আন্তর্জাতিক
পিটার হাসকে নিয়ে রাশিয়ার অভিযোগ ডাহা মিথ্যা: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে রাশিয়ার উত্থাপিত অভিযোগকে ডাহা মিথ্যা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, রাশিয়া নিজেও জানে পিটার হাসের বিরুদ্ধে তাদের তোলা অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।
স্থানীয় সময় বুধবার (৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনের কো-অর্ডিনেটর জন কিরবি একথা জানিয়েছেন।
এদিনের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পিছু হটার প্রশ্নও উঠেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নির্বাচন দেখতে চায়। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখবে।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে রাশিয়ার উত্থাপিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন, মস্কো সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। আপনি জানেন, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীদারদের (স্টেকহোল্ডার) সাথে অবাধ, সুষ্ঠু, এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবং তিনি বাংলাদেশে তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কারণ বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে হিংসাত্মক আক্রমণের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ান অভিযোগ এবং বাংলাদেশে পিটার হাসের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আমার আরও একটি ফলোআপ প্রশ্ন আছে।
জবাবে জন কিরবি বলেন, আপনি অবশ্যই আরেকটি প্রশ্ন করতে পারেন। নৌবাহিনীতে কর্মরত থাকার সময় আমি এ ধরনের অভিযোগের কথা শুনলে দুই সিলেবলের একটি শব্দে সেটার উত্তর দিতাম। তবে আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমি সেটা বলছি না। আমি আপনাকে এটাই বলবো- বিষয়টি (রাশিয়ার অভিযোগ) ডাহা মিথ্যা। রাশিয়ানরাও জানে, এটা মিথ্যা। এটাকে শুধুই রাশিয়ানদের মিথ্যা প্রচারণা বলা যায়। তারা জানে এটা মিথ্যা।
বাংলাদেশের জনগণের মতো যুক্তরাষ্ট্রও অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায় আমরাও তাই চাই এবং তা হলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। রাষ্ট্রদূত (পিটার হাস) এবং তার টিম যেভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক সেইভাবে তারা বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, বিরোধীদল, ক্ষমতাসীন সরকারসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন। বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করতে এবং গণতান্ত্রিক প্রত্যাশা পূরণে তাদের কঠোর পরিশ্রম অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।
এরপর পৃথক এক প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করার জন্য ভারত, চীন এবং রাশিয়া একজোট হয়েছে এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন ও বিরোধীদের জেলে ঢোকানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার আরেকটি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাহলে (বাংলাদেশের নির্বাচন প্রশ্নে) আপনি কি আপনার অবস্থান থেকে সরে আসছেন? এর আগে যেমনটা আপনারা বলছেন যে, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ আপনারা নেবেন?
জবাবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনের এই কো-অর্ডিনেটর বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করি এবং আমরা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ চালিয়ে যাবো।
তিনি আরও বলেন, দেশের বাইরের কোনও নির্বাচনে আরা কারও পক্ষ নিই না এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই নীতির পরিবর্তন হবে না। আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। বাংলাদেশের জনগণের সেই মৌলিক আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করার জন্য আমরা যা করতে পারি সেটাই করবো এবং রাষ্ট্রদূত ও তার দল সেটাই করবে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//