বাংলাদেশ
বিএনপি গাছ কেটে মাছের ঘের শুরু করে: প্রধানমন্ত্রী
আমাদের অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে সোনাদিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যে সমস্ত গাছ হয়েছিল সরকারে আসে বিএনপি সেখানে মাছের ঘের করতে শুরু করে। এমনকি সুন্দরবনের ভেতরে ঘষিয়াখালী খাল, যেটা জাতির পিতার কাটা, সেটা পশুর নদী হয়ে সাগরে পড়েছে। ওই খাল প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মংলা পোর্টও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল বিএনপি সরকার। বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার (৬জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা- ২০২২ এবং জাতীয় বৃক্ষ রোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা-২০২২’ এর উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
তিনি বলেন, সুন্দরবনের প্রায় ২৫০ খালের মুখ বন্ধ করে সেখানে চিংড়ি চাষ করা হতো। সেখান থেকে আমরা প্রায় ১০০ খাল উন্মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। আমি আহ্বান করব বাকি খালগুলো যেন উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের ভেতরে শ্যালা নদী। এখানে কিন্তু আমাদের ডলফিন থেকে শুরু করে যেসব পশু আছে, তারা পানি খায়। আমাদের রয়েল বেঙ্গল টাইগার ওই নদীতে পানি খায়। আমাদের জীববৈচিত্র্য ওখানে রয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ঘাষিয়াখালী খাল বন্ধ করে দিয়ে জাহাজগুলো ওই শ্যালা নদী দিয়ে যাতায়াত শুরু করে। আমি সরকারে আসার পর (দ্বিতীয় দফা) সেই খাল আবার কেটে দিয়েছি। কিন্তু ঘাষিয়াখালী খাল টিকে থাকবে তখনই যখন বাকি খালগুলো সুন্দরবনের ভেতর থেকে উন্মুক্ত করা হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, এখানে আমাদের বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আছেন। তিনি ওই এলাকার সংসদ সদস্য। তাকে আমি বলব, এ ব্যাপারে যেন আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমাদের যে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আছেন তাদেরও বলব, বাকি যে খালগুলো আছে সেগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া। তাহলে খালটার নাব্যতা থাকবে এবং আমাদের সুন্দরবনের জন্য সেটা ভারসাম্য রক্ষা করবে। আমরা বিভিন্নভাবে এসব উদ্যোগ নিচ্ছি।
তিনি বলেন, অন্যান্য যেসব চরাঞ্চল আছে সেখানে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। জাতির পিতা বলতেন, বৃক্ষরোপণ করলে প্রাকৃতিকভাবে আমরা অনেক ভূমি উত্তোলন করতে পারি। এছাড়া আমরা নদীগুলো ড্রেজিংয়ের পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক নদী ড্রেজিং করছি। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর ভেতর থেকে আমরা অনেক ভূমি উত্তোলন করতে সক্ষম হচ্ছি। ভূমি উত্তোলনের সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বনায়ন করা এবং পরবর্তীতে সেগুলো আমরা শিল্পায়নের জন্য ব্যবহার করতে পারি, বসতির জন্য ব্যবহার করতে পারি। চাষাবাদের জন্য ব্যবহার করতে পারি। সেগুলো কিন্তু আমরা করে যাচ্ছি। এটা আরও ব্যাপকভাবে (কর্মসূচি) আমাদের নিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নদীগুলো বাঁচিয়ে রাখতে পারলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও আমরা মুক্তি পাব। লবণাক্ততা থেকেও আমরা মুক্তি পাব এবং আমাদের মৎস্য সম্পদ বা জলসম্পদ সেটাও বৃদ্ধি পাবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমাদের বন সংরক্ষণ, সেটা যেমন করতে হবে; এখন আরেকটা বিষয়ে মানুষ খুব উৎসাহিত হচ্ছে, ছাদবাগান, ইতোমধ্যে একজন পুরস্কারও পেয়েছেন। এ ধরনের উদ্যোগগুলো আরও উৎসাহিত করা উচিত। ছাদবাগানটাও ব্যাপকভাবে কাজে লাগছে।
‘আপনারা জানেন, করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিতে যথেষ্ট ক্ষতি করেছে। এর উপরে আবার এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে আজ আমাদের যেসব খাদ্য আমদানি করতে হয় সেগুলোর ভাড়া যেমন অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়েছে, পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য পাওয়াটাও এখন কষ্টকর হয়ে গেছে। বাংলাদেশের জমি উর্বর, আমাদের মানুষ আছে। তাই আমাদের নিজের ফসল নিজেদের ফলাতে হবে। যেসব জিনিস আমাদের প্রয়োজন, তা আমরাই উৎপাদন করব। এতে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন রক্ষা পাবে, আমরা পরনির্ভরশীলতাও কাটিয়ে উঠতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা আমাদের বনকে ২২ ভাগে উন্নীত করতে পেরেছি। এটা মাত্র ১১ ভাগ পেয়েছিলাম ৯৬ সালে। বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার ফলে আজ তা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের সামাজিক বনায়নের বিষয়টাও ব্যাপকভাবে করে যেতে হবে। এতে দরিদ্র জনগোষ্ঠী লাভবান হবে। তারা নিজেরা গাছ শুধু লাগায় না, গাছগুলো চমৎকারভাবে পাহারা দেয়। এটা নিজে আমি দেখেছি। আমাদের বনভূমি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এর সার্বিক উন্নয়নের কাজও করে যেতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।
আগামী ১৫ জুন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে— জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা সহযোগী সংগঠন, আমাদের কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ; আমাদের যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ সকল সংগঠন, তারা কিন্তু ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করে। শুধু করেই না, করার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে তারা ছবিও পাঠায়। এটা বাধ্যতামূলক।
এসআই/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ