চট্টগ্রাম
কুবি উপাচার্য একটি আমদানিকৃত পঁচা মাল: মানববন্ধনে কুবি শিক্ষক
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আবদুল মঈনকে অষ্ট্রেলিয়া থেকে ‘আমদানিকৃত পঁচা মাল’ বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান। এ সময় অষ্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের বাঙ্গালি কমিউনিটিতে কুবি উপাচার্য ক্যাসিনো মঈন নামে পরিচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (৩০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনে এসব বলেন তিনি।
শিক্ষকদের উপর উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে হামলা, মারধর এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসময়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরের মদদে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও অছাত্ররা শিক্ষকদের উপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে তাদের অধিকাংশই হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার জেলখাটা দাগি আসামি। তাদের এ হামলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতা এবং জীবন শংকায় ভুগছেন।
মানববন্ধনে নৃবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হক বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় একটা সন্ত্রাসী সেন্টার। সেখানে সন্ত্রাসীরা মিটিং করে। কখন কাকে হামলা করবে। আপনারা উপাচার্য কিংবা প্রক্টরের রুমের সামনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই তা বুঝতে পারবেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস-উল- ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আজ আক্রান্ত। যখন থেকে ওমর সিদ্দিকী প্রক্টরের (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব নিয়েছেন তখন থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। যার নিরাপত্তা দেয়ার কথা তিনিই যদি আঘাত করেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কার কাছে নিরাপদ সেটা প্রশ্ন থেকে যায়। গেলো ২৮ তারিখ তিনিই আমাকে প্রথম আঘাত করেছেন। জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে আমরা কীভাবে ক্লাস নিবো। তাই এই ভিসি, ট্রেজারার দায়িত্বে থাকা কালীন আমরা আর ক্লাসে ফিরে যাবো না।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, এই উপাচার্যের যখন নিয়োগ হয়, আমি রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে ছিলাম। তখন থেকেই তিনি বহিরাগত ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। তার অপকর্মের কারণে আমি ২ মাস পর পদত্যাগ করি। আমরা সাতটি দাবি উপস্থাপন করেছি কিন্তু তিনি কোন কর্ণপাত করেননি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন ভিসি ও সন্ত্রাসীরা কীভাবে শিক্ষকদের উপর হামলা করেছেন। প্রক্টর নিজেই হামলার মদদ দিয়েছেন। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদককে ঘুষি মেরে তিনি ভেতরে প্রবেশ করেছেন। ২৮ তারিখে হামলায় শিক্ষকরা আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হত্যা মামলার প্রধান আসামি এবং বর্তমানে উপাচার্যের লালিত সন্ত্রাসী খুনি বিপ্লব এই মানববন্ধন চলাকালীন ৪ বার এখান দিয়ে যাওয়া আসা করেছে। প্রতিবারই আমরা শঙ্কিত ছিলাম। ক্লাস একাডেমিক কোনো কার্যক্রমে কোনো শিক্ষক অংশগ্রহণ করবে না৷ উপাচার্য পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা চিন্তা করবেন না। একটু ধৈর্য ধরেন। করোনা পরবর্তী সংকট আমরা যেভাবে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার মাধ্যমে কাটিয়ে উঠেছি এবারও সেটাই হবে।
এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। যেমন, ছাত্র সমাজ জেগে উঠো, শিক্ষক কেন নির্যাতিত? শিক্ষকের গায়ে হাত কেন, প্রশাসন তুমি নিরব কেন? শিক্ষকের গায়ে হাত কেন, প্রশাসন জবাব চাই! চাকরি দে! নয়তো ভার্সিটি চিবিয়ে খাবো; আমদানীকৃত পঁচা মাল, আজরাইল মুক্ত ক্যাম্পাস চাই; সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থান কোথায়? পিতৃতুল্য শিক্ষকের গায়ে হাত কেন? জবাব চাই জবাব চাই, ডিক্টেটর ভিসি জবাব চাই; ছাত্র সমাজ জেগে উঠো শিক্ষক কেন নির্যাতিত? সন্ত্রাসীদের কালো হাত গুড়িয়ে দাও ভেঙে দাও; মেরুদণ্ড গড়ার কারখানা কেন আজ সন্ত্রাস গড়ার কারখানা? এমন অসংখ্য প্ল্যাকার্ড নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, গেলো ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে উপাচার্য আবদুল মঈনের নেতৃত্বে এবং সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় বেশ কয়েকজন বহিরাগত এবং সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী শিক্ষকদের উপর হামলা করেন। এতে নারী শিক্ষকরাও আহত হন বলে জানা যায়। যার প্রতিবাদে শিক্ষকরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপাচার্যকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এবং উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অপসারণের দাবিতে সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/