অপরাধ
কৌশলে অর্থ আদায়ের জন্য হুমকি ব্যারিস্টার সুমনকে
সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হককে (ব্যারিস্টার সুমন) ‘হত্যার পরিকল্পনায়’ জড়িত থাকার অভিযোগে সোহাগ মিয়া (২৭) নামের এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার জন্য তার (সায়েদুল হক) জীবন ঝুঁকিতে আছে বলে গল্প সাজিয়েছিলেন সোহাগ মিয়া জানায় পুলিশ।
বুধবার ( ১০ জুলাই ) বিকেলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
আটক সোহাগ মিয়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছে, সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হককে ‘হত্যার পরিকল্পনার’ কাহিনি ছিল আটক সোহাগের সাজানো গল্প। তিনি এই কাহিনি তৈরি করে সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন হওয়ার পাশাপাশি তার কাছ থেকে অর্থ উপার্জন করতে চেয়েছিলেন। গেল মঙ্গলবার ( ৯ জুলাই ) সিলেট মহানগর এলাকা থেকে সোহাগ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আক্তার হোসেন আরও বলেন, আটকৃত সোহাগ গেল ২৮ জুন রাতে অজ্ঞাত পরিচয়ে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায়কে হোয়াটসঅ্যাপে কল করে। ওসির কাছে সংসদ সদস্য সায়েদুল হকের ফোন নম্বর চান। ওসি তার কাছে নম্বর কেন প্রয়োজন, সেটি জানতে চান। উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার জরুরি কথা আছে। ওসি সংসদ সদস্যের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে ফোন নম্বর দেননি। কিছুক্ষণ পরই তিনি হোয়াটসঅ্যাপে একটি খুদে বার্তা পাঠান এবং পরে তা মুছে (ডিলিট) দেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি আরেকটি খুদে বার্তা পাঠান। সেখানে লেখা ছিল, ‘ব্যারিস্টার সুমনের কিছু শত্রু আছে, যারা তার ক্ষতি করতে পারে।’ এটিও পরে তিনি মুছে দেন।
পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন বলেন, শুরু থেকে অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির সন্ধানে কাজ করি। তার পরিচয়ও শনাক্ত করি। ওই ব্যক্তিই আটক হওয়া সোহাগ। তাকে আটক করতে পুলিশ দেশের নানা স্থানে অভিযান চালায়। কিন্তু অভিযুক্ত সোহাগ দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে থাকেন। অবশেষে গতকাল দুপুরে সিলেটের মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সোহাগ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি ২০১১ সালে কাজের সন্ধানে বিদেশে যান। সেখানে সাত বছর অবস্থানের পর ২০১৮ সালে দেশে ফিরে আসেন। এরপর এলাকার ১০ থেকে ১২ জনের কাছ থেকে পর্তুগাল নেয়ার কথা বলে জনপ্রতি ৮ থেকে ১০ লাখ করে টাকা নেন। কিন্তু তাদের বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হয়ে তিনি ভারতে পালিয়ে যান। প্রায় এক বছর সেখানে থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। দেশে আসার পর আর্থিক অভাব-অনটনে পড়েন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রথমে হ্যাকার হওয়ার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ইন্টারনেটে হ্যাকিং বিষয়ে ধারণা নিয়ে ডার্ক ওয়েবসাইট ব্যবহার শুরু করেন।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, আটক সোহাগের ধারণা ছিল, জীবন হুমকিতে আছে বললেই সংসদ সদস্য তার কাছে দুর্বল হয়ে পরিকল্পনাকারীদের নাম জানতে চাইবেন। তখন তিনি কৌশলে অর্থ আদায় করবেন। সোহাগ নিজেই বিষয়টি পুলিশকে নিশ্চিত করেছে। তার বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করবে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ঘটনার পর গেল ২৯ জুন সন্ধ্যার পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সংসদ সদস্য সায়েদুল হক। জিডিতে তিনি দাবি করেন, চুনারুঘাট থানার ওসির কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, তাকে হত্যার জন্য চার থেকে পাঁচজনের অজ্ঞাতনামা একটি দল মাঠে নেমেছে। এ অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ঘটনায় চুনারুঘাট থানা-পুলিশও একটি জিডি করে। হবিগঞ্জ পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও এ ঘটনার তদন্ত করা হয়। হুমকির ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সায়েদুল হকের নিরাপত্তায় একজন গানম্যান নিয়োজিত করা হয়।
এএম/
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ