টলিউড
চা বিক্রি করে সংসার চালাতেন প্রসেনজিৎ!
টলিউডের খোদ ‘ইন্ডাস্ট্রি’ তিনি! বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার নামটা তারকাদের খাতায় জ্বলজ্বল করবে আজীবন। অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা রয়েছে তার ঝুলিতে। বলতে গেলে একসময় টলিউডের দুর্দিনে হাল ধরেছিলেন তিনি। এখন তিনি রয়েছেন খ্যাতির শীর্ষে। যদিও তার ছোটবেলাটা কিন্তু এমন সুন্দর রূপকথার গল্পের মত ছিল না। তিনি বাস্তব জীবনের কাহিনী সিনেমার থেকে কম নয় এ অভিনেতার। গল্পটা হলো টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী।
টলিউড তথা বলিউডের নামী অভিনেতা বিশ্বজিৎ চ্যাটার্জীর ছেলে তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তারকা সন্তান হওয়ার সুবাদে সবরকম বিলাসিতা তার পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ঠিক তার উল্টো। একটা সময় ছিল যখন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী এবং তার পল্লবী চ্যাটার্জীকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল। ছোটবেলায় চা বিক্রি করে কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়েছিল দুই ভাইবোনকে।
জি বাংলায় শাশ্বত চ্যাটার্জীর তারকাদের নিয়ে টক শো ‘অপুর সংসার’ -এ এসে হাজির হয়ে একবার নিজেদের ছোটবেলার কাহিনী শুনিয়েছিলেন পল্লবী। জানিয়েছিলেন কীভাবে তিনি এবং তার দাদা চা বিক্রি করে টাকা রোজগার করতেন। পল্লবী চা বানাতেন, আর সেই চা বিক্রি করতেন প্রসেনজিৎ।
পল্লবী বলেন চা বিক্রির পর যে টাকাটা হাতে পেয়েছিলেন সেই টাকাটাই যেন সেই সময় তাদের কাছে বিরাট পাওনা ছিল। রোজগারের সব টাকাটা তারা তাদের মায়ের হাতে তুলে দেন। তবে শুধু চা বিক্রি নয়, রোজগারের জন্য এক সময় কলকাতার পথে ট্যাক্সিও চালিয়েছিলেন পল্লবী। তখন তাদের আর্থিক অবস্থা ছিল খুবই খারাপ।
আসলে পল্লবী যে সময়টার কথা বলছেন ওই সময় প্রসেনজিৎ নামী অভিনেতা নন। একটা সময় তাদের বাবা বিশ্বজিৎ চ্যাটার্জী মুম্বাইতে গিয়ে অন্যত্র সংসার পাতেন। তাই প্রসেনজিৎ, পল্লবী এবং তাদের মা হয়ে পড়েন একা। পরিবারের অবস্থা তখন এতটাই খারাপ যে মাত্র ১৩ বছর বয়সে পল্লবীকে বিয়ে দিতে বাধ্য হন তার মা।
পল্লবী বলেন মায়ের আপন মামাতো ভাইয়ের সঙ্গেই তার বিয়ে হয়। যদিও বিয়ের পর তিনি পড়াশোনা ছাড়েননি। শ্বশুরবাড়ি থেকে তিনি নিয়মিত স্কুলে যেতেন। আজ প্রসেনজিৎ এবং পল্লবী দুজনেই কোটি কোটি টাকার মালিক। তবে এত সম্পত্তির মালিক হলেও পুরনো দিনের কথা তারা ভুলতে পারেন না। অতীতের সংগ্রাম এখনও যেন পল্লবীর চোখের সামনে ভাসে।
টলিউড
কাধে ঝোলা ব্যাগ নিয়ে লন্ডনে ঘুরছে স্বস্তিকা মুখার্জি
পরনে লাল রঙের শাড়ি,গায়ে হাতাকাটা আকাশি রঙের ব্লাউজ, মাথায় হ্যাট। কাধে ঝোলা ব্যাগ, চোখে-মুখে লেগে আছে অমলিন হাসি। দুই হাতে জুতো নিয়ে ফেসবুকে এমনই একটি ছবি পোস্ট করেছেন ওপার বাঙলার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর নেটিজেনরা তার সৌন্দর্যের প্রশংসা করছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, জুতা হাতে কেন দাঁড়িয়ে আছেন স্বস্তিকা?
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি । সাম্প্রতি তার মেয়ে অন্বেষা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। মেয়ের সমবর্তন উপলক্ষ্যে স্বস্তিকা মুখার্জি মেয়ে অন্বেষার সঙ্গে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এর এক ফাঁকে জুতা হাতে ক্যামেরাবন্দি হন এই অভিনেত্রী।
স্বস্তিকা মুখার্জি ফেইসবুক পোস্টে লিখেন, ‘মায়েরা যেটা সব থেকে ভালো পারে সেটাই করছি। সব পোশাকের সঙ্গেই বোঁচকা ব্যাগ নিয়ে চলছি। হাতে স্যান্ডেল নিয়ে ঘুরছি যাতে ইভেন্টের পর মেয়ে পরতে পারে। হিল সাময়িক ব্যবহার করার জন্যই। আর এই ব্যাগে নিজের গোটা সংসার নিয়ে ঘুরছি।’
জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাগর সেনের ছেলে প্রমিত সেনকে ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন স্বস্তিকা মুখার্জি। বাবা-মায়ের পছন্দেই এ বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু সংসার জীবনে ছন্দপতন ঘটে কয়েক বছরের মধ্যে । দুধের সন্তানকে কোলে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন স্বস্তিকা। তারপর থেকেই সিঙ্গেল মাদার হিসেবে একমাত্র কন্যা অন্বেষাকে বড় করেন এই নায়িকা।
জেডএস/
টলিউড
মমতার হস্তক্ষেপে দ্বন্দ্বের অবসান টলিউডে, শুটিং শুরু
বেশ কিছুদিন ধরেই কোন্দল চলছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের টলিউডে। মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন পরিচালক-অভিনয়শিল্পী ও টেকনিশিয়ানরা। যা নিয়ে দেনদরবারও কম হয়নি। বন্ধ ছিল শুটিং।
তবে সবার অপেক্ষা ছিল কোন্দল মেটাতে প্রয়োজন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হলোও তাই। অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে স্বস্তি ফিরল টলিপাড়ায়। বুধবার (৩১ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে শুটিং। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় ও টেকনিশিয়ানদের মধ্যকার সমস্যা মেটাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ, দেব ও পরিচালক গৌতম ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। এর পরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘দেখা হলো, কথা হলো, ভালো লাগল।’
তবে যাকে ঘিরে এতো বির্তক সেই রাহুল মুখোপাধ্যায় শুটিং শুরু করবেন আরো সাত দিন পর। পাশাপাশি ফেডারেশনের নিয়মকানুন নতুন করে খতিয়ে দেখতে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তিন মাসের মধ্যে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে গঠিত রিভিউ কমিটির কাছে নতুন নিয়মকানুন জমা দিতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকে বসেন পরিচালকরা। তারপর বিকেলে টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ানস স্টুডিওয় সাংবাদিক বৈঠক করে ফেডারেশন। সন্ধ্যায় সেখানেই পাল্টা বৈঠকে বসে ডিরেক্টরস গিল্ড। পরিচালকদের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, রাজ চক্রবর্তীসহ অনেকেই।
প্রসঙ্গত, সমস্যাটা শুরু হয় বাংলাদেশে একটি সিরিজের শুটিং করা নিয়ে। কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় এসে শুটিং করায় কলকাতার নির্মাতা রাহুল মুখোপাধ্যায়কে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল টলিউড নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। পরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সংগঠনটি। নিষেধাজ্ঞা তোলায় আপত্তি জানায় ফেডারেশন। ফলে ফেডারেশন পক্ষের টেকনিশিয়ানরা রাহুলের উপস্থিতিতে কাজ করতে অস্বীকার করেন।
এসআই/
টলিউড
টলিউডে চলমান স্থবিরতা নিরসনে যা বললেন প্রসেনজিৎসহ অন্যরা
পশ্চিমবঙ্গের টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নেমে এসেছে স্থবিরতা। পরিচালক রাহুল মুখার্জিকে ঘিরে শুরু হওয়া বিতর্ক ধীরে ধীরে বহুদূর বিস্তার লাভ করে বেশ বড় ঘটনায় পরিণত হয়েছে। শুটিংয়ে পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন না রাহুল মুখার্জি, টেকনিশিয়ানদের এই দাবির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন পরিচালক থেকে কলাকুশলীরা। যার রেশ ধরে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ আছে সব ধরণের শুটিং। এতে স্থবির হয়ে গেছে গোটা টলিউড।
শুরুতে কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় এসে শুটিং করা কলকাতার নির্মাতা রাহুল মুখোপাধ্যায়কে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল টালিউড নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। পরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সংগঠনটি।
নিষেধাজ্ঞা তোলায় আপত্তি জানায় ফেডারেশন। ফলে ফেডারেশন পক্ষের টেকনিশিয়ানরা রাহুলের উপস্থিতিতে কাজ করতে অস্বীকার করেন। কয়েক দিন ধরেই এক বিরল ঘটনার সাক্ষী টালিউড ইন্ডাস্ট্রি। ফেডারেশন বনাম পরিচালক ও প্রযোজক দ্বন্দ্বে বন্ধ সব শুটিং।
বিষয়টি সমাধানে সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে এক বৈঠক ডাকা হয় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সেখানে ছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা, রাজ চক্রবর্তী, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষ, বিরসা দাশগুপ্ত, সুদেষ্ণা রায়, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, সুব্রত সেনসহ আরো অনেকে। বৈঠক শেষে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আমরা একটি পরিবারের মতো। আমরা সারা জীবন টেকনিশিয়ানদের জন্য লড়াই করেছি। এটা মান-সম্মানের লড়াই। একটা পরিবারে অভাব-অভিযোগ থাকবে। তাই বলে পরিবার ভেঙে যায় না। আমরা চাই, কাজটা চলুক।’
তিনি আরো বলেন, ‘একটা ছবির পেছনে প্রচুর মাথা কাজ করে। তাদের সব পরিশ্রম বন্ধ হয়ে গেল। আমি এখনো বুঝতে পারছি না বিরোধিতা কোথায়। আমি এক দিনে অনেকটা খেয়ে পেট খারাপ করব নাকি অল্প অল্প করে খাব, সেটা ভাবতে হবে। আমাদের টেকনিশিয়ানদের দক্ষতা দেশের অন্য জায়গার তুলনায় অনেক ভালো। সুজিত সরকার, সুজয় ঘোষের মতো পরিচালকরা পোস্ট প্রডাকশনের কাজ করেন কলকাতায়। অথচ আমরা নিজেদের অগ্রগতির দিকে নজর দিই না। একজন পরিচালক সেটে এলে আমরা উঠে দাঁড়াই। পরিচালকদের সম্মান দেওয়া আমাদের কাজ। পরিচালকের আসনটা খুব সম্মানের। আমরা সবাই আবেগতাড়িত তবে ঘটনাটা এক দিনের নয়। অনেক দিন ধরে এটা জমতে জমতে এই আকার ধারণ করেছে। প্রত্যেকের যোগ্য সম্মান চাই। আমরা এখানে সদার্থক আলোচনা করছি।’
পরিচালক গৌতম ঘোষ বললেন, ‘একটা অচলাবস্থা চলছে। আমরা সেটা কাটিয়ে উঠতে চাই। আমরা যেন সবাই মিলেমিশে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আন্তর্জাতিক জায়গায় নিয়ে যাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটাই চেয়েছেন। এই অচলাবস্থা থেকে বেরোতে গেলে সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। দুই পক্ষকেই ভাবতে হবে। কেন এই অচলাবস্থা? তা মেটাতে চাই। কোনো কলহ নয়, বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্য। আমরা বিভাজনে বিশ্বাস করি না। আমাদের ছোট একটা ইন্ডাস্ট্রি। এখানে কোনো পক্ষ নেই। সবাই আমরা এক।’
রাজ চক্রবর্তী শেষে বলেন, ‘আমি সবার কাছে হাতজোড় করে বলছি আপনারা ভাবুন, আমরা যাতে কাল থেকে কাজ শুরু করতে পারি। আমরা আশা করছি, একটা সদর্থক কিছু বেরোবে।’
এই সংকট কাটিয়ে উঠতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নির্মাতারা।
এসআই/