এশিয়া
দাউদ ইব্রাহিমের মৃত্যু! ছোটা শাকিল কী বলেন?
ভারতের মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বোমা হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানের করাচিতে মারা গেছেন বলে নেট দুনিয়ায় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাউদের মৃত্যু নিয়ে নানা পোস্ট দেখা যায়। পোষ্টগুলোতে দাবি করা হয়,বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর এই ‘গ্যাংস্টার’কে করাচির একটি হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ভারত সরকারের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীদের তালিকায় শীর্ষে থাকা দাউদ ইব্রাহিমের মৃত্যুসংবাদ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ক্রিনশট ঘোরাফেরা করছে। সেখানে আপাতদৃষ্টিতে দেখে মনে হয়েছে, স্ক্রিনশটটিতে থাকা অ্যাকাউন্টটি পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কাকারের। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই স্ক্রিনশট ভুয়া। অনেক ফ্যাক্ট-চেকার ভারতীয় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ওই স্ক্রিনশটে দেখতে পাওয়া অ্যাকাউন্ট কাকারের নয়।
ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট ডিএফআরএসি এক্স-এ এক পোস্টে জানিয়েছেন, ওই স্ক্রিনশটের অ্যাকাউন্টটির সঙ্গে পাকিস্তানের তত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী কাকারের আনুষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টের মিল নেই। আর কাকার এক্স-এ সর্বশেষ পোস্ট করেছেন গত ১৬ ডিসেম্বর।
তবে সব জল্পনার অবসান ঘটান দাউদ ইব্রাহিমের দীর্ঘ সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত ছোটা শাকিল। ভারতীয় গণমাধ্যম CNN News-18 কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ছোটা শাকিল বলেন,‘দাউদ বেঁচে আছেন এবং তার স্বাস্থ্যও ভালো আছে। এই ভুয়া খবর দেখে আমি আঁতকে উঠেছিলাম। আমি গতকালও তার সাথে বেশ কয়েকবার দেখা করেছি।’
এর আগে, ভারতের ফার্ষ্টপোস্ট, নিউজ-১৮সহ বেশিরভাগ ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানের করাচির একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শরীরে বিষক্রিয়ার জেরেই তাকে করাচির ওই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। ভর্তির পরই কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ওই হাসপাতালকে।
প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন’র অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসতেই পাকিস্তান জুড়ে ইন্টারনেট সেবা দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে দাউদের অসুস্থতা নিয়ে পাকিস্তান সরকার বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। গত কয়েকমাস ধরেই পাকিস্তানে বসবাসকারী বেশ কয়েকজন ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড লিডার’ মারা গেছেন।এমন পরিস্থিতিতে বর্তমানে করাচিতে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক দাউদ ইব্রাহিমের অসুস্থতার খবর আন্তর্জাতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,গত দুদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দাউদ। তার জন্য হাসপাতালের একটি ফ্লোর পুরো খালি করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ওই ফ্লোরে চিকিৎসক ও পরিবারের একেবারে ঘনিষ্ঠরা ছাড়া কারোরই দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই।
এদিকে, করাচির হাসপাতালে দাউদ ইব্রাহিমের ভর্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা পাকিস্তান জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবায় কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। অত্যন্ত ধীরগতিতে ইন্টারনেট পরিষেবা চলছে লাহোর, ইসলামাবাদ, করাচির মতো দেশের প্রধান শহরগুলোতে। রাত ৮টার পরে ইন্টারনেট পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশাল মিডিয়াও কাজ করছে না।পাকিস্তানের তত্বাবধায়ক সরকারের নেওয়া এমন পদক্ষেপের পরই দাউদ ইব্রাহিমের অসুস্থতা নিয়ে জল্পনা আরও বেড়ে যায়।তবে সব গুঞ্জনের অবসান ঘটান দাউদ ইব্রাহিমের ‘ঘনিষ্ঠ সহচর’ ছোটা শাকিল।
কে এই দাউদ ইব্রাহিম?
১৯৫৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ের রত্নাগিরি অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন দাউদ। পুলিশ কনস্টেবলের এই সন্তানটি চুরি, ছিনতাইয়ের হাত পাকাতে পাকাতেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের দুনিয়ায় পা রাখেন। এরপর ডি-কোম্পানি তৈরি করে মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ড জগতের বেতাজ বাদশা হয়ে বসেন দাউদ।
১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ ভারতের চলচ্চিত্র নগরী হিসেবে পরিচিত মুম্বাইয়ের বেশ কয়েকটি জায়গায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এসব সিরিজ হামলার অন্যতম মূল হোতা হিসেবে দাউদ ইব্রাহিমকে মনে করে ভারত সরকার। এর সূত্র ধরেই ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের নাম সবার নজরে আসে। ঘটনার দিন প্রথম বিস্ফোরণটি হয় মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে। ২৮ তলা এই ভবনটিতে তখন বহু মানুষ কাজ করছিলেন। বিস্ফোরণে মারা যান মোট ৮৪ জন। এরপরে প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পুরো মুম্বাইকে আতঙ্কে রেখে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। শেষ বিস্ফোরণটি হয় বিকাল ৩ টা ৪০ মিনিটে। মোট ১৩ টি বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এদিন। সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানায়। আর আহত হয়েছিলেন ৭০০র বেশি। তবে বেসরকারিভাবে বলা হয়, সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে তিন শতাধিক নিহত ও ১৪০০র বেশি আহত হয়েছিলেন।
ভারত থেকে পালিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে বসেই মুম্বাই হামলা পরিচালনা করেন দাউদ ইবব্রাহিম। বর্তমানে দ্বিতীয় বিয়ে করে করাচিতে বসবাস করছেন বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তবে পাকিস্তান সরকার ভারতের ওই অভিযোগ বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
কত সম্পত্তির মালিক দাউদ ইব্রাহিম?
‘এইসময়’সহ ভারতীয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, দাউদের কাছে মোট ৬.৭ বিলিয়ন ডলার বা ৬৭০ কোটি ডলারের সম্পত্তি রয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৭৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি (১ ডলার= ১১০ টাকা)। বিশ্বজুড়ে ৫০টির বেশি সম্পত্তি তার নামে রয়েছে। শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য জুড়েই রয়েছে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটিরও বেশি টাকার সম্পত্তি। জার্মানি, ফ্রান্স, তুরস্ক, স্পেন, মরক্কো, সাইপ্রাস, আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, সিঙ্গাপুরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই দাউদ ইব্রাহিমের সম্পত্তি। ভারতেও একাধিক প্রপার্টির মালিক মুম্বাই হামলার এই ‘মাস্টারমাইন্ড’।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/