ফুটবল
শুভ জন্মদিন রোনালদো-নেইমার-তেভেজ
ফুটবল বিশ্বে ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখটিকে বিশেষ এক তারিখ বলা যেতেই পারে। তাই আজকের দিনে জন্ম নিলে যেকেউ নিজেকে কিঞ্চিৎ সৌভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। আর তিনি যদি হয়ে থাকেন ফুটবলের ভক্ত, তবে দিনটা হতে পারে আরও বেশি দুর্দান্ত। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমার জুনিয়র, কার্লোস তেভেজ, জর্জ হাগি, আদনান জানুযাজ, সিজার মালদিনি, রদ্রিগো পালাসিওসদের মত ফুটবলারদের জন্ম এই একই তারিখে। ভিন্ন ভিন্ন দেশে জন্মালেও তারা ফুটবল মাঠে দেখিয়েছেন নিজেদের অনন্য নৈপুণ্য। জয় করে নিয়েছেন অগণিত ভক্তের হৃদয়।
১৯৮৫ সালের এই দিনে মাদেইরাতে জন্ম হয় ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। ইতিহাসের সেরা গোলস্কোরার নিজ সময়ের তো বটেই, তর্কসাপেক্ষে সর্বকালের সেরাদেরও একজন। তরুণ রোনালদো স্পোর্টিং সিপি থেকে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। এরপর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে এসে নিজেকে মেলে ধরেন বিশ্বের দরবারে।
স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীনে খেলে নিজেকে করে তুলেছিলেন সময়ের সেরা তারকা। ২০০৮ সালে জেতেন মর্যাদাপূর্ণ ব্যালন ডি’অর। ২০০৯ সালে রেকর্ড ট্রান্সফারে চলে যান রিয়াল মাদ্রিদে। সেখানেই সিআরসেভেন নিজের সেরা সময় পার করেছেন। চারটি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ব্যালন ডি অর, লা লিগাসহ ফুটবলের সম্ভাব্য সব ট্রফিই জয় করেছেন লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে। ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির সর্বকালের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি।
২০১৮ সালে তিনি পাড়ি জমান ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্তাসে। সেখানে তিন মৌসুম কাটিয়ে ফেরেন ম্যান ইউনাইটেডে। যদিও তিক্ত সম্পর্ক নিয়ে ২০২২ সালে ইউনাইটেড ছাড়েন তিনি। বর্তমানে আছেন সৌদি ক্লাব আল-নাসরে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইরানের কিংবদন্তি আলী দাইয়িকে ছাড়িয়ে হয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। জিতেছেন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব ইউরোর শিরোপা।
নেইমারের জন্ম ফুটবলের উর্বরভূমি ব্রাজিলে। যেখানে অলিতে-গলিতে জন্ম নেয় ফুটবলার। ১৯৯২ সালে সেখানেই জন্ম নেন নেইমার জুনিয়র। ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দামে দলবদলের রেকর্ড আছে তার নামের পাশে। খেলেছেন কিংবদন্তি পেলের স্মৃতিবিজড়িত ক্লাব সান্তোসে। সেখান থেকে আসেন বার্সেলোনায়। লিওনেল মেসি এবং লুইস সুয়ারেজকে নিয়ে গড়েন বিখ্যাত ‘এমএসএন’ ত্রয়ী। ২০১৫ সালে জেতেন ট্রেবলও।
২০১৭ সালেই অবশ্য রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে চলে যান পিএসজিতে। সেখান থেকে নিজের ঠিকানা করেছেন সৌদি ক্লাব আল-হিলালে। নিজের প্রজন্মের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড় অবশ্য ইনজুরির কারণেই হারিয়েছেন ক্যারিয়ারের অনেক সেরা সময়।
আর্জেন্টাইন কার্লোস তেভেজকেও ফুটবল দুনিয়া মনে রাখবে তার আগ্রাসী খেলার জন্য। বর্তমানে কোচিং পেশায় আসা এই স্ট্রাইকার নিজের সময়ে ছিলেন অন্যতম সেরা। ওয়েইন রুনি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদের সঙ্গে ম্যানইউতে দারুণ সময় পার করেছেন এই আর্জেন্টাইন। ২০০৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন। খেলেছেন ম্যানসিটির জার্সিতেও। সিটির বড় ক্লাব হয়ে ওঠার চেষ্টায় তিনি ছিলেন প্রথম দিকের সাইনিং।
আশি এনং নব্বই দশকের অন্যতম সেরা এবং রোমানিয়ার ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরা তারকা জর্জ হাগি। বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ দুই ক্লাবেরই খেলোয়ার ছিলেন হাগি। বর্তমানে যুক্ত আছেন কোচিং পেশায়। ইতিহাসের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার ইতালির সিজার মালদিনিও একই দিনে পৃথিবীতে আগমন করেন। ১৯৬৩ সালে মিলানকে প্রথম ইউরোপিয়ান কাপ এনে দিয়ে অধিনায়ক মালদিনি ক্লাবটির প্রতীক বনে যান। পরে কোচ হয়েও দুই দফায় মিলানের ডাগআউটে এসে জিতিয়েছেন উয়েফা কাপ, উইনার্স কাপ ও ইতালিয়ান কাপ।
এছাড়া কোচিংয়ে খ্যাতি পাওয়া সাবেক সুইডিশ রাইটব্যাক সোয়েন-গোরান এরিকসনের আগমনী সময়ও একই। ১৯৪৮ সালে জন্ম নেয়া এরিকসন ক্লাব ও জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে ‘সুইডিশ আইসম্যান’ খেতাব পান। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ইংল্যান্ড জাতীয় দলের কোচ এবং সুইডেন, পর্তুগাল ও ইতালিতে ক্লাবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//