বাংলাদেশ
দেশ থেকে টাকা পাচারে বিদেশের সরকারও উৎসাহিত করে: মোমেন
দেশ থেকে টাকা পাচারের ক্ষেত্রে বিদেশের সরকারও এনকারেজ করে। বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে কাজের অনুমতিপত্র বা নাগরিকত্ব দেয়ার প্রলোভন দেখানো হয়, যা টাকা পাচারে উৎসাহিত করে। বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
গেলো বুধবার (৫ অক্টোবর) ভয়েস অব আমেরিকার ওয়েবসাইটে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সাক্ষাৎকার প্রকাশ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ভয়েস অব আমেরিকা বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মোমেন।
তিনি বলেন, বিদেশের সরকারের কাছে আমরা যখন তথ্য চাই যে, আমাদের দেশের লোক আপনার দেশে টাকা পাচার করেছে কি না বিদেশি অ্যাকাউন্টে, উনারা এসব তথ্য দেন না। উনারা তখন বলেন যে, গোপনীয়তা আইনে আমরা কোনো তথ্য দিতে পারবো না। এটা কিন্তু উভয় সংকট। বিদেশ সরকারও এনকারেজ করে টাকা পাচারে। যেমন কোনো কোনো সরকার বলে, আমার দেশে যদি আপনি ওয়ান মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করেন আপনাকে আমরা ওয়ার্ক পারমিট দেবো, সিটিজেনশিপ দেবো। এর ফলে তারা টাকা নিয়ে আসতে লোকদের প্রলুব্ধ করছে এবং এসে এখানে তা বিনিয়োগ করতে বলছে।
কানাডার বেগম পাড়া, মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম, সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রাখাসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ এনে অর্থপাচার ও তা ফেরানোর ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, (সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি প্রধান) খালেদা জিয়ার ছেলে কোকো (আরাফাত রহমান) যখন বিদেশে টাকা পাচার করেছিলেন, এ মার্কিন সরকারের এফবিআই (কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা) আমাদের সাহায্য করেছিল এবং তারা সাহায্য করার ফলে আমরা ওই টাকাগুলো ফেরত নিয়ে এসেছি। কেবল আওয়ামী লীগ সরকারই বিদেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত নিয়ে এসেছে। আর কোনো সরকার আনেনি।
তিনি বলেন, এ দেশগুলোর সরকার যৌথভাবে যদি কাজ করে তাহলে যে টাকাগুলো পাচার হয়েছে সেগুলো ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। যদি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য বা সব দেশের সরকার বলে যে আমাদের দেশে যারা বিদেশিরা টাকা এনেছেন, আমরা তাদের ইনভেস্টিগেট করবো, তখন টাকাগুলো ফেরত পাওয়া যায় কি না সেটার একটা উপায় বের হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি তারা কিছু গঠনমূলক পদক্ষেপ নেবে, এর ফলে আমাদের উপকার হবে। আমরাও চাই যে, যারা টাকা বিদেশে পাচার করেছে অবৈধভাবে, সেটা ফেরত আনার। আমরা নিজেরাও কিছু উপায় বের করেছি, বিদেশে কেউ পাচার করলে যদি আপনি স্বদেশে নিয়ে আসেন, আপনাকে কম ট্যাক্স চার্জ করা হবে। কিন্তু তাতেও খুব সুবিধা হচ্ছে না। আমরা অর্থ ফেরত পেতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। তবে বিদেশি সরকারের সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয়।
বিপ্লব আহসান
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ