আন্তর্জাতিক
আল-শাবাবের হাতে জাতিসংঘের হেলিকপ্টার আটক
পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় জাতিসংঘ মিশনের একটি হেলিকপ্টার আটক করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী আল-শাবাব। এছাড়া হেলিকপ্টারটির আরোহী ৮ যাত্রী ও ক্রুকেও আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বিবিসি।
সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর দখলে থাকা অঞ্চলে অবতরণ করার পরে হেলিকপ্টারটি দখলে নেয় তারা।
স্থানীয় সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, সোমালিয়ার সশস্ত্র গোষ্ঠী আল-শাবাব প্রায় আটজন যাত্রীসহ জাতিসংঘের একটি হেলিকপ্টার জব্দ করেছে। হেলিকপ্টারটি মধ্য সোমালিয়ায় ওই গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় অবতরণ করেছিল।
সোমালিয়ায় জাতিসংঘের মিশন (আনসম) দেশটিতে ‘আকাশপথে ভ্রমণকালীন একটি ঘটনার’ কথা নিশ্চিত করেছে। জাতিসংঘের চুক্তিবদ্ধ ওই হেলিকপ্টারে করে অসুস্থ লোকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল।
জাতিসংঘ অবশ্য আল-শাবাবের নাম উল্লেখ করেনি। তবে সংস্থাটি বলেছে, ‘এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রচেষ্টা চলছে’।
বার্তাসংস্থা এএফপি অনুসারে, জাতিসংঘের একটি মেমো বলছে- হেলিকপ্টারটি ধুসামারেব থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার (৪৩ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে ক্র্যাশ-ল্যান্ডিং করে এবং এতে জাতিসংঘের কোনও কর্মী ছিলেন না। এর অরোহীরা তৃতীয় পক্ষের ঠিকাদার ছিলেন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
হেলিকপ্টারটিতে থাকা ব্যক্তিদের জাতীয়তা সম্পর্কে জানা যায়নি বা সেখানে কতজন আছেন তার সঠিক সংখ্যাও উল্লেখ করা হয়নি। এতে এক যাত্রী নিহত ও দুইজন পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
বিবিসি বলছে, আল-শাবাব দক্ষিণ ও মধ্য সোমালিয়ার বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দলটি আল-কায়েদার সাথে সম্পৃক্ত এবং প্রায় ২০ বছর ধরে নৃশংস বিদ্রোহ চালিয়েছে।
হেলিকপ্টারটি আটকের বিষয়টি বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন গালমুদুগ অঞ্চলের নিরাপত্তামন্ত্রী মোহাম্মদ আবদি আদান। সোমালিয়ার সামরিক কর্মকর্তা মেজর হাসান আলী বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজন বিদেশি এবং দুই স্থানীয় ব্যক্তি হেলিকপ্টারটিতে ছিলেন।
তিনি বলেছেন, ‘এটি চিকিৎসা সামগ্রীও বহন করছিল এবং এটি গালগুডুদ অঞ্চল থেকে আহত সৈন্যদের পরিবহন করার কথা ছিল।’
আল-শাবাবের বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর আক্রমণের সম্মুখ সমরের কাছাকাছি উইসিল শহরের দিকে যাওয়ার সময় হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে।
উল্লেখ্য, সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দেশটির জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব এক দশকের বেশি সময় ধরে লড়াই করছে। সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশটিতে কঠোর ইসলামি শরিয়া আইন চালুর লক্ষ্যে লড়ছে তারা।
এছাড়া সোমালি সরকার সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করেছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//