আন্তর্জাতিক
মাঝ আকাশে খুলে গেলো চাকা, অতঃপর বিমানে যা ঘটলো
আগে বলা হতো উড়োজাহাজ ভ্রমণ মানেই নিরাপদ যাত্রা। সম্প্রতি বেশ কটি দুর্ঘটনার কারণে বিশ্বজুড়ে আকাশ পথে সফর ক্রমশ আতঙ্কের অন্য নাম হয়ে উঠেছে। কখনও মাঝ আকাশে টার্বুলেন্সের ফাঁদ, জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়া, নয়তো বিমানের দরজা খুলে যাওয়া, নয়তো কোথাও নিছক গাফিলতি। এবার তেমনই এক ঘটনার ছবি ধরা পড়ল মার্কিন এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে।
সোমবার(৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ডেনভার বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে টেকঅফ করেছিল ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ওয়ান জিরো জিরো ওয়ান ফ্লাইটটি। তবে টেকঅফের কয়েক সেকেন্ড পরই মাঝ আকাশে বোয়িং সেভেন ফাইভ সেভেন টু জিরো জিরো উড়োজাহাজটির একটি চাকা খুলে মাটিতে আছড়ে পড়ে। সেই ঘটনার ভিডিও এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
টেক অফের পর উড়োজাহাজের চাকা খসে যাওয়ার ঘটনায় আশঙ্কা তৈরি হয়।চাকা ছাড়া কীভাবে নিরাপদে উড়োজাহাজটি নিজের গন্তব্যস্থলে অবতরণ করবে? পরে অবশ্য এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, উড়োজাহাজটি নিরাপদে ডেনভার বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। উড়োজাহাজে থাকা ক্রুসহ সব যাত্রী নিরপদে আছেন। হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
চাকা পড়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা যায়, টেকঅফ করার কয়েক মুহূর্ত পরই পেছনের সারির থেকে একটি চাকা পড়ে যায় নিচে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, উড়োজহাহাজের পেছনে দু’দিকে একাধিক চাকা থাকায় অবতরণের সময় ব্যালেন্সে কোনও সমস্যা হয়নি। তাই বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করতে পেরেছিল। তবে এই ক্ষেত্রে বড়সড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি ছিলো বলে জানায় এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের এক মুখপাত্র জানান, বিমান থেকে পড়ে যাওয়া চাকাটি পরে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে কী কারণে এমন একটি ঘটনা ঘটল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
একাধিক দুর্ঘটনা আর কেলেঙ্কারিতে বেশ আলোচিত-সমালোচিত বিশ্বের বৃহত্তম মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের দুইটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় বিমানের ৩৪৬ জন আরোহী নিহত হন।
পাঁচ বছর আগের ইন্দোনেশিয়া এবং ইথিওপিয়াতে সংঘটিত ওই দুই দুর্ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বোয়িং কোম্পানি। বড় ধররে সংকটে পড়ে যায়। প্রায় এক বছর সারা বিশ্বে এই উড়োজাহাজের চলাচল বন্ধ ছিল।
সম্প্রতি বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন উড়োজাহাজের ওই দুই দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করেছে সংস্থাটি। রোববার(৭ জুলাই) মার্কিন অঙ্গরাজ্য টেক্সাসে জমা দেওয়া আদালতের নথি মতে, ম্যাক্স মডেলের উড়োজাহাজকে ফ্লাইট পরিচালনার সনদ দেওয়ার সময় ‘যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতারণা করার চক্রান্তের’ অভিযোগে, দায় স্বীকার করেছে বোয়িং।
মার্কিন বিচার বিভাগের সঙ্গে বোয়িংয়ের চুক্তি অনুযায়ী, এই দুই দুর্ঘটনায় প্রতারণার ফৌজদারি অভিযোগ মেনে নিয়েছে উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। দায় স্বীকার করায় বোয়িংকে মোটা অংকের জরিমানা করা হয়েছে। ২৪ কোটি ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানাও দিতে হচ্ছে বোয়িং কোম্পানিকে। আর এরই মাঝে ফের বোয়িং বিমানের এমন সমস্যা দেখা দিল।
চলতি বছরের মার্চ মাসেও এই একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। বোয়িং ত্রিপল সেভেন টু জিরো জিরো উড়োজাহাজটি স্যান ফ্রান্সিস্কো থেকে টেকঅফ করেছিল জাপানের ওসাকা যাওয়ার উদ্দেশে। পরে সেই উড়োজাহাজটির পথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে সেই বিমানের জরুরি অবতরণ করানো হয়েছিল। ওইসময় উড়োজাহাজটি থেকে চাকা পড়ে গিয়ে স্যান ফ্রান্সিস্কো বিমানবন্দরের পার্কিংয়ে পড়ে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি।
এমআর//
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//