আইন-বিচার
হার্টের রিংয়ের দামে বৈষম্য নিয়ে হাইকোর্টের রুল জারি
দেশে হৃদরোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত সবচেয়ে আধুনিক স্টেন্টের (হার্টের রিং) বৈষম্যমূলক দাম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, নাঈম সরদার ও ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার।
এর আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গেলো ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশে হার্টের রিংয়ের দাম ঠিক করে। আর ভারতের জাতীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ কর্তৃপক্ষ গেলো ৩১ মার্চ তাদের দেশে স্টেন্টের দাম ঠিক করে দেয়।
দুই দেশের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রায় সব মানের স্টেন্টের দাম বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে সর্বোচ্চ তিন গুণ বেশি।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেশে ২৭টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের জন্য স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে। অধিদপ্তরের প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতীয় নীতিমালা বা মার্কআপ ফর্মুলা অনুসরণ করা হয়েছে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠানের বেলায়। যুক্তরাষ্ট্রের এই চার প্রতিষ্ঠানের একই মানের স্টেন্টের মূল্য দাঁড়িয়েছে ভারতের প্রায় তিন গুণ।
চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, এইচআরএস কার্ডিয়াক কেয়ার লিমিটেড, ম্যাট্রোনিক বাংলাদেশ লিমিটেড, মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড ও ভাসটেক লিমিটেড। এর মধ্যে এইচআরএস কার্ডিয়াক কেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিভিডি) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিনের স্ত্রী খুরশীদ জাহান। আর বাকি তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিভিডি) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিনের আত্মীয়-স্বজনরা জড়িত।
আমদানিকারক বাকি ২৩ প্রতিষ্ঠানের স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্কআপ ফর্মুলা মানা হয়নি। তারপরও যে দাম ঠিক করে দেওয়া হয়েছে তা ভারতে চলমান দামের চেয়ে সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা থেকে তিন গুণ পর্যন্ত বেশি। কিন্তু ভারতের তৈরি দুটি ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ধরা হয়েছে দেশটিতে যে দামে বিক্রি হয় তার চেয়ে ১১ হাজার টাকা কম।
আবার বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের তৈরি যে দুটি ব্র্যান্ডের স্টেন্ট সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় সেগুলোর একটির দাম ভারতের দ্বিগুণ, অন্যটির তিন গুণ বেশি।
যেমন আয়ারল্যান্ডের অ্যাবোট ভাসকুলার কোম্পানির তৈরি জিয়েন্স প্রাইম ব্র্যান্ডের একটি স্টেন্টের দাম ভারতে বাংলাদেশি টাকায় ২৯ হাজার ৯২৫ টাকা। বাংলাদেশে দাম ঠিক করে দেয়া হয়েছে ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা। একই দেশের বোস্টন সায়েন্টিফিকের তৈরি প্রোমুস এলিট ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম বাংলাদেশে ধরা হয়েছে ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা। ভারতে সেটির দাম ২৯ হাজার ৯২৫ টাকা।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এই বৈষম্যমূলক দামে অসন্তুষ্ট হয়ে ওশান লাইফ লিমিটেডসহ ১১টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সাতটি প্রতিষ্ঠান ও একজন ব্যক্তিকে রিটে বিবাদী করা হয়।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর যে দাম নির্ধারণ করেছে তা বৈষম্যমূলক। এর ফলে চারটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যদের জন্য যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তারা ওই দামে হার্টের রিং আমদানিই করতে পারবে না। ফলে বাজারে কেবল টিকে থাকবে চারটি প্রতিষ্ঠান। এর ফলে বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি হয়। সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে। আশা করছি, বিবাদীরা যথাসময়ে রুলের জবাব দেবেন।
তিনি আরও বলেন, আবেদনকারী ১১টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করার অধিকার রয়েছে। বৈষম্যমূলক দামের কারণে আবেদনকারীরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। একই সঙ্গে যাদের হার্টের রিংয়ের প্রয়োজন তাদের অতি উচ্চমূল্যে রিং ক্রয় করতে হবে। তারাও তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ