আন্তর্জাতিক
বাইডেনের হাত-পা বাঁধা ভিডিও পোস্ট করে তোপের মুখে ট্রাম্প
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা একটি ভিডিও নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেনের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের অভিযোগ, আসছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক সহিংসতা উষ্কে দিচ্ছেন ডোনাল ট্রাম্প।
গত শুক্রবার নিজের মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে ওই ভিডিওটি পোস্ট করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যাপশন বোলছে-গত বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডে ওই ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে। ওইদিন নিউ ইয়র্কে নিহত এক পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ট্রাম্প।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় মোড়ানো দুটো ট্রাক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের জন্য সমর্থন প্রকাশ করতে দুটো ট্রাকই পুলিশের পতাকায় মোড়ানো ছিল। দ্বিতীয় ট্রাকে লেখা ছিল ‘ট্রাম্প ২০২৪’ এবং গাড়িটির পেছনে বাইডেনের হাত-পা বাঁধা ছবি আাঁকা ছিল।
ট্রাম্পের পোস্ট করা ওই ভিডিওর প্রতিক্রিয়ায় বাইডেনের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের মুখপাত্র মাইকেল টাইলার গণমাধ্যমকে বলেন, “ট্রাম্প প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন। এখন সময় এসেছে জনগণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার।”
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ক্যাপিটল হিলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা যে দাঙ্গা সৃষ্টি করেছিলো তার উল্লেখ করে মাইকেল টাইলার আরও বলেন, “সেই সব পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানুন, যারা ৬ জানুয়ারি আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছিলেন।”
এদিকে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরও মুখ বন্ধ করে রাখেনি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে তার নির্বাচনী প্রচার শিবিরের মুখপাত্র স্টেভেন চিউং বলেন, “রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটি পিকআপ ট্রাকের পেছনে ছবিটি লাগানো ছিল। ডেমোক্র্যাট এবং দলটির পাগলরা কেবল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য সহিংসতার ডাকই দেয়নি; তারা আসলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে।”
আসছে নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মত মুখোমুখি হতে চলেছেন বলে বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে। জো বাইডেন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্র বিপর্যয়ে পড়বে- এমনই একটি চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প।
সম্প্রতি একটি নির্বাচনী সমাবেশে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, আমি নির্বাচিত না হলে ‘রক্তগঙ্গা’ বইবে। আর অভিবাসীদের নিয়েও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের দেশের রক্ত বিষাক্ত করছে’।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি মামলা থাকলেও বিভিন্ন জনমত জরিপে ট্রাম্পের সমর্থন বেশি দেখা যাচ্ছে। আসছে নভেম্বরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেতে ট্রাম্প চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রাথমিক বাছাইয়ে (প্রাইমারি ও ককাস) যথেষ্টসংখ্যক ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//