বাংলাদেশ
নির্বাচনী ব্যবস্থা আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ : ড. কামাল
নির্বাচনী ব্যবস্থা আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ। দেশে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের আপত্তি সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ১৫০ আসনে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের জন্য এক ভয়ঙ্কর অশনি সংকেত। জাতি এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। বললেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ।
আজ শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে গণফোরাম আয়োজিত বিদ্যমান রাজনীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল বলেন, দেশ বর্তমানে এক গভীর রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত, কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী সরকারের গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের ফলে দেশে চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস-তেল, ডিজেলের মূল্য নিয়ে সরকারের অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতা এবং লুটেরাদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে জনগণের অর্থনৈতিক দুরবস্থা আজ চরমে। সাধারণভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। খুন, হত্যা, গুম, ধর্ষণ এবং বিরোধীদলের ওপর দমন-পীড়ন, মিথ্যা মামলা ইত্যাদি কারণে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের তহবিল রক্ষা করতে হবে। কর্তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে কৃষক-শ্রমিকদের অর্থ রক্ষা হচ্ছে না। ৩ হাজার কোটি টাকা টেলিফোন বিভাগ তহবিলে জমা দেয়নি। সবাই মিলে এই রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হবে। রাষ্ট্রে যারা দায়িত্বে আছেন তারা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন। দেশের টাকা দুর্নীতি হয়ে পাচার হচ্ছে। রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের তহবিল রক্ষার পূর্ব শর্ত জনগণের ঐক্য।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বড় শক্তিশালী দলগুলো মাস্তান ও কালো টাকা ব্যবহার করে। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমরা সাধারণ নাগরিকরা হচ্ছি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই আমরা এসব শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারি না বা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে পারি না। মাস্তান এবং কালো টাকার হাতে জিম্মিদশা থেকে আমরা নিজেদের মুক্ত করব। আমরা যাতে সম্মিলিতভাবে প্রকৃত জাতীয় উন্নয়নের কর্মসূচি গ্রহণের উদ্যোগ নিতে পারি। এই জাতীয় উন্নয়নের কর্মসূচি মানবসম্পদ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও উন্নয়নে সাহায্য করবে। বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায্য করবে।
সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মেঘ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ