বাংলাদেশ
রওশন এরশাদকে আর চায়না জাপা
রওশন এরশাদের পরিবর্তে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। বিরোধীদলীয় নেতার পদে জি এম কাদেরকে মনোনয়ন দিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠিও দিয়েছে দলটি।
বর্তমানে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দলের কাউন্সিল ডাকার এক দিনের মধ্যেই জাপার সংসদীয় দল বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে সংসদেও ঠিকমত আসতে পারছেন না। এজন্য সংসদীয় দল এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠক করেছি আমরা। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্তের কথা স্পিকারকে জানিয়েছি। ওই বৈঠকে ২৬ জন এমপির মধ্যে ২৩ জন উপস্থিত ছিলেন এবং একজন টেলিফোনে তার সম্মতির কথা জানিয়েছেন।
এর আগে গেলো বৃহস্পতিবার বিকেলে জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংসদ অধিবেশনে মাগরিবের নামাজের বিরতির সময় চুন্নু, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান, সালমা ইসলাম, ফখরুল ইমামসহ ৬/৭ জন সংসদ সদস্য দলের সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের কথা স্পিকারকে জানান।
জাপা চিঠি দিলেও এ ব্যাপারে অনুমোদন দেয়ার এখতিয়ার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর। তবে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনও সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সাধারণত সেটি অনুমোদন করেন। সংরক্ষিত আসনসহ সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য সংখ্যা ২৬ জন।
দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব পুরনো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নানা বৈঠকে দুজন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এরশাদের গড়া দল জাতীয় পার্টি ভেঙেছে বেশ কয়েকবার। দলটির সাবেক মহাসচিবদের নেতৃত্বে আলাদা কয়েকটি দল এখনও সক্রিয় রয়েছে।
তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর দলে কর্তৃত্ব নিয়ে কাদের ও রওশনের বিরোধে দলটি আবার ভাঙনের মুখে পড়েছিল। তখন সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতা হয়। সেই সমঝোতায় রওশনকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি দলে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদ দেয়া হয়। আর কাদের দলের চেয়ারম্যানের পদ রাখার পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা হন। অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা রওশন গেলো বছর দেশে ফিরে দল নিয়ে নিজের ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন। বুধবার তার নামে আসা চিঠিতে আগামী নভেম্বর মাসে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়।
এরপর জি এম কাদেরের পক্ষে তার প্রেস সচিব বিবৃতি দিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টিতে চেয়ারম্যান ছাড়া আর কারও কাউন্সিলর ডাকার এখতিয়ার নেই। রওশনের ওই পদক্ষেপ ‘অবৈধ’। রওশন গেলো কিছুদিন ধরেই অসুস্থ। ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) টানা ৮৪ দিন থাকার পর গেলো বছর থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন তিনি। ছয় মাস পর গেলো জুন মাসে দেশে ফিরে সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দেন রওশন। ওই সময় রাজধানীর একটি হোটেলে মতবিনিময় সভা করে তিনি অভিযোগ করেন, অসুস্থতার সময়ে দলীয় নেতাদের কেউ তার খবর নেননি। এরপর ৪ জুলাই তিনি আবারও ব্যাংকক যান।
বিআ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ