উত্তর আমেরিকা
এবার ট্রাম্পের বয়স ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নিকি হ্যালি
নিকি হ্যালিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিকি হ্যালি। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্পের উসকানিতে যে সহিংস দাঙ্গা হয়, তা থামাতে ব্যর্থতার জন্য নিকি হ্যালিকে দায়ী করেন ট্রাম্প।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) ট্রাম্পের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন নিকি হ্যালি। বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হ্যালি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তার অধীনে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন হ্যালি। তিনি দাবি করেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মানসিকভাবে অযোগ্য ছিলেন। ২০২১ সালে ইউএস ক্যাপিটালের ৬ জানুয়ারি বিদ্রোহ বন্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ট্রাম্প তাকে দোষারোপ করার পরে হ্যালি তাকে এই কথা বলেন।।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে সর্বশেষ তিনজন প্রার্থীর লড়াই চলছে। তারা হলেন- সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এবং ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডি’স্যান্তোস। তাদের মধ্যে এবার প্রথম প্রাইমারি নির্বাচন হবে নিউ হ্যাম্পশায়ার রাজ্যে। সেই নির্বাচনের কয়েক দিন আগে শুক্রবার বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি নিকি হ্যালি আর ন্যান্সি পেলোসিকে গুলিয়ে ফেলেন। যখন ৬ জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা হয়েছিল, তখন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ছিলেন ডেমোক্রেট ন্যান্সি পেলোসি, নিকি হ্যালি নন। কিন্তু ট্রাম্প দ্বিধান্বিত হয়ে তাদের নাম গুলিয়ে ফেলেন। শুক্রবারের ওই বক্তব্যে তিনি ন্যান্সি পেলোসির পরিবর্তে দায়ী করেন নিকি হ্যালিকে।
ট্রাম্প ৬ জানুয়ারির সেই বিদ্রোহ, দাঙ্গার প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে বারবার এবারের নির্বাচনে তার দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম উল্লেখ করেন। জনাকীর্ণ সমাবেশে তিনি বলেন, নিকি হ্যালি তখন নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। আমরা তাকে সেনাবাহিনী, ন্যাশনাল গার্ডসহ ১০ হাজার মানুষ প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু তারা এই সহায়তা নেননি। এ নিয়ে তারা কোনো কথা পর্যন্ত বলতে চাননি।
নিউ হ্যাম্পশায়ার প্রাইমারিতে ট্রাম্পের শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি। তাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ক্যাপিটল হিলের ঘটনার সময় তিনি ছিলেন নিরাপত্তার ইনচার্জ। অথচ ওই সময় নিকি হ্যালি কোনো সরকারি দায়িত্বেই ছিলেন না। এর জবাবে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সাউথ ক্যারোলাইনার গভর্নর নিকি হ্যালি নিউ হ্যাম্পশায়ারের র্যালিতে বক্তব্যে বলেন, লোকজন বলছেন ট্রাম্প দ্বিধান্বিত হয়েছিলেন। তিনি তাই এলোমেলো কিছু কথা বলেছেন। কিন্তু আমি অপমানকর কিছু বলছি না। যখন আপনি একজন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়ে কথা বলবেন, তখন আমরা এমন কারও বিষয়ে কথা বলতে পারি না- যার মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন থাকে।
এবার ট্রাম্পের মানবিক সুস্থতা নিয়ে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন তার দলের প্রার্থী নিকি হ্যালি। শনিবার নিকি হ্যালির বয়স হয়েছে ৫২ বছর। অন্যদিকে ট্রাম্পের বয়স ৭৭ বছর। নিকি হ্যালি আরও বলেছেন, যেসব রাজনৈতিক প্রার্থীর বয়স ৭৫ বছরের ওপরে তাদের মানসিক সক্ষমতার পরীক্ষায় পাশ করা উচিত।
শনিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন। তিনি বলেন, শীর্ষ দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের একজন লোক প্রয়োজন। তিনি এমন একজন ব্যক্তি হবেন যিনি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা দেখবেন। তাদের বয়স যদি ৮০ হয় তা হলে আমরা দেখব তারা পুতিন, শি জিনপিং, কিম উন জং এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তি করছেন। আমরা আসলে এটা হতে দিতে পারি না।
ট্রাম্প বলতে চেয়েছেন পেলোসি বা নিকি হ্যালি ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গা থামাতে তার সহায়তা নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ৬ জানুয়ারির ওই দাঙ্গা নিয়ে তদন্ত করেছে প্রতিনিধি পরিষদ। ট্রাম্প যে এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন এর সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি। সমালোচকরা বলেন, ট্রাম্প ক্রমশ বুড়িয়ে যাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/