জাতীয় পার্টি
দেশকে এগিয়ে নিতে কোটা পদ্ধতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে: জিএম কাদের
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে। আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কোটা পদ্ধতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোটা পদ্ধতি বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯ এর ১,২,৩ এর সম্পূর্ণ পরিপন্থি। সংবিধান সশোধন করে এটাকে বৈধ করতে পারবে না। বলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে গাজীপুরের সাগরসৈকত কনভেনশন হলে গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মৌলিক অধিকার সম্পর্কিত ২৯ এর ১,২,৩ ধারা পরিবর্তন করার ক্ষমতা সংবিধানে দেয়া হয়নি। এদেশের মানুষ হাজার বছর ধরে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। আমাদের মধ্যে ডিভাইড অ্যান্ড রুল করে বৈষম্য করা হয়। কিছু সংখ্যক লোককে সুবিধা দিতে বেশির ভাগ মানুষকেই বঞ্চিত করা হয়। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনে বাঙালিরা ভূমিকা রেখেছে শুধু বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে। পরবর্তীতে পাকিস্তানীরাও আমাদের সাথে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা আমাদের দারিদ্রসীমার নিচে থাকতে বাধ্য করেছিল। ফলে প্রথমে স্বাধিকার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতা-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। বর্তমানে আওয়ামী লীগ আবার ডিভাইড অ্যান্ড রুলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। তারা সমাজকে বিভক্ত করেছে। শাষক শ্রেণি এই দেশকে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক সম্পত্তি মনে করে। তারা আইনের ঊর্ধ্বে এবং পছন্দ মতো আইন তৈরি করে।
আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুরের সাগরসৈকত কনভেনশন হলে গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শাসক শ্রেণির কাছে প্রথম শ্রেণির নাগরিক হচ্ছে পিউর আওয়ামী লীগ ও তাদের লাঠিয়াল বাহিনী। সরকারের কাছে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হচ্ছে ভেজাল আওয়ামী লীগ। আর তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হচ্ছি আমরা সাধারণ জনগণ। বাংলাদেশে আমাদের কোনো অধিকার নেই? আমাদের সন্তানদের চাকরি পাওয়ার অধিকার নেই? আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই? প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকদের সার্ভ করার জন্য যে প্রশাসন দরকার তার জন্য অনুপযুক্ত মানুষকেও বসিয়ে দিতে চায় সরকার। আর এজন্যই কোটা পদ্ধতি সৃষ্টি করা হয়েছে। যেহেতু সংবিধান কোটা পদ্ধতি সমর্থন করেনা- তাই, আশঙ্কায় আছি আইনের বাস্তবায়ন কিভাবে করা হয় তা দেখার জন্য। আমরা আশাবাদী হতে চায়। বৈষম্য বিরোধী এই আন্দোলনের অনুপ্রেরণা হচ্ছে আমাদের জাতীয় শহীদ মিনার। আমাদের শহীদ মিনার হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আত্মাহুতির প্রতীক।
এসময় গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা ভালো নয়। শুধু আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই এই কথার সাথে একমত। দেশের সাধারণ মানুষ অর্থের অভাবে ডিমও খেতে পারছে না। সাধারণ মানুষ অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে আর অন্যদিকে মানুষের আয় কমছে। ডলারের সাথে আমাদের টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। আগে এক ডলারে আমদানী পণ্য ৭০ থেকে ৮০ টাকায় কেনা যেতো, এখন সেই পণ্য কিনতে ১২৫ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হচ্ছে। জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে তাই মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমছে। ডলার সংকটের কারনে আমদানী কমিয়ে আনা হয়েছে। রফতানি ও প্রবাসী আয় কমছে, তাই আমাদের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। তাই সারাবিশ্ব বলছে এই দেশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য করা যাবে না। বিদেশীদের যারা ব্যবসা করছে তারা ব্যবসা করতে পারছে না, তাই বিদেশী বিনিয়োগও কমে গেছে। বাজারে জীবন রক্ষাকারী ইনসুলিন পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে ভেজাল অসুধে সয়লাব। অসুধের কাঁচামাল আসছে না, তাই ভেজাল অসুধে কয়েকটি বাচ্চা মারা গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন ঝুকির মধ্যে পড়েছে। ভেজাল এনেস্থেশিয়া দেয়া হচ্ছে। সরকার তার দায়িত্ব পালন করছে না। এখন আইএমএফ থেকে যে টাকা এসেছে তাতে কিছু সময়ের জন্য আমাদের রিজার্ভ বাড়বে।
এএম/
জাতীয় পার্টি
জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনুস আমাদের অহংকারের ধন: জিএম কাদের
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও তিন বাহিনী প্রধানের বৈঠকে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম চূড়ান্ত হওয়ায় স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
বুধবার (৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনুস আমাদের অহংকারের ধন। ক্ষুধা ও দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার যে ধারণা তিনি প্রবর্তন করেছেন তা সারা বিশ্বের সামনে এক অনন্য মডেল। বিশ্ববাসীর কল্যাণে ড. ইউনুসের প্রতিটি কর্মকাণ্ড ঈর্ষনীয় সাফল্য পেয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিকল্প হয় না। ড. ইউনূসের নেতৃত্বকে সহায়তা দিতে জাতীয় পার্টি প্রস্তুত।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে ড. ইউনূস সফল হবেন । তার নেতৃত্বেই ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা শুরু হবে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খুনাখুনি, চুরি, ডাকাতি ও হাইজ্যাকের খবর আসছে। দেশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে আছে। স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া জাতির মাঝে আতঙ্ক থাকবে কেন?
উল্লেখ্য, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এএম/
জাতীয় পার্টি
আটক ৬ ছাত্রনেতাকে মুক্তি দিতে হবে: জি এম কাদের
বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আবলছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
সোমবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সংহিসভাবে মোকাবিলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েক দিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এদিকে সাধারণ ছাত্ররা মনে করছেন, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখান করেছেন। দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার নামে তাদের ও তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইনসম্মত মনে করি না।
জাপার চেয়ারম্যান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছেন। হেলিকপ্টার এবং বহুতলবিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর থেকে এবং ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি করা হয়েছে। যে কারণে বাবা-মায়ের কোলের মধ্যে ও ঘরের মাঝে খেলাধুলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার ঘরের ভেতরে কাজ করতে করতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিণী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে।
একইভাবে অসংখ্য নিরীহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এ ধরনের গুলির উদ্দেশ্য কী ছিল? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় কী সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিণী ও নিরীহ পথচারী, তারা কী সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আন্দোলন দমাতে দেদারছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ মানুষের মাঝে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেন আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা। প্রতিটি হতাহত এবং সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে আমরা বিচার চাচ্ছি।
এএম/
জাতীয় পার্টি
গ্রেপ্তার হলেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ
জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বুধবার (২৪ জুলাই) রাত ১টার দিকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিবি প্রধান হারুন-উর-রশিদ।
ডিবি প্রধান জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে উসকানি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্যারিস্টার পার্থের বিরুদ্ধে। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। এ জন্য তাকে তুলে নেয়া হতে পারে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় ২০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২২০৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সহিংসতা নাশকতার ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার (২৪ জুলাই) ৭৩ মামলায় ১৭৫৮-কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর আজ ১২৮ মামলায় ৪৫১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ২০১ জনকে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির এ কর্মকর্তা।
এসি//