বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার ২১ বছর আজ
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টুইন টাওয়ারে হামলার (নাইন-ইলেভেন হামলা) ২১ বছর পূর্তি আজ। এটি ছিল শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ একটি হামলা। ২০০১ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রে চারটি যাত্রীবাহী প্লেন ছিনতাই করে সেগুলো দিয়ে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দু’টি আকাশচুম্বী ভবনসহ মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে। এসব হামলার ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। এ হামলার ঘটনার ভয়াবহতায় কেবল মার্কিন নাগরিকরাই নয়, চমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব।
হামলা হয়েছিল যেভাবে
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ছিল মঙ্গলবার। ছিনতাইকারীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে পূর্ব আমেরিকার আকাশপথে উড্ডয়নরত চারটি প্লেন একইসাথে ছিনতাই করে। তারপর নিউইয়র্ক আর ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আঘাত হানার জন্য বিশাল ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসাবে বিমানগুলোকে তারা ব্যবহার করে।
দু’টি বিমান দিয়ে হামলার পর বিধ্বস্ত করানো হয় নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ভবনে। প্রথম প্লেনটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে। এর কিছু সময় পর সকাল ৯টা ৩ মিনিটে দ্বিতীয় প্লেনটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয়।
হামলার পর দু’টি ভবনেই আগুন ধরে যায়। ভবন দু’টির ওপরতলায় বহু মানুষ আটকা পড়েন। শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। সুউচ্চ এই দু’টি টাওয়ার ভবনই ছিল ১১০ তলা করে। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে দু’টি ভবনই বিশাল ধুলার ঝড় তুলে মাটিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে তৃতীয় প্লেনটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশাল এই সদর দপ্তর পেন্টাগন ভবন।
এরপর, সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ প্লেনটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভেনিয়ার একটি মাঠে। ছিনতাই হওয়া চতুর্থ প্লেনটির যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পর সেটি পেনসিলভেনিয়ায় বিধ্বস্ত হযয়ে যায়। ধারণা করা হয়- ছিনতাইকারীরা চতুর্থ প্লেনটি দিয়ে মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে আঘাত হানতে চেয়েছিল।
ভয়াবহ এসব হামলায় সব মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২ হাজার ৯৭৭ জন। তবে এই হিসাবের মধ্যে ১৯ জন ছিনতাইকারী নাম অন্তর্ভুক্ত নেই। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন নিউইয়র্কের মানুষ। চারটি প্লেনের ২৪৬ জন যাত্রী এবং ক্রুদের প্রত্যেকেই নিহত হন। টুইন টাওয়ারের দু’টি ভবনে মারা যান ২ হাজার ৬০৬ জন। পেন্টাগনের হামলায় প্রাণ হারান ১২৫ জন।
নাইন ইলেভেনের সেই ভয়াবহ হামলায় সর্বকনিষ্ঠ নিহতের বয়স ছিল দুই বছর। তার নাম ক্রিস্টিন লি হ্যানসন। বাবা-মায়ের সাথে সে একটি বিমানের যাত্রী ছিল। নিহত সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তির নাম রবার্ট নর্টন। তার বয়স ছিল ৮২ বছর। তিনি ছিলেন অন্য আরেকটি বিমানের আরোহী এবং নিজের স্ত্রী জ্যাকুলিনের সাথে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন।
হামলার দিন প্রথম প্লেনটি যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত করে, তখন ভেতরে আনুমানিক ১৭ হাজার ৪০০ জন মানুষ অবস্থান করছিলেন। নর্থ টাওয়ারের যে অংশে বিমান আঘাত করে, তার ওপরের কোনো তলার মানুষই প্রাণে বাঁচেননি। তবে সাউথ টাওয়ারে যেখানে বিমান আঘাত করে, তার ওপরের অংশ থেকে ১৮ জন প্রাণে বেঁচে যান।
হতাহতের মধ্যে ৭৭টি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মানুষ ছিলেন। নিউইয়র্ক শহরে যারা প্রথম ঘটনাস্থলে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় দৌঁড়ে যান, তাদের মধ্যে মারা যান ৪৪১ জন। হামলায় হাজার হাজার মানুষ আহত হন, যারা পরে নানা ধরনের অসুস্থতার শিকার হন। যেমন দমকলকর্মীদের অনেকে বিষাক্ত বর্জ্যের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
উগ্র মতাদর্শের আল-কায়েদা আফগানিস্তান থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন এই গোষ্ঠী মুসলিম বিশ্বে সংঘাত সৃষ্টির জন্য আমেরিকা এবং তার মিত্র দেশগুলোকে দায়ী করেছিল।
ছিনতাইকারী ছিল মোট ১৯ জন। তাদের মধ্যে তিনটি দলে ছিল পাঁচজন করে এবং তারা টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে বিমান হামলা চালায়। আর যে বিমানটি পেনসিলভেনিয়ায় বিধ্বস্ত হয়, তাতে ছিনতাইকারী দলে ছিল চারজন।
প্রত্যেক দলে একজন ছিনতাইকারীর বিমানচালক হিসাবে প্রশিক্ষণ ছিল। এই ছিনতাইকারীরা তাদের পাইলটের ট্রেনিং নেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লাইং স্কুলে। ১৫ জন ছিনতাইকারী ছিলেন সৌদি আরবের। দু’জন সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) এবং মিসর ও লেবাননের ছিলেন একজন করে।
অনন্যা চৈতী
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ