অর্থনীতি
অর্থনীতির বড় সংকট হবে মূল্যস্ফীতি আর তথ্য বিভ্রাট: ডব্লিউইএফ
জলবায়ু নয়, আগামীতে অর্থনীতির বড় সংকট হবে মূল্যস্ফীতি আর তথ্য বিভ্রাট। সতর্ক থাকতে হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে। তা না হলে হোঁচট খাবে উন্নয়নশীল দেশগুলো। তার ওপর নির্বাচন আর গণতন্ত্র চর্চা গ্রহণযোগ্য না হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ হবে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিশ্ব ঝুঁকি প্রতিবেদন প্রকাশের সময় এসব কথা জানায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)।
বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদনে প্রতিবছরই জলবায়ু পরিবর্তনকে এগিয়ে রাখে সংস্থাটি। তবে এবারের প্রতিবেদনে এলো ভিন্নতা। বলছে, মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সহসাই মুক্তি মিলবে না।
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউইএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিয়া জাহিদী জানান, ২০২৪ সালে অনেক দেশেই জাতীয় নির্বাচন হবে। ফলে অর্থনীতির কোনো সিদ্ধান্তই স্থায়ী হবে না।
সাদিয়া জাহিদী বলেন, আগামী ২ বছর বেশ দুশ্চিন্তা থাকবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন ধাক্কা লাগতে পারে। তার ওপর পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলাচ্ছে। তাই সিদ্ধান্তও আসছে দ্রুত। এর মাঝে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মাঝে সহায়তার মনোভাব কমে গেছে। অনেক দেশে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যার প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতি আর রাজনীতির মেরুকরণে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তথ্য বিভ্রাট আর প্রযুক্তিই হবে আগামীর নতুন সংকট। সতর্ক না হলে কি হয়, সে উদাহরণে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির প্রসঙ্গ টেনে আনেন বক্তারা।
মার্শ ম্যাকলেনানের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ক্যারোলাইনা ক্লিন্টন বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ভুলে যাননি। মাত্র ৩৬টি ইমেইল পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৮১ লাখ ডলার সরিয়ে নেয় হ্যাকাররা। সেজন্য চেষ্টা করতে হয় ১ বছর। আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে মাত্র ২ দিনেই এই অপরাধ করা সম্ভব। আবার, একই প্রযুক্তি দিয়ে অপরাধীকে ধরে ফেলাও এখন সহজ। তাই আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে স্রেফ ঝুঁকিপূর্ণ বলছি না, আমরা এর সঠিক ব্যবহারের কথাও বলছি।
এ সময় জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার তাগিদও দেয়া হয়। জুরিখ ইন্স্যুরেন্স গ্রুপের টেকসই ঝুঁকি বিভাগের প্রধান জন স্কট বলেন, এবারের কপ সম্মেলনেও জলবায়ু নিয়ে ভালো আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এটি যথেষ্ট ভালো না। ব্যক্তিগতভাবে আপনি ইলেক্ট্রিক গাড়ি কিনে জলবায়ুর জন্য অবদান রাখতেই পারেন, কিন্তু কার্বণ নিঃসরণ কমানোর যৌথ ও আঞ্চলিক পদক্ষেপ কাজে আসছে কমই।
উল্লেখ্য, চলতি মাসে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ