বাংলাদেশ
৭মাসে রেলপথে ১০৫২ দুর্ঘটনায় নিহত ১৭৮
গেলো ৭ মাসে রেল পথে ছোট-বড় এক হাজার ৫২টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন এক হাজার ১৭০ জন।
আজ শনিবার (৩০ জুলাই) সেভ দ্য রোড এক প্রতিবেদনে জানায়, এসব দুর্ঘটনার অধিকাংশই ঘটেছে গেটকিপারদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে।
সেভ দ্য রোড এর বিবৃতিতে জানানো হয়, রেলের দুই হাজার ৮৫৬টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে অবৈধ এক হাজার ৩৬১টি অর্থাৎ প্রায় ৪৮ শতাংশই অবৈধ। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে ৩৩টি ক্রসিং কে বা কারা ব্যবহার করছে, তা কেউ জানে না। এছাড়া বৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোর মধ্যে ৬৩২টিতে গেটকিপার নেই। অবৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোয় যেমন গেটকিপার নেই, নেই কোনো সুরক্ষা সরঞ্জামও।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রেলপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬টি, এতে আহত হয়েছেন ৫২ জন, নিহত হয়েছেন ১৪ জন। ১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেলপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪১টি, এতে আহত হয়েছেন ১১১ জন, নিহত হয়েছেন ২৭ জন। ১ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২২টি, এতে আহত হয়েছেন ১৮৬ জন, নিহত হয়েছেন ৩১ জন।
১ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১২টি, এতে আহত হয়েছেন ১৬৬ জন, নিহত হয়েছেন ৪২ জন। মে মাসে ২১২টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ২২১ জন, নিহত হয়েছেন ২৩ জন। জুন মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯৭টি, আহত হয়েছেন ১৭২ জন, নিহত হয়েছেন ১৭ জন এবং জুলাই মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪২টি। ঈদুল আজহার ঈদযাত্রাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় জুলাইয়ে আহত হয়েছেন ২৩২ জন, নিহত হয়েছেন ২৪ জন।
২৪টি জাতীয় দৈনিক, ১৮টি ইলেকট্রনিক্স গণমাধ্যম, ২২টি নিউজ পোর্টাল এবং সারাদেশে সেভ দ্য রোড-এর বিভিন্ন শাখার স্বেচ্ছাসেবীদের তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে কমপক্ষে ১০ লাখ এবং আহতদের সরকারি অর্থায়নে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন সেভ দ্য রোডের নেতারা। একইসঙ্গে রেলওয়ের বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণে সেভ দ্য রোড-এর পক্ষ থেকে ৭টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
এগুলো হলো-
১. অবৈধ ক্রসিংগুলোর সমাধান করা।
২. দুর্নীতিবাজ রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।
৩. সরকারি লেজুড়ভিত্তিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নামে নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে রেলকে গণমুখী বাহন হিসেবে প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করা।
৪. যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ রেলওয়েকে বেসরকারি খাত থেকে মুক্ত করে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে পরিচালনার সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৫. সচিব-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের আরাম-আয়েশ বাতিল করে সারাদেশে রেলওয়ের উন্নয়নে নিবেদিত থাকা।
৬. যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর নজরদারি বাড়ানো এবং সারাদেশের সব স্থানে কার্যকর সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা।
৭. প্রতি ৩ কিলোমিটারে পর্যবেক্ষণ করার জন্য রেলওয়ে পুলিশ-এর বিশেষ বুথ স্থাপন করা।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ