খেলাধুলা
মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের চুক্তির মেয়াদ শেষ!
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ক্রিকেট বোর্ড মূলত লম্বা সময় ধরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) বরাদ্দকৃত চুক্তির মাধ্যমে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সব ক্রীড়া স্থাপনার মালিকানা এনএসসির আয়তাভুক্ত। যদিও এনএসসি ও বিসিবি দুই পক্ষের মধ্যে স্টেডিয়াম নিয়ে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছরের বেশি হয়ে গেছে।
২ জুন ২০০৮ সালে এনএসসি ও বিসিবি’র মধ্যে শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ব্যবহার নিয়ে চুক্তি সম্পাদিত হয়। ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে নিজামউদ্দিন চৌধুরি সুজন (বর্তমান সিইও-তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষে তৎকালীন পরিচালক প্রশাসন এবিএম আব্দুল ফাতাহ স্বাক্ষর করেন।
চুক্তিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের স্বাক্ষী হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এবং বিসিবি’র পক্ষে বিসিবি সভাপতির পিএস তৌহিদ মাহমুদ স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর ২০০৮ সাল হলেও চুক্তি কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে ১৮ অক্টোবর ২০০৬ সাল থেকে ১৫ বছর। ফলে ২০২১ সালের অক্টোবরে চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। চুক্তি পত্রে দুই পক্ষের সমঝোতায় পুনরায় নবায়নের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও দুই পক্ষের কেউই নতুন চুক্তি সম্পাদনে কার্যত উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
ক্রিকেট বোর্ডকে শুধু শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ১৫ বছরের চুক্তিতে ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করলেও অন্য পাঁচটি স্টেডিয়ামের (নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ওসমান আলী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম (এখন জহুর আহমেদ চৌধুরী), খুলনা মতিউর রহমান (শেখ আবু নাসের), রাজশাহী শহীদ ক্যাপ্টেন, (বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম) বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেনি এনএসসি। ২০০৬ সালের এক চিঠিতে এই পাচটি স্টেডিয়াম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়ে সকল দায়িত্ব ও ব্যয়ভার ক্রিকেট বোর্ডের উপর অর্পণ করেছিল এনএসসি।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সর্বোচ্চ সংস্থা হিসেবে ফেডারেশনগুলোর তদারকির অধিকার রাখে। শেরে বাংলা স্টেডিয়াম নিয়ে চুক্তির মেয়াদ দুই বছর আগে শেষ হলেও এনএসসি’র পক্ষ থেকে বিসিবি’কে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়নি।
অন্য দিকে বিসিবি বাংলাদেশের অন্যতম পেশাদার ক্রীড়া সংস্থা হলেও তারাও নতুন চুক্তি না করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যদিও দুই পক্ষ মৌখিকভাবে এই বিষয়ে আলোচনা করেছে। এখন অবশ্য দুই পক্ষই দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় আনুষ্ঠানিক চুক্তির ব্যাপারে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।
ফুটবল ফেডারেশন বাদে বাকি সব ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত ২ জন থাকেন। ফেডারেশন ও এনএসসির মধ্যে যোগসুত্রের জন্যই এই পন্থা। ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত ২ জন পরিচালক রয়েছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত পরিচালকরাও চুক্তি উত্তীর্ণের বিষয়টি অবগত নন।
ক্রীড়া স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ ও ফেডারেশনগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। সরকারি এই সংস্থা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে শেরে বাংলা স্টেডিয়াম নিয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে গেলেও বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও মওলানা ভাসানী স্টেডিয়াম ব্যবহার নিয়ে ফুটবল ও হকি ফেডারেশনের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি করেনি। অন্য সব ফেডারেশনের মতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের মধ্যে। ২০০০ পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট বোর্ড নাভানা টাওয়ারে অফিস করে। এরপর মিরপুর শেরে বাংলায় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও বোর্ডের অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//