রংপুর
গোবিন্দগঞ্জে রংপুর ইপিজেডএর কার্যক্রম শুরু
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের সুচনা শুরু হয়েছে বহুল প্রতিক্ষিত ইপিজেড স্থাপন। এ যেন মঙ্গাপীড়িত এলাকার তকমা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রাপথের সঙ্গী হিসেবে পথচলার শুরু। দেশ ও এলাকার উন্নয়ন স্থাপন করা হয়েছে উত্তর জনপদের রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে বহুল কাঙ্খিত রংপুর রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (আরইপিজেড) এর সাইনবোর্ড। আর এতেই খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে জেলা জুড়ে।
অন্যদিকে পৈত্রিক জমি ফিরে পেতে আন্দোলনে নেমেছেন স্থানীয় সাঁওতালরা। এসব জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্তে নারাজ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষরা।১৯৫৪ সালে আখ চাষের জন্য জমিগুলো অধিগ্রহন করে সরকার। কিন্তু আখ চাষ না করাসহ জমি গুলো লীজ নিয়ে অধিগ্রহনের শর্ত ভঙ্গ করেছে চিনি কল কর্তৃকপক্ষ।
বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) কর্তৃক গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাইয়াগঞ্জ ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন এলাকায় গোবিন্দগঞ্জ দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। গেল বুধবার (২৫ মে) দুপুরে স্থাপনের পর এই সাইনবোর্ড পথচারীদের দৃষ্টিগোচর হয়। আর এই সাইনবোর্ড স্থাপনের খবরে খুশির বন্যা বইছে জেলাজুড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক উপজেলার ব্যবহারকারীদের ওয়াল ভরে গেছে এই সাইনবোর্ডের ছবিতে।
বর্তমান সরকার রংপুর চিনিকলের নিজস্ব মালিকাধীন সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামারের জমিতে দেশের ১০ম রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর নাম দেওয়া হয়েছে রংপুর রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (আরইপিজেড)। ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিক খামারের ১ হাজার ৮শ’ ৪২ একর জমির মধ্যে ৪০০ একর জমির দলিল বেপজার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর এই সাইনবোর্ড স্থাপনের মধ্যে দিয়েই দৃশ্যমানভাবে আরইপিজেড এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হলো বলে মনে করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীসহ এলাকার লোকজন।
রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর জমিগুলো পরিদর্শনসহ কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ রপ্তানীকরণ অঞ্চল কর্তৃকপক্ষ।
স্থানীয়রা বলছেন, ইউজেট হলে গড়ে উঠবে অসংখ্য শিল্প কর-কারখানা।আর সৃষ্টি হবে কয়েক লাখ বেকারের কর্মস্থান। সেই সাথে শিক্ষা যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ জীবন উন্নয়নের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। শুধু গাইবান্ধা জেলা নয় উত্তর অঞ্চলের প্রায় ৫টি জেলার মানুষের কর্মসংস্থান হবে এই ইপিজেডে। তারা প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তরকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ধন্যবাদ জানান।
এখানকার সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন, কোন প্রকার দালিলিক প্রমাণ ছাড়াই সহজ-সরল ও নিরীহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির একদল মানুষকে জমি দেয়ার মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডেকে এনেছে এখানকার কয়েকজন ভূমিদস্যু। তাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তীর-ধনুকসহ সন্ত্রাসী কায়দায় চিনিকলের মালিকানাধীন সরকারি সম্পদ লুটপাটের অপচেষ্টা করছে ওই চক্রটি।
২০১৬ সালে বাপ-দাদার জমি ফেরত পেতে আন্দোলনসহ বসবাস শুরু করেন সাঁওতালরা। কিন্তু ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আখ কাটাকে কেন্দ্র করে চিনি কল কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে স্থানীয় সাঁওতালদের। এসময় লুপপাট ও অগ্নিসংযোগসহ পুলিশের গুলিতে মারা যান তিন সাঁওতাল। এঘটনায় আহত হন কমপক্ষে ২০ জন।
সাঁওতালদের অভিযোগ এই জমিতে ইপিজেড হলে বাপ-দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি হারিয়ে নিঃস্ব হবেন তারা। তারা দাবি করেন জমি না দিলেও এখানেই থাকবো আমরা। সরকারের কাছে তারা জমির দাবি করেন। তারা বলেন, আমাদের যাওয়া আর কোন জায়গা নেই। জমি ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ তিন জনের মৃত্যুর ঘটনায় সাঁওতালদের করা মামলা ছাড়াও পুলিশ ও বর্তমানে চিনিকল কর্তৃপক্ষের কয়েকটি মামলা আদালতে চলমান রয়েছে।
এদিকে গেলো ২৪ অগাস্ট ইপিজেট নির্মাণে জন্য পরিদর্শন করছেন বাংলাদেশ রপ্তানি করণ প্রক্রিয়া কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম। এর আগে তিনি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের হল রুমে চিনির কল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সাংবাদিক ও জন প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময়ে মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম বলেন, ইপিজেডে সাঁওতালদের কর্ম সংস্থানের পাশা-পাশি ক্ষতিগ্রস্থ সাঁওতালদের পূর্ণবাসনে কথা তুলে ধরেন। এছাড়া আলোচনার মাধ্যমে সাঁওতাল দাবি গুলো খতিয়ে দেখারও আশ্বাস দেন তিনি।
দেশসহ উত্তরবঙ্গের মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে আরইপিজেড। দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সকল স্তরের মানুষ।
জাতীয়
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে কাউন্সিলরসহ নিহত ৫
রংপুরে অসহযোগ আন্দোলনে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রংপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে রংপুর নগরীতে সংঘর্ষ চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হারাধন রায় হারা রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি। নিহতের বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রসিক কাউন্সিলর শাহাজাদা আরমান শাহাজাদা।
নিহত অন্য চারজন হলেন নগরীর গুড়াতিপাড়ার স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা খরশু মিয়া, যুবলীগ নেতা মাসুম, হারাধন রায়ের ভাগ্নে এবং অপরজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা যায়, সকাল থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ঘিরে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ অবস্থান নেন নগরীর টাউনহল চত্বরে। এতে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পরে জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পায়রা চত্বরে পুনরায় অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে গিয়ে আটকে পড়েন পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা। পরে পায়রা চত্বর থেকে পালিয়ে কালিবাড়ি মন্দিরে প্রবেশ করার সময় আন্দোলনকারীদের হাতে ধরা পড়েন হারাধন রায় হারা। সেখানেই এলোপাতাড়ি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হলেও পুনরায় এলোপাতাড়ি আঘাত করেন তারা। পরে পরিবারের লোকজন ঘটনা জানার পর হারাধনের মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান করা এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমান, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের রিপোর্টার ফখরুল শাহীন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার রেজাউল ইসলাম মানিক, একুশে টিভির ক্যামেরাম্যান আলী হায়দার রনি, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, অনলাইনের মিজানসহ ১০ জন গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর করেছেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন, গংগাচড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও আগুন, মিঠাপুকুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে ইউএনও অফিস, বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম, আনসার ভিডিপিসহ বিভিন্ন দফতরে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এএম/
দেশজুড়ে
রংপুরে আ.লীগের এমপির বাসায় আগুন, লুটপাট
রংপুরের বদরগঞ্জে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী (ডিউক) ও পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরীর (টুটুল) বাসায় আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আগুন দেওয়ার পর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
প্রথমে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা ও ধাওয়া দিয়েছেন। পরে বিক্ষোভকারীরা একত্রিত হয়ে স্থানীয় দুপুর ১২টার দিকে আগুন দেয়। বিক্ষোভকারীরা লাঠি হাতে ওই দুই বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছে।
অন্যদিকে রংপুর শহরের সুপার মার্কেটের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। রোববার (৪ আগস্ট) সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/
দেশজুড়ে
সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রংপুর, নিহত ২
রংপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে শহরের সুপার মার্কেটের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ও নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায় নি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (রমেক) উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সকালে আন্দোলনকারীরা শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। এ সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। আন্দোলনকারীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৩২ জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন (অপরাধ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এনএস/