আন্তর্জাতিক
ধাক্কা দিয়ে সেতু ভেঙে ফেলা জাহাজের সব ক্রু ছিলেন ভারতীয়
কন্টেইনার বোঝাই একটি জাহাজের ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে ভেঙে পড়েছে সুদীর্ঘ এক সেতু। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে দেশটির মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোর শহরের ফ্রান্সিস স্কট কি নামক সেতুতে সজোরে ধাক্কা লাগে জাহাজটির। ধাক্কায় ধসে পড়ে ১ দশমিক ৬ মাইল বিশাল এই সেতুটি। আর ধাক্কা দিয়ে বাল্টিমোর সেতুকে ধসিয়ে দেয়া ওই জাহাজটির সকল ক্রু সদস্যই ভারতীয়। অবশ্য দুর্ঘটনায় তারা কেউই আহত হননি।
এ দুর্ঘটনায় ওই সেতুতে থাকা অনেক যানবাহন ও মানুষজন পড়ে যায় নদীতে। এতে আছে হতাহতের আশঙ্কা, চলছে উদ্ধার অভিযান।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় ক্রু থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে শিপিং কোম্পানি মায়েরস্ক। যেটি ‘ডালি’ নামে সিঙ্গাপুরের পতাকাযুক্ত কন্টেইনার জাহাজটি পরিচালনা করছিল। জাহাজটিতে মোট ২২ জন ক্রু ছিলেন, তারা সকলেই ভারতীয়। তারা সকলেই নিরাপদ রয়েছেন।
মেরিল্যান্ডের গভর্নর বলেছেন, ব্রিজে সংঘর্ষের আগেই বিপদ বুঝে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল জাহাজের পক্ষ থেকে। আর সেই অনুযায়ী, ব্রিজে নতুন করে আর গাড়ি উঠতে দেয়া হয়নি, যে কারণে ক্ষয়ক্ষতি সামান্য হয়েছে। যদি জাহাজটি আগে না জানাত, তবে বহু মানুষের প্রাণহানি হতে পারত।
গভর্নর ওয়েস মুর বলেছেন, ধাক্কা দেওয়ার আগে ৩০০ মিটার দীর্ঘ এই জাহাজটি ‘দ্রুত’ (ঘণ্টায় নয় মাইল) গতিতে চলছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা কৃতজ্ঞ যে, ধাক্কা দেয়ার আগে সংকেত পাঠানো এবং সেতু ধসে পড়ার সময়ের মধ্যে আমাদের কর্মকর্তারা যান চলাচল বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই লোকেরা বীর। তারা গত রাতে মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন।’
বাল্টিমোর শহরের ফায়ার বিভাগের যোগাযোগ পরিচালক কেভিন ক্যাটরাইট বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, একটি বড় জাহাজ সেতুর সঙ্গে আটকে গিয়েছিল। ফলে এটি ধসে প্যাটাপস্কো নদীতে পড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, সেতু ধসে অন্তত সাতজন ব্যক্তি ও বহু যানবাহন নদীতে পড়ে গেছে।
ফায়ার বিভাগের নেতৃত্বে বিভিন্ন সংস্থা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। তাদের সঙ্গে মার্কিন কোস্টগার্ড ও মেরিল্যান্ড এজেন্সিও যোগ দিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার (১.৬ মাইল)। এ ঘটনার পর সেতুর সব লেন উভয় দিক থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মেরিল্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, ডালি নামক ওই কন্টেইনার জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে বাল্টিমোরের ব্রিজে ধাক্কা দেয়। এতে প্যাটাপসকো নদীতে থাকা ওই সেতুটি ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় বেশ কিছু গাড়ি নদীতে পড়ে যায়। এছাড়া ২০ জনের বেশি মানুষ নদীতে পড়েন।
তাদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি। নৌকা এবং হেলিকপ্টার নিয়ে নিখোঁজ ছয়জনের খোঁজে বিস্তৃত পরিসরে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা চলছে। এছাড়া আরও দুজনকে পানি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//