বাংলাদেশ
৭৫ বছরে পাকিস্তানে কেউ পুরো ৫ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধীনতা পায় পাকিস্তান। ব্রিটিশ সরকার সেই বছর ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি রাষ্ট্রকে স্বাধীনতা দেয়। চলতি বছরের আগস্টে পাকিস্তানের ৭৫ বছর হবে। এসময়ে পথ চলায় দেশটি কোন প্রধানমন্ত্রীই তাদের ৫ বছরের মেয়া শেষ করতে পারলেন না।
যদি ১৯৪৭ সাল থেকে প্রতিটি প্রধানমন্ত্রীকে তার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করতে পারতেন তাহলে আজ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানের ১৫ তম প্রধানমন্ত্রী হতেন। তার পরিবর্তে, ইমরান খান ছিলেন দেশের ২২তম প্রধানমন্ত্রী।
সামরিক অভ্যুত্থান কিংবা বিরোধীদের অনাস্থার মুখে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীদের। পাকিস্তানের জিও টিভি সেই ইতিহাসই তুলে ধরেছে।
ইমরান খান দেশটির ১৫তম সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল মধ্যরাতে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হলেন। এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় ৭৫ বছরের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রীই পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না।
পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধীনতার দিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর এক জনসভায় বক্তৃতা দেয়ার সময় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।
লিয়াকত আলি খানের পর প্রধানমন্ত্রী হন খাজা নাজিমুদ্দিন। তিনি ১৯৫১ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে ১৯৫৩ সালের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদে বহাল ছিলেন।
পাকিস্তানের এর পরের ইতিহাসও একই রকম। কোনও না কোনও কারণে সরে যেতে হয়েছে ৫ বছরের আগেই। মোহম্মদ আলি বোগরা দুই বছর ক্ষমতায় ছিলেন। পরের জন চৌধুরী মোহাম্মদ আলী ছিলেন এক বছর। এর পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এক বছর দায়িত্ব পালন করতে পেছেন। তার বিয়াদের পর ক্ষমতায় এসেছে ইব্রাহিম ইসমাইল চুন্দিরগার দুই মাস ঠিকে ছিলেন। পরে ফিরোজ খান নুন এক বছরেরও কম সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরপর ক্ষমতায় আসা নুরুল আমিন ছিলেন মাত্র ১৩ দিন। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পৌনে চার বছর ঠিকে ছিলেন জুলফিকার আলি ভুট্টো। তার বিদায়ের পর মোহাম্মদ খান জুনেজো ছিলেন তিন বছর ক্ষমতায়।
এরপর পাকিস্তানে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান বেনজির ভুট্টো। তিনি মাত্র ২ বছর দেশ পরিচালনা করতে পেরেছিলেন। তার বিদায়ের মুসলিমলীগের নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিন বছরের কম সময় দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ইমরান খান। তিনি তিন বছর সাত মাস প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ইমরান খান। তিনি তিন বছর সাত মাস প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বহু নাটকীয়তার পর ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল মধ্যরাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান।
এবার যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি কত সময় পার করতে পারেন সময়ই বলে দেবে।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ