বাংলাদেশ
ফুলছড়ি-সাঘাটা আসনে উপনির্বাচনে ভোটের হাওয়া
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনটি শূন্য ঘোষণা করার পর এখনও তফসিল ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। নির্বাচনী মাঠে সবার আগে ছক কষে প্রচারণায় নেমেছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে জাতীয় পাটি প্রস্তুতি নিচ্ছে ভোটে অংশ গ্রহণে। আর বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা চেয়ে আছেন দলের হাইকমান্ডের দিকে।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনয়নে ভুল করলে আসনটি জাপার (এরশাদ) হাতে চলে যেতে পারে। কেননা এ নির্বাচনে বিএনপির অংশ গ্রহন না করারই সম্ভবনা বেশী।
এ আসনে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফজলে রাব্বী মিয়া। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর তিনি আসনটি আওয়ামী লীগকে উপহার দেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মনোনীত হন।
এ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, মরহুম ফজলে রাব্বীর মেয়ে ফারজানা রাব্বী ও ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ ও যুবলীগ নেতা সুশীল চন্দ্র সরকার। জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফারুক আলম সরকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান সোহাগ এবং সাঘাটা উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতি এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জুর নামও শোনা যাচ্ছে।
সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। এ আসনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রয়েছে। জাতীয় পাটি আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্য দ্বন্দ্ব কাজে লাগিয়ে হারানো আসন ফিরে নিতে চান। তবে প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের ইমেজ ব্যবহারের পাশাপাশি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন তাঁর মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী। তিনি ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে তাঁর বাবার সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে কাজ করেছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাবার সম্মানে তাঁকেই নৌকা প্রতীক দেবেন। তাঁর বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চান। নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার ভোটার তাঁর আত্মীয়স্বজন। তাই নির্বাচনে তিনি বাড়তি সুবিধা পাবেন।
আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন। তাঁর নেতৃত্বে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো অনেক সুসংগঠিত। ফলে তাঁর নেতৃত্বে আস্থাশীল হয়ে বিচ্ছিন্ন ও ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের মধ্যে নবউদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তিনি মূল ধারার নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন।
মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন। আর নির্বাচিত হলে প্রথমেই উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বাড়াতে বালাসী-বাহাদুরাবাদ টার্নেল নির্মাণে উদ্যোগী হবেন। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে সাঘাটা-ফুলছড়ি রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করবেন। চরাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের জন্য বিশেষ প্রকল্প নিয়ে মানুষের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। সেই সঙ্গে গাইবান্ধা শহর থেকে সোনাতলা হয়ে মোকামতলা পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ এবং বোনারপাড়া রেলজংশন আধুনিকায়নসহ দুই উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করবেন।
ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
তিনি বলেন, এর আগেও তিনি দু'বার দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। আর এবার তিনি দলের মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
সুশীল চন্দ্র সরকার জানান, দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে আনা এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরও শক্তিশালী করতে তিনি দলের মনোনয়ন চান।
বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান সোহাগ বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে, তাহলে তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রার্থী হবেন। তবে সংশয় তো থেকেই যায়। সুষ্ঠু ভোট তো হবে না। সারা মাস ঠিক থাকবে, ভোটের আগের রাতে সব শেষ করে ভোট মেরে নেবে।
এ আসনে জাতীয় পাটির হয়ে কাজ করেছেন অ্যাডভোকেট এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ভোট নিয়ে সংশয় আছে। তা ছাড়া ইভিএমে ভোট হলে পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, সেটাও বিবেচ্য বিষয়। তাই পার্টির সিদ্ধান্ত হলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুইটি ধারায় বিভক্ত। দুই উপজেলায় পৃথক কমিটি ছিল। একটি মরহুম ফজলে রাব্বী সমর্থিত আরেকটি মাহমুদ হাসান সমর্থিত। এখনো এ দ্বন্দ্ব বিদ্যমান।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ