জাতীয়
কোটা সংস্কার আন্দোলন: হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে যা বললো জাতিসংঘ
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ দমাতে নীরিহ শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত শক্তি প্রদর্শন, দুইশো জনের বেশি মানুষের নিহতের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, আ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এসব দেশ ও সংগঠনগুলো চাইছে, সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় জাতিসংঘ নিজেই পুঙ্খানুপুঙ্খ, কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করুক অথবা, নিরপেক্ষ তদন্তে বাংলাদেশ সরকারকে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘের সদরদপ্তরে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়েও বিষয়টি উঠে আসে। ওয়াশিংটন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এবিষয়ে জানতে চান খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী।
তার প্রশ্নটি ছিলো, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্র-বিক্ষোভে দমন-পীড়ন চলছে। ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ কি জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছিল? স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের নামে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত কোনো তদন্তে জাতিসংঘ সহায়তা করবে? নাকি জাতিসংঘ নিজেই নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত করবে?
জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘দেখুন, আপনার প্রশ্নে বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। বিশ্বের যে কোনো দেশের সরকার যে কোনো ব্যাপারে সহায়তার অনুরোধ করলে অমরা সবসময় সহায়তার হাত বাড়াতে প্রস্তুত থাকি। আমাদের মাথায় থাকে ওই দেশের সরকারকে কীভাবে সর্বোচ্চ সহায়তা দেয়া যায়। তবে আপানি জানেন, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের একটি আইন প্রণয়নকারী সংস্থার কাছ থেকে ম্যান্ডেট পাওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক নিহত হওয়ার পাশাপাশি অর্ধশত আহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে আরেকটি প্রশ্ন করেন মুশফিকুল ফজল আনসারী।
তার প্রশ্নটি ছিল, ‘আপনি যখন গাজায় নিহত সাংবাদিকদের কথা বলছিলেন তখন বলতে হচ্ছে সাম্প্রতিক দিনগুলিতে বাংলাদেশে অন্তত তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং কেউ জানেন না তারা কোথায় আছেন? আমার সংবাদ সংস্থায় কাজ করতেন আমার সহকর্মী এস খান। তবে তিনি এখন কোথায় আছেন কেউ জানেন না…….
মুশফিকের প্রশ্ন শেষ করতে না দিয়ে তাকে থামিয়ে দেন জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এবং বলেন, ‘বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় সরাসরি গুলিবর্ষনের নিন্দা জানিয়েছি। আমরা বলতে চাই বাংলাদেশে বা বিশ্বের অন্য কোনো দেশের সরকারকে জনগণের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার রক্ষা করতে হবে এবং সাংবাদিকদের স্বাধীন ও নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদের কাজ করার অধিকার রক্ষা করতে হবে।
এর আগে,অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার ও বিক্ষোভের সময় আটক শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও হতাহতের নিরপেক্ষ তদন্তের আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি দেয় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
ওই খোলা চিঠিতে সংগঠনটির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড সহিংসতা বন্ধ, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং বিক্ষোভের সময় ২০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জরুরি ও দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।
অন্যদিকে, কোট সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ ও সহিংসতার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের সিনেটর ও সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান বেঞ্জামিন লুইস কার্ডিন এবং নিউজার্সির সিনেটর কোরি অ্যান্থনি বুকার।
এমআর//
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ