অপরাধ
বর্ষবরণের রাতে ঢাকায় শতাধিক পাখির মৃত্যু
মহাকালের আবর্তে বিলীন হয়ে গেল আরেকটি বছর। নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে শুরু হলো নতুন বছর ২০২৪। হতাশা, দুঃখ ও না পাওয়ার বেদনাকে বিসর্জন দিয়ে এবং আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে নতুন আশা আর নতুন সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়ে শুরু হয় ইংরেজি নতুন বছর। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সবাই বরণ করছে নতুন বছরকে। তবে এই বর্ষবরণের রাতে আতশবাজি ও পটকা ফাটানোর আনন্দ অনেকের জন্য বিপদ ডেকে এনেছিল। যে পরিমাণে শব্দ ও বায়ুদূষণ হয়েছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে শহরের পাখিগুলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়নকেন্দ্রের (ক্যাপস) আলাদা পর্যবেক্ষণে গণমাধ্যমে এ চিত্র উঠে এসেছে। ওই পর্যবেক্ষণে জানা যায়, রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ বড় শহরের বায়ু ও শব্দদূষণ তীব্র হয়ে ওঠে। শিশু ও প্রবীণ মানুষেরা অনেকেই অসুস্থ বোধ করেন। তবে গত বছরের তুলনায় পটকা, আতশবাজি পোড়ানো কমেছে। সবচেয়ে কমেছে ফানুস ওড়ানো। এতে সামগ্রিকভাবে গত বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ দূষণ কম হয়েছে। তবে তা-ও ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে বায়ুমণ্ডলীয় অধ্যয়নকেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বর্ষবরণের রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আতশবাজি পোড়ানো এবং পটকা ফাটানোর শব্দ পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শব্দ হয় সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। যে পরিমাণে শব্দ ও বায়ুদূষণ হয়েছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে শহরের পাখিগুলো। গতকাল সোমবার বর্ষবরণের রাতে শুধু ঢাকা শহরে চার প্রজাতির শতাধিক পাখি মারা গেছে। আর কমপক্ষে চার প্রজাতির পাখি ভয় ও আতঙ্কে বাসা থেকে উড়ে গেছে। বেশ কিছু এলাকায় পাখিরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের পর্যবেক্ষণে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
এ বিষয় ঢাবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক আব্দুস সালাম গণমাধ্যমে বলেন, বর্ষবরণের রাত মানেই আতশবাজি আর পটকা ফাটানো নয়। এতে কিছু মানুষের আনন্দ হয়, কিন্তু শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষের জন্য গুরুতর ক্ষতি ডেকে আনে। এটা অনেকে বুঝতে পেরেছেন। তাই এবার সচেতনতা বাড়ায় শব্দ ও বায়ুদূষণ কমেছে। তবে আগামী বছরগুলোয় এ ব্যাপারে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোকে আরও সোচ্চার হতে হবে। নাগরিকদের হতে হবে আরও দায়িত্বশীল।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বর্ষবরণের রাতে বিকট শব্দে ও বায়ুদূষণের কারণে আটটি জায়গায় শতাধিক পাখির মৃত্যু হয়েছে। পাখিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল চড়ুই। এর পর কাক, বাতাসী ও ঘরবাতাসী পাখির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে মিরপুর–১৪ নম্বর এলাকা, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও জাতীয় চিড়িয়াখানা, তেজগাঁও সাতরাস্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া, ওয়ারী ও সদরঘাট এলাকায়। আর বিকট শব্দে বাসা থেকে বেশি পালিয়েছে টিয়া, লক্ষ্মীপ্যাঁচা, খঞ্জন ও শালিক পাখি।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী, রাতের বেলা রাজধানীতে শব্দের মানমাত্রা ৫০ ডেসিবেলের মধ্যে থাকতে হবে। কিন্তু রাতের ৯০ শতাংশ সময় ওই মাত্রা ৭০ ডেসিবেলের ওপরে ছিল। যা প্রতিদিনের গড় মাত্রার চেয়ে ৪২ শতাংশ বেশি। একই সময়ে বায়ুর মান ৩৫ শতাংশ অবনতি হয়। রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বায়ুতে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা ৯১ মাইক্রোগ্রাম বেড়ে যায়। যা ওই সময়ের স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি। তবে গত বছর একই সময়ের তুলনায় ১ মাইক্রোগ্রাম কম।
প্রসঙ্গত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দোলাইরপাড়, আনন্দবাজার, নীলক্ষেত ও নারায়ণগঞ্জ শহরের কয়েকটি এলাকায় বায়ুদূষণ ছিল গত বছরের মতো বেশি। অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মধ্যে ফার্মগেট, তেজগাঁও ও মহাখালী এলাকায় বেশি বায়ুদূষণ ছিল। উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ প্রধান আবাসিক এলাকাগুলোয় বায়ুর মান খুব বেশি খারাপ হয়নি। শব্দের মানও স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি ছিল।
এএম/
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ