বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে জ্বালানি সহায়তা চাওয়া হবে : পররাষ্ট্রসচিব
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে দেশটির কাছে জ্বালানি সহায়তা চাওয়া হতে পারে। এ জন্য দেশটির উদ্বৃত্ত জ্বালানি আনতে দিল্লির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি চাইবে ঢাকা। বললেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
আজ সোমবার (২৯ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রসচিব।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আগামী মাসের শুরুতে ভারত সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারত জ্বালানি খাতে আমাদের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। আমরা তাদের সহায়তা চাইব, কেন না আমরা একটু নাজুক আছি। তাই তাদের উদ্বৃত্ত থাকলে তাদের কাছ থেকে জ্বালানি আনার জন্য চুক্তি করতে চায় ঢাকা। দীর্ঘমেয়াদি এ চুক্তি নির্ভর করবে ভারতের উদ্বৃত্ত জ্বালানির পরিমাণের ওপর।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমরা পার্শ্ববর্তী দেশ বা প্রতিবেশী দেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি। আমরা আশা করছি এ ব্যাপারেও তাদের সহযোগিতা পাওয়া যেতে পারে।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, নেপালের সঙ্গে চুক্তি এখন হচ্ছে না। তবে সেই অপশনটাও আমাদের আছে। সুতরাং সবগুলো অপশন আমরা চালু রাখতে চাই। পানিবিদ্যুৎ বা ত্রিপুরাসহ ভারতের পূর্বাঞ্চলে যে সমস্ত রাজ্য আছে, সেগুলোতে যদি তাদের উদ্বৃত্ত, থাকে তাহলে আমরা ব্যবস্থা করতে পারি। এর জন্য যে গ্রিড বা কানেক্টিভিটি প্রয়োজন হবে, তা সময়সাপেক্ষ। রাজনৈতিক বোঝাপড়া থাকলেও প্রস্তুতির জন্য সময় লাগবে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যু তোলা হবে।
তিনি বলেন, বিষয়টা একবার সিন করা হয়েছিল। সুতরাং আমরাতো অবশ্যই চাইব তারা (ভারত) তাদের ফর্মালিটিগুলো শেষ করে এটা ঘোষণা করবে। প্রত্যাশা আমাদের সব সময় থাকবে। সুতরাং আমরাও তুলব বিষয়টা।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, চার দিনের সফরে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লি যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এটা একটা রাষ্ট্রীয় সফর। এটা দুইটা বন্ধু দেশের মধ্যে সবসময় হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। এটা আমাদের দিক থেকে একটা ভিজিট। দুই দেশের যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক আছে, সেটার বিভিন্ন ইস্যুগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আগে যেসব বিষয় বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। যেগুলোতে অগ্রগতি হয়েছে, সেগুলোও আমরা মূল্যায়ন করে দেখব এবং সামনে আরও কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা হতে পারে, সে বিষয়টাও আমরা দেখব। সুতরাং সেই অর্থে কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা আছে এমন নয়। সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমরা বছরে একবার বসলে সব বিষয়ে আলোচনা করি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে গঙ্গার পানি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, এবার গঙ্গা নিয়ে আলোচনা হবে নিশ্চয়ই। এমনিতে গঙ্গার ইস্যুটা রেইসজড হয়েছিল। সুতরাং এখন দুই পক্ষ টেকনিক্যাল লেভেলে আলাপ-আলোচনা করবে, এরকমই আমার ধারণা।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা ইস্যুতে যে এলওসি (লেটার অফ ক্রেডিট) আছে, সেটার ব্যাপারে অনেক দিন ধরে সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নিয়ে মোটামুটি আমাদের টিম ওখানে গেছেন, তারা দেখে এসেছেন। সুতরাং এখন পর্যন্ত ফরওয়ার্ড মুভমেন্ট আমরা পাইনি।
বিপ্লব আহসান
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ