এশিয়া
‘বেআইনি হত্যাকাণ্ড’ বন্ধ করতে ইসরায়েলকে আহ্বান জাতিসংঘের
টানা আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তবে ফিলিস্তিনের আরেক অংশ অধিকৃত পশ্চিম তীরেও থেমে নেই ইসরায়েলের বর্বরতা। সেখানে অভিযানের নামে প্রতিদিনই ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে পশ্চিম তীরে ‘বেআইনি হত্যাকাণ্ড’ বন্ধ করতে বলেছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ‘বেআইনি হত্যা’ এবং বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। একইসঙ্গে ইসরায়েলি অভিযানের সময় এই অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ার বিষয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা এবং সামরিক অনুপ্রবেশের ঘটনা ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’ পেয়েছে বলে এক রিপোর্টে বিস্তারিত প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়। এই ধরনের হামলা ও অনুপ্রবেশের ফলে মৃত্যু, আহত এবং অধিকৃত অঞ্চলে বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইন প্রয়োগের প্রেক্ষাপটে সামরিক কৌশল এবং অস্ত্রের ব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ শক্তির ব্যবহার এবং ফিলিস্তিনিদের প্রভাবিত করে এমন যেকোনও বিস্তৃত, স্বেচ্ছাচারী এবং বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধ প্রয়োগ করা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীর এবং অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। সেসময় থেকে পশ্চিম তীরে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ পশ্চিম তীরে অন্তত ৩০০ ফিলিস্তিনির মৃত্যুর বিষয়টি যাচাই করেছে, যার মধ্যে ৭৯ জন শিশুও রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ২৯১ জন ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে, আটজন বসতি স্থাপনকারীদের হাতে এবং একজন সৈন্য বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিহত হয়েছেন।
এছাড়া গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসঙ্গে গত ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিম তীরে ‘বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি’ পেয়েছে বলে জাতিসংঘ নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ‘গুলিবর্ষণ, বাড়িঘর ও যানবাহন পুড়িয়ে ফেলা এবং গাছ উপড়ে ফেলা’ মতো ঘটনাও রয়েছে।
ভলকার তুর্ক বলেন, আমি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বন্ধ করতে, বসতি স্থাপনকারীদের এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতার সমস্ত ঘটনা তদন্ত করতে, ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়কে উচ্ছেদে যেকোনও ধরনের বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে কার্যকর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে, স্পষ্ট এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতা রোধে ইসরায়েলকে ফের তাগিদ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। চলতি ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে দেশটি বলেছে, পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার বিষয়ে ইসরায়েলকে ‘আরও কিছু করতে হবে’।
তারও আগে চলতি মাসেই পশ্চিম তীরে সহিংস ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। পরে যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনার কথা জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)।
এছাড়া ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতার জন্য দায়ী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ব্রিটেনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ক্যামেরন ব্রিটেনের এই পরিকল্পনার কথা জানান।
জাতিসংঘের প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের দৈনিক হামলার সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
হামাস-ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আন্তঃসীমান্ত হামলা এবং গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের দিকে যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মনোনিবেশ করেছে, তখন পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় কর্মকর্তারাও।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/