আইন-বিচার
হজ প্যাকেজ কেন কমিয়ে নির্ধারণ করা হবে না জানতে চেয়ে রুল
সরকার ঘোষিত জনস্বার্থ পরিপন্থি হজ প্যাকেজকে (হজ প্যাকেজ ২০২৩) অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং প্যাকেজ কেন কমিয়ে নির্ধারণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (৮ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মো. আশরাফ-উজ জামান।
তিনি বলেন, ‘হজের সময় সব বিমানকে যাত্রী পরিবহন করার সুযোগ দেয়া প্রয়োজন বলে পর্যবেক্ষণ দেন আদালত। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান, অ্যাডভোকেট পারভেজ হোসেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ, হুমায়ুন কবীর তামিম, আজিজুল ইসলাম ও মো. ওমর ফারুক।
এর আগে গেলো ২৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে নোটিশটি পাঠান। ওইদিন আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান বলেন, ‘হজের মোট খরচ ৪ লাখ টাকায় সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সেখানে সরকার সাধারণ হজ প্যাকেজ ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। আর বিশেষ প্যাকেজ ৯ লাখ ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হজের মতো একটি ফরজ ইবাদতের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করা বাধা সৃষ্টির নামান্তর। নোটিশ পাওয়ার পর কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত।
রিটে বলা হয়, ২০২৪ সালের হজ প্যাকেজ (হিজরি-১৪৪৫) এর হজযাত্রীপ্রতি খরচ অত্যন্ত অযৌক্তিক, যা মানুষের নাগালের বাইরে।
এতে বলা হয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেটে মক্কা ও মদিনায় বাড়িভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৬৯ হাজার ৪১০ টাকা। যা অনেক বেশি। এতে বোঝা যায় যে, সরকার হজযাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করে বাড়ির মালিকদের অনুকূলে বাড়িভাড়া নির্ধারণ করেছে।
‘গেজেটে বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৩৪ টাকা, যা অনেক বেশি। এটা হজযাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা। আর জমজমের পানির বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা খুবই আপত্তিকর। এ বরকতময় পানি বিক্রি করে কোনো সরকার আর্থিক সুবিধা নিতে পারে না।’
রিটে আরও বলা হয়, সৌদির মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা এবং ‘ডি’ ক্যাটাগরির অধীনে মিনায় ফের পাঁচদিন থাকার জন্য সার্ভিস চার্জ বাংলাদেশি টাকায় ৬২ হাজার ২৭১ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা অতিরিক্ত। হজযাত্রীদের ওপর এ ধরনের অর্থ আরোপ প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ বা সৌদি সরকার মহান আল্লাহর মেহমানদের কাছ থেকে অর্থ উপার্জনে খুবই আগ্রহী।
‘তাছাড়া এ বছরের হজ প্যাকেজে বাংলাদেশি টাকায় ৯ হাজার টাকা ভিসা ফি, ইলেকট্রনিক সার্ভিস, গ্রাউন্ড সার্ভিস ফি, ক্যাম্প ফি নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সৌদি আরব সরকার এ ভিসা ফি আরোপ করতে পারে না। কারণ সব হজযাত্রী সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি তাদের পবিত্র দায়িত্ব পালনের জন্য পবিত্র মক্কা ও মদিনায় যাচ্ছেন।’
এতে আরও বলা হয়েছে, গেজেটে প্লেন ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা। যেখানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে বর্তমান প্লেন ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় ৭৬ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। প্রতিবছর সরকার হজযাত্রীদের বিমান বাংলাদেশ এবং সৌদি এয়ারলাইন্স থেকে প্লেনের টিকিট কিনতে বাধ্য করে, যাতে ওই এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোকে অবৈধ সুবিধা দেয়। এতে হজযাত্রীদের স্বাধীনতা এবং পছন্দের ক্ষতি হয়। এছাড়াও প্রতি হজ গাইডের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকায় ১৩ হাজার ৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অপ্রাসঙ্গিক। সরকার হজযাত্রীদের এই টাকা অযৌক্তিকভাবে পরিশোধ করতে বাধ্য করে।
রিটে উল্লেখ করা হয়েছে, বাড়িভাড়া, পরিবহন খরচ, স্বাস্থ্যবিমা সার্ভিস চার্জ এবং জমজমের পানিতে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা বেআইনি ও অনৈতিক। উভয় সরকারই হজযাত্রীদের ওপর এ ধরনের ভ্যাট আরোপ করতে পারে না। কারণ হজযাত্রীরা ভ্রমণকারী নন, তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর মেহমান।
হজযাত্রীদের সাধারণ এবং বিশেষ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না উল্লেখ করে রিটে বলা হয়, এটা স্পষ্ট যে এ হজ প্যাকেজ প্রকৃত তথ্য ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়নি। এটা হজযাত্রীদের সেবার জন্য তৈরি হয়নি, বরং এটি মুনাফা অর্জনের নগ্ন স্বার্থে হজযাত্রীদের শোষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এ প্যাকেজের এসব কর্মকাণ্ড থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশ ও সৌদি সরকার ইসলামি চেতনা ও নৈতিকতা বজায় না রেখে হজযাত্রীদের উসকানি দিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করছে।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ