আন্তর্জাতিক
গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়লো আরও দুদিন
দীর্ঘ আলোচনার পর গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও দুদিন বাড়লো। সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এ বিষয়ে একমত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মধ্যস্ততাকারী দেশ কাতার।
গেলো শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে চারদিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, যা মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি ওঠে। সেই লক্ষ্যেই উভয় পক্ষ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর সঙ্গে জোর আলোচনা শুরু করে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন যে, গাজা উপত্যকায় অতিরিক্ত দুই দিনের জন্য মানবিক যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য একটি চুক্তি হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আরও চারদিনের যুদ্ধবিরতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করে মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে শেষ পর্যন্ত আরও দুইদিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তি করাস সম্ভব হয়েছে।
হামাস বলছে, আরও দুইদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, যা আগের শর্ত মোতাবেকই চলবে। অন্যদিকে, ইসরায়েল আগেই জানিয়েছিল, হামাসের হাতে বন্দি নাগরিকদের মুক্তির বিনিময়ে তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি আছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজম দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে বলেছেন, চারদিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় এখন পর্যন্ত সরবরাহ করা ত্রাণের পরিমাণ খুবই কম। তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির ফলে গাজায় আরও ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ তৈরি হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নতুন করে দুই দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে ফিলিস্তিনিরা স্বাগত জানিয়েছেন। গাজাবাসীর অভিমত, আরও দুই দিনের যুদ্ধবিরতি মানে ইসরায়েলের হামলা থেকে আরও দুই দিনের জন্য বেঁচে যাওয়া।
গেলো ৭ অক্টোবর নতুন করে শুরু হয় হামাস-ইসরায়েল সংঘাত। এরপর টানা প্রায় ৭ সপ্তাহ ধরে গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালায় ইসরায়েল। হামাসের হামলায় ইসরায়েলের ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও কয়েক হাজার আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ইসরাইলের হামলায় গাজায় প্রায় ১৫ হাজার নিহত ও ৩৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। সেই সঙ্গে গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে।
গেলো মাসে হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হওয়ার পরই যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হয়। প্রধানত কাতারের মধ্যস্থতায় চলতি সপ্তাহে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় উভয় পক্ষ। চুক্তির প্রধান শর্ত ছিল, গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ ও ত্রাণের ট্রাক প্রবেশের সুযোগ দেওয়া ও বন্দি বিনিময়।
এরপর গেলো শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৭টায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির মধ্যে এ পর্যন্ত তিন দফায় বন্দি বিনিময় হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে হামাস ১৩ জন ইসরায়েলি নারী-শিশু ও বৃদ্ধকে মুক্তি দেয়। অন্যদিকে, নারী-শিশুসহ ৩৯ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিন নারী-শিশুসহ ১৩ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেয় হামাস। যাদের মধ্যে ছয়জন নারী ও সাতটি শিশু ছিল। বিপরীতে নারী ও শিশুসহ ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। যার মধ্যে ছয়জন নারী ও ৩৩টি শিশু।
এরপর যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন রোববার (২৬ নভেম্বর) তৃতীয় দফায় ১৩ ইসরায়েলি ও ৪ বিদেশি নাগরিককে মুক্তি দেয় হামাস। তার বিনিময়েই আরও ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। সোমবার (২৭ নভেম্বর) চতুর্থ দফায় বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া চলমান।
সূত্র: আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//