চট্টগ্রাম
টেকনাফ সীমান্তে অর্ধশতাধিক মর্টার শেল বিস্ফোরণ
সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) চলমান সংঘাত ব্যাপক আকার ধারণ করেছে । ওপার থেকে ভেসে আসা গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্ক বিরাজ করছে বাংলাদেশিদের মাঝে।
গতকাল শনিবার (৬ এপ্রিল) থেকে আজ রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে থেমে থেমে প্রায় অর্ধশতাধিকের বেশি মর্টারশেলের বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে বলে ধারণা সীমান্তে বসবাসকারী বাসিন্দাদের।
এ দিকে বিস্ফোরণের শব্দে নাফ নদীর এপারে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন, সাবরাং ইউনিয়ন, শাহপরীরদ্বীপ, সেন্টমার্টিন, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম থেকে শোনা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্ব দিকে মিয়ানমারের মংডু শহরের উত্তরে বলিবাজার, শিলখালী, নাকপুরা, হাস্যুরাতা ও নাখ্যংদিয়া থেকে মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে। নতুন করে ওই সব এলাকায়ও সংঘাত ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এসব এলাকায় আরাকান আর্মি ও সে দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘাত হয়। সীমান্তের এসব এলাকায় আজকে দিনভর অর্ধশতাধিকের বেশি বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে এসেছে।
টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবসায়ী লালু মাঝি বলেন, বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কয়েকদিন যাবৎ কি এক অদ্ভুত আওয়াজ ভেসে আসে, বাড়িতে ঘুমাইতে পারি না।
শাহপরীরদ্বীপের জেলে আব্দুর রহমান বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে কিছুটা কম মনে হচ্ছে গোলাগুলির শব্দ। তবে কিছুক্ষণ পর পর থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাসিন্দা তরকারি ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, দুপুর থেকে বেচাকেনার মধ্যে আছি। মাঝেমধ্যে চমকে উঠি। কি বিস্ফোরণের শব্দ। কাজেই মন বসে না আতঙ্কে।
সাবরাং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবুল ফয়েজ বলেন, এই গোলাগুলির শেষ কোথায় জানি না। থেমে থেমে শুধু বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। অন্যদিন একটু ঘন ঘন বিস্ফোরণ ঘটলেও আজকে সকাল থেকে থেমে থেমে বিকট শব্দ ভেসে আসছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, দুই মাসের বেশি মিয়ানমারের সংঘাতে সীমান্তের লোকজন নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবারও বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে।
সংঘাতের কারণে সরকারি বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সর্বশেষ গেলো ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩ জন সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন আরও ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য। তারা সবাই নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হেফাজতে রয়েছেন। এর আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/