জাতীয়
২১ সমঝোতা চুক্তি-৭ ঘোষণাপত্রে সই করেছে বাংলাদেশ ও চীন
‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশদারিত্বে’ উন্নীত হতে ২১টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি এবং ৭টি ঘোষণাপত্র সই করেছে বাংলাদেশ ও চীন। এর মধ্যে ২টি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে।
চীনের স্থানীয় সময় বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে বেইজিংয়ের ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’ এ সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে এসব চুক্তি-সমঝোতা এবং ঘোষণাপত্র সই হয়।
চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের আগে গ্রেট হলে দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন লি কিয়াং এবং শেখ হাসিনা।
সকালে গ্রেট হলে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। এখানে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অভ্যর্থনা জানিয়ে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও দুই দেশের মধ্যেকার ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতাসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রী চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই, ঘোষণাপত্র সই এবং দলিল হস্তান্তর প্রত্যক্ষ করেন।
অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং সেক্টরে সহযোগিতা, ব্যবসা-বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামো উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপণায় সহায়তা, ৬ষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চায়না মৈত্রী সেতু, কৃষি পণ্য রপ্তানি, দুই দেশের জনগণের সঙ্গে জনগণের কানেকটিভিটি সহযোগিতা বিষয়ে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই এবং দলিল হস্তান্তর হয়।
চুক্তি-সমঝোতা স্মারক ও দলিল সই:
১. ডিজিটাল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ সহায়তা শক্তিশালী করতে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
২. ব্যাংকিং এবং ইন্সুরেন্স নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে চায়না ন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রেগুলেটরি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনএফআরএ) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক।
৩. বাংলাদেশ থেকে চীনে তাজা আম রপ্তানির জন্য উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত (ফাইটোস্যানিটারি) উপকরণ বিষয়ে একটি প্রটোকল সই করে দুই দেশ।
৪. অর্থনৈতিক উন্নয়ন নীতি সহায়তা ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে দুই দেশ।
৫. বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহায়তা বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশ ও চীন।
৬. ডিজিটাল অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার একটি সমঝোতা স্মারক সই।
৭. বাংলাদেশে প্রকল্পে চায়না-এইড ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি’ বিষয়ে আলোচনার একটি সাইনিং অব মিনিটস (কার্যবিবরণী) সই হয়।
৮. চীনের সহায়তায় ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চায়না মৈত্রী সেতু সংস্কার প্রকল্পের চিঠি বিনিময় হয়।
৯. নাটেশ্বর আর্কিওলজিকাল সাইট পার্ক প্রকল্পে চায়না-এইড কনস্ট্রাকশনের ফিজিবিলিটি স্টাডি বিষয়ে চিঠি বিনিময় হয়।
১০. চীনের সহায়তায় নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু প্রকল্প বিষয়ে চিঠি বিনিময় হয়।
১১. মেডিকেল সেবা এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ে সহযোগিতা শক্তিশালী করতে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
১২. অবকাঠামোগত সহযোগিতা জোরদারে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
১৩. গ্রিন অ্যান্ড লো-কার্বন উন্নয়ন বিষয়ে সহযোগিতা বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে দুই দেশ।
১৪. বন্যার মৌসুমে ইয়ালুজাংবু (ব্রহ্মপুত্র) নদীর হাইড্রোলজিক্যাল তথ্য বাংলাদেশ দেওয়ার বিধি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়।
১৫. চীনের জাতীয় রেডিও এবং টেলিভিশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
১৬. পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক সই করে চীনের মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি) এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)।
১৭. চীনের মিডিয়া গ্রুপের (সিএমজি) সঙ্গে অপর আরেকটি সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)।
১৮. একটি চুক্তি সই করে চিনহুয়া নিউজ এজেন্সি এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)।
১৯. অপর আরেকটি চুক্তি সই করে চিনহুয়া নিউজ এজেন্সি এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)।
২০. একটি সমঝাতা স্মারক নবায়ন করে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
২১. টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
৭ ঘোষণাপত্র:
১. চীন-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে যৌথ ফিজিবিলিটি স্টাডির সমাপ্তি ঘোষণা।
২. চীন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি চুক্তির আলোচনা শুরুর ঘোষণা।
৩. ডিজিটাল কানেকটিভিটি প্রকল্পের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন সমাপ্তি ঘোষণা।
৪. ডাবল পাইপ লাইনের মাধ্যমে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের ট্রায়াল শেষ করার ঘোষণা।
৫. রাজশাহী ওয়াসা সারফেইস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট শুরুর ঘোষণা।
৬. শানদং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই।
৭. বাংলাদেশে লুবান ওয়ার্কশপ নির্মাণের ঘোষণা।
জেএইচ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ