উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন ডিস্যান্টিস
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়ে নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিবিসির দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রিপাবলিকান পার্টি তাদের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। নিউ হ্যাম্পশায়ারে রিপাবলিকান প্রাইমারি নির্বাচনের আগে রন ডিস্যান্টিস সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। রিপাবলিকান প্রার্থী হওয়ার জন্য তাকেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল।
রোববার (২১ জানুয়ারি) এক ভিডিও বার্তায় ‘জয়ের সুনির্দিষ্ট পথ না থাকায়’ সরে দাঁড়াচ্ছেন বলে জানান ফ্লোরিডা গভর্নর ডিস্যান্টিস। সাত মাস প্রচারণার পর ডিস্যান্টিস সরে দাঁড়ানোয় রিপাবলিকান শিবির থেকে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এখন একমাত্র টিকে আছেন নিকি হ্যালি।
ট্রাম্পের শেষ অবশিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি বলেছেন, তিনিই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পরাজিত করতে সক্ষম। আগামীকাল মঙ্গলবার হ্যালি নিউ হ্যাম্পশায়ারে ট্রাম্পের সঙ্গে মুখোমুখি হবেন।
রোববার বিকেলে এক্সে (আগে যার নাম ছিল টুইটার) প্রায় পাঁচ মিনিটের দীর্ঘ একটি ভিডিওতে ডিস্যান্টিস জানান, তিনি এখন থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি একটি অনুকূল ফলাফল তৈরি করার জন্য আমি কিছু করতে পারি- আরও প্রচারণা বন্ধ, আরও সাক্ষাৎকার- আমি তা করব।’
ফ্লোরিডার এই গভর্নর বলেন, তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন, যিনি আইওয়াতে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হওয়ার পরে স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সঙ্গে ‘মতবিরোধের’ কথা স্বীকার করে ফ্লোরিডার এই গভর্নর বলেন, ট্রাম্প নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক মনোনীত প্রার্থী হতে প্রায় নিশ্চিত। আমি রিপাবলিকান মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করার জন্য একটি অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করেছি এবং আমি সেই অঙ্গীকারকে সম্মান করব।
সাংস্কৃতিক রক্ষণশীলতার প্রশ্নে বেশ আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়ে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক পরিচিতি পান। যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান পার্টির কট্টর রক্ষণশীলদের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয়, অনেকে তাকে রীতিমত রক-তারকার মতো ভক্তি করেন। তবে বামপন্থীরা তাকে একজন দক্ষিণ-পন্থী চরমপন্থী হিসেবে বর্ণনা করে।
একসময় তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার রাজনৈতিক গুরু মানতেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের বেশ অবনতি ঘটে। রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার জন্য এই সাবেক গুরু-শিষ্যের মধ্যে জোর লড়াই হবে বলে মনে করা হলেও শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন ডিস্যান্টিস।
রন ডিস্যান্টিস হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে প্রথম নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০১২ সালে। মাত্র ছয় বছর পর ২০১৮ সালে তিনি ফ্লোরিডার গভর্নর নির্বাচিত হন।
ডিস্যান্টিস ফ্লোরিডার গভর্নর হিসেবে শপথ নেন ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে।
২০১৮ সালে ফ্লোরিডার গভর্নর নির্বাচনের প্রচারণার সময় রন ডিস্যান্টিস।
রন ডিস্যান্টিস ডিজনি কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘ আইনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এসবের ফলে তিনি সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বেশ আলোচিত হতে থাকেন।
তবে তার রাজনৈতিক পরিচিত এবং খ্যাতি যখন বাড়তে শুরু করে, তখন আবার সাবেক রাজনৈতিক গুরু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে।ট্রা ম্প বলতে শুরু করেন, ২০১৮ সালে রন ডিস্যান্টিস যে গভর্নর নির্বাচিত হয়েছেন, সেটা তার সমর্থনের কারণেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প রন ডিস্যান্টিসকে নিয়ে নানা অপমানসূচক মন্তব্যও করেন। তার বিভিন্ন নীতির কড়া সমালোচনা করেন।
ডিস্যান্টিসের আগে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামাস্বামী।
দেশটির আইওয়া ককাস অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর গেলো ১৬ জানুয়ারি এই ঘোষণা দেন তিনি।
গেলো সোমবার (১৫ জানুয়ারি) রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটে ট্রাম্প জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি এবং ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিসকে হারান। এর মাধ্যমে ট্রাম্প টানা তৃতীয়বারের মতো রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন লাভ করার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছেন ট্রাম্প।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/