বাংলাদেশ
দেশের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য : জিএম কাদের
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের দায় এড়াতে পারে না সরকার। এমন বক্তব্যে প্রতিবেশি বন্ধু দেশ ভারতকেও অস্বস্তিতে ফেলেছে। দেশের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য। বললেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু জিএম কাদের এমপি।
আজ শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের নেতা ও বিশিষ্টজনদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, হিন্দু শাস্ত্র মতে শিষ্টের লালন আর দুষ্টের দমনের জন্যই শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব। কিন্তু এখন দেশে চলছে দুষ্টের লালন আর শিষ্টের দমন। এখন শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন না, এখন মুসলিমরাও সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়ে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। এখন সৎ মানুষ হলে চাকরি মেলে না, আদর্শবান হলে ব্যবসা করতে পারছেন না। বেঁচে থাকার তাগিদেই এখন দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাচ্ছেন সবাই। দেশে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে। দুর্নীতির সুনামিতে ভেসে যাচ্ছে আদর্শ আর ন্যায়পরায়ণতা। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠনে সরকার উদ্যোগ নিতে পারে। জাতীয় পাটি আইনের খসড়া পেলে বিবেচনা করে সংসদে তুলতে পারবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার পাশাপাশি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সব ধর্মের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার কারণে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে গালাগাল দেয়। কিন্তু পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রেখে বর্তমান সরকার সংবিধানে এটি অপরিবর্তনযোগ্য করেছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতিবছর দেশ থেকে লাখো কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। জবাবদিহির অভাবে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। কেউ দুর্নীতির সমালোচনা করলে সরকার তাকে ষড়যন্ত্রকারী ও রাষ্ট্রবিরোধী মনে করে। সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করতে চাইলে সমালোচনা শুনতে হবে এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা উঠলে সরকারের পক্ষ থেকে এটিকে হাস্যকর হিসেবে উড়িয়ে দেয়া হয়। ফলে সারাবিশ্বের কাছে আমরা মিথ্যেবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হচ্ছি। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মানুষ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। আবার প্রতিনিধি পছন্দ না হলে ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন করার অধিকার চায়। প্রজাতন্ত্র মানে দেশের মালিকানা সাধারণ মানুষের। দেশের মালিকানা সাধারণ মানুষের না থাকলে এবং জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে কখনোই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, এ বছর সরকারকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা ঋণের সুদ দিতে হচ্ছে। ২/১ বছরে আসলসহ সুদের টাকা পরিশোধ করতে হবে। তখন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়তে পারে দেশ। বিশেষজ্ঞদের আশংকা, তখন শ্রীলংকার মত দেউলিয়া হতে পারে দেশ। তিনি বলেন, সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। ১২ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স আর মুনাফার ৪২ হাজার কোটি টাকা সমন্বয় করলেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হতো না। দেশের মানুষের কষ্ট হতো না, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সকল পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে পড়েছে। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে মেগা প্রকল্প তৈরি করছে, কিন্তু মানুষ বাঁচাতে কোনো উদ্যোগ নেই। মানুষ যদি খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকতে না পারে তাহলে মেগা প্রকল্পের সুবিধা কে ভোগ করবে? তিনি হতদরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের জন্য রেশনিং ব্যাবস্থা চালু করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন দে ও যুগ্ম দফতর সম্পাদক সমরেশ মন্ডল মানিকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, একেএম আশরাফুজ্জামান খান, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নির্মল দাস, এম এ রাজ্জাক খান, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম বাসেত, গোলাম মোস্তফা, মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুল আজিজ, মাহমুদ আলম, কেন্দ্রীয় নেতা, আলাউদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান, আনোয়ার হোসেন আনু, কাজী মামুন, রমজান আলী ভূঁইয়া।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ