আন্তর্জাতিক
প্রচণ্ড ক্ষুধা ও হতাশায় জর্জরিত গাজা: ডব্লিউএইচও
প্রচণ্ড ক্ষুধা ও হতাশায় জর্জরিত যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের অধিবাসীরা। বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস। গাজার অধিবাসীরা ভয়ঙ্কর বিপদে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডব্লিউএইচও এর তথ্য মতে, গেলো মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সংস্থাটি গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে কেবল ১৫টিতে চিকিৎসার উপকরণ সরবরাহ করতে পেরেছে। তবে এ হাসপাতালগুলোও কোনোমতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানম গাজা উপত্যকার অধিবাসীরা যে ভয়ঙ্কর বিপদের মুখোমুখি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণে জরুরি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া গুরুতর রোগের ঝুঁকিতে থাকা ক্ষুধায় কাতর মারাত্মকভাবে জখম হওয়া লোকজনকে সাহায্য করতে নিয়োজিত সাহায্যকর্মীদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্যও ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও প্রধান জানান, তাদের কর্মীরা বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) চিকিৎসা সামগ্রীর বহর নিয়ে যাবার সময় ক্ষুধার্ত মানুষ সেগুলো থামিয়ে খাবার খুঁজতে থাকে। ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী ও হাসপাতালের জন্য জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিয়ে যাবার পথে, এমনকি হাসপাতাল পর্যন্ত ক্ষুধার্ত ও বেপরোয়া মানুষ সেগুলোকে অনুসরণ করতে থাকে।
গাজা উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধের শুরু হয় গেলো ৭ অক্টোবর যখন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে এক হাজার ১৪০ জনকে হত্যা করে। নিহতদের বেশিরভাগই ছিল সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া হামাস ২৫০ জনকে অপহরণ করে, যাদের মধ্যে ১২৯ জন এখনও গাজার অভ্যন্তরে রয়েছেন।
এ ঘটনার পাল্টা জবাব দিতে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় স্থলপথে সামরিক অভিযানের পাশাপাশি বিমান থেকে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করছে। অব্যাহত হামলায় গাজায় ইতোমধ্যে ২১ হাজার ১১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী।
এমন পরিস্থিতিতে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করার বিষয়ে তেদরোস আধানম গ্রেব্রেয়াসুস বলেন, ‘আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা ও সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে গাজায় অতি দ্রুত আরও খাদ্য সহায়তা সামগ্রী পাঠানোর ওপর।’
গেলো সপ্তাহে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে গাজায় নিরাপদ ও বিঘ্নহীনভাবে মানবিক সহায়তা সামগ্রী পাঠানোর কথা বলা হয়। তবে, এতে তাৎক্ষণিক যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে তেদরোস আধানম বলেন, ‘এই প্রস্তাব মানবিক সাহায্য সামগ্রী বিতরণে আশার সঞ্চার করেছে। তবে দুঃখজনক হলো, এর বাস্তব কোনো প্রতিফলন এখনও দেখা যাচ্ছে না।’
ডব্লিউএইচও প্রধান আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে জরুরিভাবে আমাদের যুদ্ধবিরতি দরকার, যা বেসামরিক লোকজনকে সহিংসতা থেকে বাঁচাবে এবং পুনর্গঠন ও শান্তির পথের দীর্ঘ যাত্রাকে নিশ্চিত করবে।’
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//