অপরাধ
প্রতারকের খপ্পরে শাওন, রিমান্ডে প্রতারক
প্রতারকের খপ্পরে পড়ে প্রায় ৩২ হাজার টাকা খোয়ালেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. রবিউল ইসলাম নামের এক প্রতারককে একদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল ইসলাম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামি রবিউলকে আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, এক ব্যক্তি নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে শাওনকে ফোন করে জানান, নুহাশ পল্লীর উন্নয়ন বাবদ অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অঙ্কের একটি ফান্ড এসেছে, যা বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। শাওন ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অন্য প্রান্ত থেকে নিজেকে উপ-সচিব পরিচয় দিয়ে ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা দিতে বলেন। সেই ফাঁদে পা দেন শাওন। টাকা দিয়ে প্রতারিত হন।
এ প্রসঙ্গে শাওন গণমাধ্যমকে জানান, যিনি আমাকে ফোন করলেন, তিনি খুবই সিস্টেমেটিক ওয়েতে কথা বলেছেন। প্রথমে বললেন, আমি জাতীয় সংসদের মাননীয় ডেপুটি স্পিকার সাহেবের পিএস বলছি। স্যার একটু আপনার সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর ফোনের ওপাশ থেকে বললেন, আমি জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলছি। আপনি কেমন আছেন? এর পরমুহূর্তেই তিনি বললেন, তোমাকে তুমি করে বলি মা। তোমার মা তো আমার কলিগ ছিল। সুতরাং আমার আর কোনো সন্দেহ হয়নি।
এই অভিনেত্রী আরও জানান, তিনি (প্রতারক) আমাকে এত সুন্দর করে বুঝালেন, কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার একটি এনজিও নুহাশপল্লীতে বেড়াতে গিয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদের নামে তুমি একটা মিউজিয়াম করতে চাও, এটা জেনে তারা একটা অনুদান দিয়েছে। এই বিষয়েই তোমার সঙ্গে আমি কথা বলতে চাই। হুমায়ূন আহমেদের কথা বললে যে আমি অন্যকিছু ভাবতে পারি না, সেই ব্যাপারটা রিড করেই তিনি কথাগুলো আমাকে বলেছেন। আমার কাছে অবিশ্বাস হওয়ার মতো তখন কিছু মনে হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বিকাশে টাকাটা পাঠানোর পরও তারা আমাকে ফোন করেন। তারা বলেন, পরশু আমরা নুহাশপল্লী যাব। আগামীকাল নিশ্চিত করব কয়জন যাব। খাবারের কী কী ম্যানু হবে, তিনি সেটাও ঠিক করে দেন। এর পরদিন কোনো ফোন আসে না। তখন আমরা কল করতে থাকি। সে সময় থেকেই ফোন বন্ধ। তখন আমার মনে হয়, আমি মনে হয় কোনো প্রতারকের পাল্লায় পড়েছি।
পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে নুহাশ পল্লীর ম্যানেজার বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন। এরপর ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তদন্ত করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রবিউল ইসলাম নামের ওই প্রতারককে গত বুধবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা চারটি সিমকার্ড জব্দ করে ডিবি।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, প্রতারক প্রয়াত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওনের কাছে ফোন করে নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে জানান যে, নুহাশ পল্লীর উন্নয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে একটি বড় ফান্ড এসেছে। উক্ত ফান্ড বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের মোবাইল নাম্বার প্রদান করেন এবং উক্ত নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলেন।
মেহের আফরোজ শাওন ওই মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে উপ-সচিব পরিচয়ে একজন কথা বলেন এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ট্যাক্স বা ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করতে বলেন।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ