পরামর্শ
শিশুর অতিরিক্ত জেদ যেভাবে সামলাবেন
প্রতিটি শিশুই আলাদা। একেকজনের বেড়ে ওঠার পরিবেশ, আচরণ, মানসিক বিকাশ খুব স্বাভাবিকভাবেই আলাদা হবে। শিশুর বয়স যখন দুই বছরের কাছাকাছি চলে আসে, তখন তার বদমেজাজী হয়ে উঠা বা অল্পতেই রেগে যাওয়া খুব কমন একটি ব্যাপার। আপনার যদি দুই বছর বা তার কাছাকাছি বয়সের কোনো বাচ্চা থেকে থাকে, তাহলে ‘টেরিবল টু’ টার্মটির সাথে আপনি হয়তোবা পরিচিত। হুট করেই কি আপনার বাচ্চা রেগে যাচ্ছে, অতিরিক্ত জেদ করছে? কীভাবে সামলাবেন এই পরিস্থিতি? চলুন জেনে নেই আজ।
টেরিবল টু কি স্বাভাবিক বিষয়?
দুই বছর বা তার কাছাকাছি বয়সের বাচ্চাদের কিছু আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়। এটি শিশুর বিকাশের একটি স্বাভাবিক পর্যায়। এই বয়সী কোনো বাচ্চার ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন, সব কিছুতেই ‘না’ বলা ও ছোটখাটো বিষয়ে চিৎকার করা– এই বিষয়টিকেই শিশু বিশেষজ্ঞরা ‘টেরিবল ২’ নামে আখ্যায়িত করেছেন। এই ধাপটি খুব বেশিদিন স্থায়ী হয় না। তাই যারা বাচ্চার এই ফেজ নিয়ে চিন্তিত, তারা কীভাবে এই পরিস্থিতি সহজে সামলে উঠবেন তা নিয়েই আজকের আর্টিকেলে কিছু টিপস শেয়ার করবো।
এই ফেজ কখন শুরু হয়?
সাধারণত ১৮ মাস শুরু হওয়ার পর থেকে বাচ্চাদের মধ্যে টেরিবল ২ এর কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। বেশিরভাগ শিশু ২ থেকে ৩ বছর বয়সের মধ্যে আক্রোশ ও বিরোধীতা প্রদর্শন করতে শুরু করে। এই লক্ষণগুলো সাধারণত ৩/৪ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে পারে। অনেক বাবা-মা এই সময়ে বেশ হতাশ হয়ে যান, তবে মনে রাখতে হবে বাচ্চাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিরই একটি অংশ এটি।
টেরিবল টু এর লক্ষণ কী?
এর কমন লক্ষণ হলো যে আপনার বাচ্চাকে আপনি যা করতে বলবেন তাতে সে রিঅ্যাক্ট করবে, অকারণেই জেদ করবে। বাবা-মায়েরা খুব সহজেই এই আচরণগত পরিবর্তন চিহ্নিত করতে পারেন। জামাকাপড়/ ডায়পার চেঞ্জ না করতে চাওয়া, খেলনা ছুড়ে ফেলা, জোরে কান্নাকাটি, ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন, খেতে বা ঘুমাতে না চাওয়া, এমনকি বেশি রেগে গেলে কামড়ানো, আঘাত করা ইত্যাদি টেরিবল টু এর সাধারণ লক্ষণ। এই সময়ে বাচ্চারা নিজের মনের ভাব পুরোপুরি বোঝাতে পারে না, তাই খুব সহজেই তাদের মেজাজের পরিবর্তন ঘটে।
কীভাবে সামলাবেন?
১. ধৈর্য ধরুন
বাচ্চা যতই জেদ করুক না কেন, আপনাকে মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। কারণ আপনিও যদি সেই সময়ে রেগে যান তাহলে বাচ্চা ভয় পাবে কিংবা আরও বেশি অ্যাগ্রেসিভ বিহেভ করবে। তাই ধৈর্য ধরতে হবে, এই সময়টা কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হবে না। বাচ্চা জেদ করলে ইগনোর করুন এবং অন্যদিনে তার মাইন্ড ডাইভার্ট করার ট্রাই করুন।
২. পজেটিভ থাকুন
সন্তানের সাথে সবসময় ইতিবাচক আচরণ করা উচিত। এতে সে পজেটিভ মাইন্ড নিয়ে বড় হয়। ভালো কিছু করলে প্রশংসা করা ও ভুল করলে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেয়া ইতিবাচক আচরণের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো আপনার সন্তানকে শেখাবে কোন আচরণ গ্রহণযোগ্য ও কোনটি নয়। ছোট থেকেই সে পজেটিভ মেন্টালিটি নিয়ে বড় হবে।
৩. তাকে চয়েস অপশন দিন
বাচ্চার মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এটা বোঝাতে মাঝেমধ্যে তাকে ‘চয়েস অপশন’ বা যেকোনো দু’টি থেকে একটি বেছে নিতে বলুন। তাকে প্রায়োরিটি দিন, তবে এই বয়সে শিশুকে কোনো কিছুর উপর নিয়ন্ত্রণ দিবেন না, সিদ্ধান্ত আপনারই নিতে হবে।
৪. রুটিন সেট করুন
এই বয়সে বাচ্চারা নিয়ম-কানুন মেনে চলতে চায় না। কিন্তু বাবা-মায়ের উচিত তার রুটিন সেট করে দেয়া। খাওয়ার সময় খাওয়া, ঘুমের সময় ঘুম ও খেলার সময় খেলা। বাচ্চাকে অর্গানাইজড ওয়েতে বড় করার পারফেক্ট সময় এটি। রুটিনে যখন বাচ্চা অভ্যস্ত হয়ে যাবে, তখন আপনারই সুবিধা হবে।
৫. কাজে উৎসাহী করে তুলুন
শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে দুই বছর বয়সে বাচ্চারা তাদের ফিলিংস কন্ট্রোল করা শিখতে পারে যদি তাদের প্রোপার ট্রেইনিং দেয়া যায়। বাচ্চা যখন ভালো কাজ করবে, সঠিক আচরণ করবে; তখন তাকে পুরস্কৃত করুন ও বাহবা দিন। তাহলে সে এই কাজে আরও উৎসাহী হয়ে উঠবে। খেলনা গুছিয়ে রাখা, গাছে পানি দেয়া, নিজের হাতে খাওয়া, কাপড় ভাজ করে রাখা- এই ধরনের কাজে তাকে উৎসাহ দিন। এতে তার অস্থিরতা কমবে।
কখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিবেন?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টেরিবল টু স্টেজ বাচ্চার জন্য একদম স্বাভাবিক বিষয় এবং আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা রয়েছে। তবে বাচ্চার কিছু অস্বাভাবিক আচরণ, যেমন – রাগের বসে মাথায় আঘাত করা, নিজেকে আঁচড় দেয়া বা দেওয়ালে আঘাত করা, ঘরের জিনিসপত্র ভেঙে ফেলা ইত্যাদি যদি বার বার করতে থাকে, তাহলে দ্রুত একজন চাইল্ড নিউরোলজিস্টের সাথে কনসাল্ট করুন। আপনার শিশুর যদি ডেভেলপমেন্টাল ডিলে থাকে, কমান্ড না ফলো করে, সেই সাথে চঞ্চলতা অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যায়, সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
টেরিবল টু আসলে বাচ্চার দৈহিক ও মানসিক বিকাশের একটি স্বাভাবিক ধাপ। তবে, বাচ্চার অতিরিক্ত জেদ প্রশ্রয় না দিয়ে ধৈর্য ধরুন। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানকে কোয়ালিটি টাইম দেয়া, স্ক্রিন টাইম কমিয়ে আনা, অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলার সুযোগ করে দেয়া। প্রতিটি শিশু যেন সুস্থ-স্বাভাবিক পারিবারিক পরিবেশে বড় হতে পারে, সেটিও আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আজ তাহলে এই পর্যন্তই। ভালো থাকুন।
জেএইচ
পরামর্শ
মুখে ঘা দূর করতে মেনে চলুন ৫ উপায়
খাওয়া দাওয়ার সময় বা কথা বলার সময়ে মুখে ঘা হলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দীর্ঘদিন সহ্য না করাই উত্তম। এই সমস্যা কিন্তু একসময় মুখে আলসারেরও লক্ষণ হতে পারে। মুখের আলসারকে সামান্য ঘা ভেবে অবহেলা করলেই বিপদে পড়বেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মুখের ভিতরে আলসার হতে পারে। অনেকে আবার ব্রেসেস পড়েন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে এই সমস্যা হয়। শরীরে ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক, ফোলেটের ঘাটতির কারণেও মুখের ঘা থেকে আলসার হতে পারে।
মুখে ঘা হলে কিছুদিনের জন্য ঝাল, টক জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। না হলে মুখে জ্বালা অনুভূত হবে। মুখে ঘা হলে মুক্তি পেতে পারেন ৫ উপায়ে ।
১) মুখের ঘা কমাতে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে আরাম পাবেন। দিনে তিন থেকে চার বার করলে ব্যথা ও ঘা দুটোই কমে আসবে।
২) ঘায়ের জায়গায় সামান্য মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন, ভালো উপকার পাবেন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর মধু লাগালে সুফল পাবেন।
৩) ঘায়ের জায়গায় বিশুদ্ধ নারিকেল তেল লাগিয়ে রাখলেও বেশ আরাম পাবেন।
৪) যে কোনও ঘায়ের জন্য ভালো প্রাকৃতিক ঔষধ হতে পারে হলুদ। মুখে যে জায়গায় ঘা হয়েছে, সেই স্থানে হলুদ বাটা লাগিয়ে রাখতে পারেন। কিছু দিন ব্যবহার করলেই ঘায়ের তীব্র জ্বালা-যন্ত্রণা কমে আসবে।
৫) বেকিং সোডা ঘা সারাতে দারুণ উপকারী একটি জিনিস। এক কাপ পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা কমে যাবে। এছাড়া বেকিং সোডার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। সেই পেস্ট ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখলেও বেশ উপকার পেতে পারেন।
জেডএস/
পরামর্শ
হাড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য শিশুর খাদ্যতালিকায় যা রাখবেন
সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় থাকেন সব বাবা-মাই। শিশু কী খাবে, কতটা খাবে আর কখন খাবে- এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা নিয়ে তারা সারাক্ষণ অস্থির। শিশু রোজ যা যা খাচ্ছে, তার থেকে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছচ্ছে কি না এটি জানাও খুব জরুরি। বাড়ন্ত শিশুকে হাড়ের পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য সুষম আহারই দিতে হবে। আর বিশেষ করে শিশুর খাদ্যতালিকায় রোজ ক্যালশিয়াম রাখতেই হবে। রোজ কোন কোন খাবার তালিকায় রাখলে শিশুর ক্যালশিয়ামের অভাব হবে না, তা জেনে নিন।
দুধ : সুষম আহারের মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় দুধের কথা। এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপিকা সুর জানাচ্ছেন, দুধের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়। শিশুকে রোজ নিয়ম করে দুধ খাওয়ানো উচিত। তবে যদি দুধে অ্যালার্জি থাকে বা দুধ হজম না হয়, তা হলে পনির, দই, ছানা, মাখন এ সব রাখুন তার খাদ্যতালিকায়।
মটরশুঁটি : মটরশুঁটির দানায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। যা তার হাড়ের পুষ্টিতে বিশেষ সহায়ক। সাধারণত, শীতের সব্জি এটি, তাই শীতেই তার খাবারে মটরশুঁটি রাখতে হবে। ব্রোকোলিও তাই। অনেক শিশুই ব্রোকোলি খেতে চায় না। সে ক্ষেত্রে ব্রোকোলি দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দিন। কয়েক টুকরো চিকেন সিদ্ধ দিয়ে দিন তাতে। অল্প করে মাখন দিয়ে গরম স্যুপ, সোনামুখ করে খেয়ে নেবে খুদে।
পিনাট বাটার : পিনাট বাটারেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম আছে। খেতে ততটা সুস্বাদু নয় বলে হয়তো শিশু খেতে চাইবে না। মায়েরা সে ক্ষেত্রে পাউরুটির মুচমুচে টোস্ট বানিয়ে তার মধ্যে পিনাট বাটার দিয়ে দিন। গরম আটার রুটি রোল করে ভেতরে পিনাট বাটার দিয়ে শিশুকে প্রাতরাশে দিন। সঙ্গে দিন ফ্রুট স্যালাড। ফল ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নুন ও গোলমরিচ দিয়ে দিন। ফল এমন ভাবে সাজিয়ে দিন যে দেখেই খেতে চাইবে শিশু।
আমন্ড বাটার : বাড়িতে আমন্ড বাটারও এনে রাখতে পারেন। সাদা মাখন না দিয়ে পাউরুটিতে আমন্ড বাটার মাখিয়ে দিন। আমন্ড বা কাঠবাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যালশিয়াম। ১/৩ কাপ কাঠবাদামে প্রায় ২৬৪ মিলিগ্রাম মতো ক্যালশিয়াম মেলে। সন্তানকে দুধের সঙ্গেও দিন কয়েক টুকরো কাঠবাদাম। দুধ-কর্নফ্লেক্স খেলে উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
মাছ : মাছে প্রচুর ক্যালশিয়াম আছে। শিশুর হাড়ের বৃদ্ধির দিকে বিশেষ নজর দিতে হলে তার খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন মাছ। কাতলা, ভেটকি, কই মাছে ভাল পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম কাতলা মাছ খেলে ৫৩০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে, ১০০ গ্রাম ভেটকিতে প্রায় ৪৮০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। ৫০ গ্রাম করে, অর্থাৎ দিনে দু’পিস মাছও যদি খুদে খায়, তা হলেও রোজের ক্যালশিয়ামের অনেকটাই পূরণ হবে।
ফলের রস : টাটকা ফলের রসও দিন শিশুকে। এক গ্লাস কমলালেবু বা মুসম্বির রস থেকে ৬০ মিলিগ্রামের মতো ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে। প্রাতরাশে যে দিন দুধ দেবেন না, সে দিন ফলের রস দিন। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাবার দিলে শিশুর অরুচি হবে না। মনে রাখতে হবে, শিশুকে একদম চা-কফি বা নরম পানীয় দেওয়া চলবে না। কারণ ক্যাফিন ক্যালশিয়াম শোষণে বাধা দেয়। তখন যতই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান না কেন, তাতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। বেশি লবণ দেয়া খাবার, বেশি তেল ও মশলা দেওয়া খাবার শিশুকে দেয়া চলবে না।
জেএইচ
পরামর্শ
কিডনিতে পাথর হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে কারা?
অফিসে সারাদিন বসে যারা কাজ করেন, তাদের বিপত্তি বেশি। একেই সারাক্ষণ বসে থেকে পেট-কোমরের মেদ বাড়ে। তার উপরে শরীরচর্চার অভ্যাস নেই, পানি কম খাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধতে থাকে কম বয়স থেকেই। চিকিৎসকেরা বলেন, কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম বড় কারণ হল পানি কম খাওয়া। তা ছাড়া স্থূলত্ব, বিশেষ কিছু ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়া, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও কিডনিতে পাথর জমতে পারে। এখন জেনে নিন, এ ক্ষেত্রে কাদের ঝুঁকি বেশি।
কিডনি শুধু শরীর থেকে রেচন পদার্থই বার করে না, তার ভূমিকা আরও বেশি। যেমন— রক্তে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে কিডনি। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতেও এর ভূমিকা আছে। তা ছাড়া, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করা, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখা। কিডনিতে পাথর জমলে ভয়ের খুব বেশি কারণ না হলেও দ্রুত সেই পাথর শরীর থেকে বার না হলে সমস্যা বাড়তে পারে।
ঝুঁকিতে কারা?
১) দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি খেতে হবে।
২) বেশি প্রাণিজ প্রোটিন যারা খাচ্ছেন, তাদেরও ঝুঁকি বেশি। খুব বেশি তেলমশলা দিয়ে কষিয়ে মাংস বা মাছ, ডিম প্রায় রোজ খেতে শুরু করলে তখন বিপদ বাড়বে। এমনকি, বাইরের খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়বে।
৩) অতিরিক্ত উদ্বেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা থেকে ভ্যাসোপ্রেসিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মূত্রের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়। ফলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে।
৪) বাতের সমস্যা থাকলেও ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে দেখা গিয়েছে কিছু ক্ষেত্রে।
৫) রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে, খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিগড়ে গেলে ঝুঁকি বাড়বে।
৬) খাদ্যে লবণ তথা সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৭) বেশি মাত্রায় মদ্যপানও ঝুঁকি বাড়াতে পারে। নরম পানীয়, বেশি মিষ্টি দেয়া প্যাকেটজাত পানীয় বেশি খাওয়াও বিপদের কারণ হতে পারে।
কেএস/