনার সময় মার্কিন পক্ষ সংগঠিত অপরাধী, অবৈধ বন্দুক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী এবং অন্যান্যদের সম্পর্কে কিছু তথ্য আমাদের কাছে ভাগ করে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই তথ্য উভয় দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয় এবং তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘ভারত তাদের দিক থেকে এই তথ্যকে গুরুত্ব-সহকারে নিয়েছে কারণ এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেও আঘাত হানছে।‘
কে এই গুরপতওয়ন্ত সিং পান্নু?
ভারতে স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র খালিস্তান গঠনের জন্য প্রচারাভিযান চালাচ্ছে ‘শিখস্ ফর জাস্টিস’ নামে একটি সংগঠন। এই সংগঠনের আইনজীবী হিসেবে গুরপতওয়ন্ত সিং পান্নুর পরিচিতি রয়েছে। পাঞ্জাবের অমৃতসরের কাছে আদি বাসস্থান ছিল তার। তাকে প্রায়ই কানাডায় খালিস্তানপন্থীদের অনুষ্ঠান এবং বিক্ষোভগুলোতে দেখা যায়।
মার্কিন প্রশাসন তাকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল কিনা-এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার করে ফিনান্সিয়াল টাইমসকে পান্নু বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে মার্কিন নাগরিকদের জন্য হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এবং আমি নিশ্চিত যে বাইডেন প্রশাসন এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম।’
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/