প্রবাস
মায়ের চিকিৎসার জন্য পাঠানো টাকা আত্মসাৎ, প্রবাসীর আর্তনাদ
ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত মা ফিরোজা বেগম এখনও আশায় বুক বেঁধে আছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী সন্তানের পাঠানো টাকায় চিকিৎসা হবে তার। যন্ত্রণাকাতর মা এর পাশে থাকা পুত্রবধূও মিথ্যে সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। অথচ এই মা জানেন না ছেলে কামরুলে'র পাঠানো টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন ইউনুস আলী নামে নরসিংদীর এক যুবক। আর টাকা ফেরত পেতে দুয়ারে দুয়ারে আর্তনাদ করছেন মালয়েশিয়ায় নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করা ভুক্তভোগী কামরুল।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অঝোরে কাঁদলেন মোহাম্মদ কামরুল। কুয়ালালামপুরে এ প্রতিবেদককে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে-ই মমতাময়ী মায়ের অসুস্থতার খবর জানতে পারেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান ব্রেন টিউমার ধরা পড়েছে তার, দ্রুত-ই অপারেশনের প্রয়োজন। চিকিৎসা ব্যয় ধরা হয় আনুমানিক ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা।
দিন, রাত পরিশ্রম করে কামরুল যে টাকা উপার্জন করেন তা যথেষ্ট নয়, তাই বন্ধু ও সহকর্মীরা সবাই মিলে সহযোগিতার হাত বাড়ায় তার মা'কে বাঁচাতে। কুয়ালালামপুরের অদূরে সেরেম্বানের একটি কন্সট্রাকশান ফার্মে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন কামরুল। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঐ এলাকা দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউনের আওতায়। লকডাউনের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বের হওয়ার সুযোগ নেই।
যে কোনো প্রয়োজনে তাই ভাড়ায় গাড়ি চালিত বাংলাদেশি চালক ইউনুস আলীকে (ছদ্মনাম রানা) ডেকে পাঠান ওখানকার কর্মীরা। নিয়মিত আশা যাওয়া করা নরসিংদীর এই ইউনুস আলীর কাছেই গেলো ৮ অক্টোবর মায়ের চিকিৎসার জন্য যোগাড় করা ৩০ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ) দেন কামরুল। দেশে টাকা না পাঠিয়ে ইউনুস আলী (ছদ্মনাম রানা) এই টাকা নিয়ে মালয়েশিয়া ছেড়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগের বর্ণনা দিয়ে ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার মান্তিন পুলিশ স্টেশনের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে একটি পুলিশ রিপোর্ট করেছেন কামরুল। গোয়েন্দা বিভাগ বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে, সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে ও হোয়াটসএ্যাপের ভয়েস ম্যাসেজ শুনে মামলা হিসাবে গ্রহণ করেছেন। এছাড়া কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনেও এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কামরুল। অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন পুলিশ রিপোর্টের কপি, টাকা দেয়ার প্রমাণ ও অভিযুক্ত ইউনুস মিয়ার (ছদ্মনাম রানা) ছবিসহ ঠিকানা।
অভিযুক্ত ইউনুস মিয়া শুধু কামরুল নয়, আরো অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে পালিয়ে দেশে অবস্থান করছেন এবং দেশে ফিরে নতুন গাড়িও কিনেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তার বাড়ি নরসিংদীর বাদুয়াচরের কোনাপাড়ায়, বাবার নাম আব্দুল হাই ও মা রুফিয়া বেগম, বড় ভাই মো. খালেক।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ নরসিংদী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির বিন আমজাদ বলেন, প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ যারা আত্মসাৎ করে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে, কঠোর শাস্তি দেয়া উচিত।
কান্নাজড়িত কন্ঠে ভুক্তভোগী কামরুল বলেন, মাকে বাঁচাতে অনেক কষ্টে সকলের সহযোগিতায় এই টাকা জোগাড় করেছিলাম। এখন টাকা না পেলে মা'কে বাঁচাতে পারবোনা।
আরও পড়ুনঃ
চোখের সামনে অর্থাভাবে মায়ের চিকিৎসা না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দ্রুত-ই যাতে তার খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত পান সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও নরসিংদী'র প্রশাসনের সহযোগিতা চান ভুক্তভোগী কামরুল।
এস
প্রবাস
সৌদি আরবের আইন মেনে চলুন: জেদ্দার কনসাল জেনারেল
বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোসহ সৌদি আরবের আইন মেনে চলার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহবান জানিয়ছেন সৌদি আরবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, জেদ্দার কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হক। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে কনসাল জেনারেলের দায়িত্ব পালন শেষে ঢাকায় ফেরার আগে আয়োজিত এক বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
গত বৃস্পতিবার কনস্যুলেট জেনারেলের হল রুমে আয়োজিত ওই বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন-বাংলাদেশ রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন, সৌদি আরব।
এম ওয়াই আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল বলেন, ‘দীর্ঘ ৩ বছরের অধিক সময় জেদ্দায় কাজ করার সময় সহযোগিতার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। ’ এসময় তিনি বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণ এবং সৌদি আরবের আইন মেনে চলার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।
সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিছ সরকার উজ্জলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রবাসী সাংবাদিক রফিক চৌধুরী, শেখ রনি ও এবিএস রাব্বি।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী সাংবাদিক সাজিদুল ইসলাম, মাসুদ সেলিম, মোহাম্মদ ফিরোজ, কাওসার আব্দুস সালাম ও এআর নোমান।
এমআর//
প্রবাস
নিউইয়র্কে হয়ে গেল জমজমাট ‘ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠান
জমজমাট আর বর্ণাঢ্য আয়োজনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হয়ে গেলো ‘ঢালিউড ফিল্ম এন্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠান। স্থানীয় সময় রোববার জ্যামাইকার অ্যামাজোরা কনসার্ট হলে এ উপলক্ষ্যে যেন বসেছিলা এক ঝাঁক তারার মেলা।
ঢাকাই চলচ্চিত্র ও ছোট পর্দার বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীর অংশগ্রহনে অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে আরো আকর্ষণীয়। স্টেজে তাদের চোখ-ধাঁধানো পারফরমেন্স দর্শকদের মনে করিয়ে দেয় এটি যেনো এক টুকরো বাংলাদেশ। আর যেনো প্রবাসী বাংলাদেশিদের মনে করিয়ে দেয় যেখানেই থাক- বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি যাবে না ভোলা।
দর্শকদের জন্য রোববার সন্ধ্যা সাতটায় হল খুলে দেওয়া হলে হাজারো বাংলাদেশি হলে প্রবেশ করেন। দর্শকপূর্ণ হয়ে যায় পুরো হল। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকেও এসেছিলেন অভিনেত্রী দর্শনা বণিক।
জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী দিনাত জাহান মুন ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাবু জামানের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে আরও আকর্ষণীয়। ঢালিউড ও ছোট পর্দার অভিনেতাদের নৃত্য, সংগীত পরিবেশন, কখনও অনুভূতি প্রকাশ-দশর্কদের মন ছুয়ে যায়। আনন্দে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের নৃত্য পরিবেশনায়।
অনুষ্ঠানে ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন ঢালিউডের শক্তিমান খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ, জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, নিরব, তাহসান খান, অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী, তানজিন তিশা, তাসনিয়া ফারিন, মন্দিরা,গীতিকার কবির বকুল,কণ্ঠ শিল্পী রানু নেওয়াজ, অনিক রাজ, লায়লাসহ অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ পরিচিত মুখ ফাতেমা নাজনীন প্রিসিলাও পেয়েছেন ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড।
গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ‘ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠান। আলমগীর খান আলম শো টাইম মিউজিক এন্ড প্লে-র ব্যানারে বাংলাদেশের নাটক, সিনেমা, সংগীতের সেরা তারকাদের এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এবার ছিলো অ্যাওয়ার্ডটির ২২তম আসর।
শো টাইম মিউজিক এর কর্ণধার আলমগীর খান ছাড়াও অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক শাহ নেওয়াজ,নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ফরহাদ সোলেমানসহ নিউইয়র্কের বিশিষ্ট ব্যাক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এমআর//
প্রবাস
দুবাইয়ে পশুর হাটে জমে উঠেছে বেচাকেনা
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ের আল-কুসাইস ক্যাটল মার্কেটে পশুর বাজার জমে উঠেছে। আর একদিন পর কোরবানির ঈদে নিজেদের সাধ্যমতো কিনছেন কোরবানির পশু। স্থানীয় আরবদের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরাও নিচ্ছেন কোরবানির প্রস্তুতি।
দুবাইয়ে অধিকাংশ পশু বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা। আমদানিকৃত দেশ হচ্ছে সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, মিশর, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশ। স্থানীয়ভাবেও বিভিন্ন খামারে পশু পালন করা হয়। তবে ঈদকে ঘিরে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায় পশু আমদানি।
বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, গরু, ছাগল, উট এবং দুম্বাসহ বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন জাতের বিভিন্ন দেশের পশু। দর কষাকষিতে পছন্দসই পশু কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। গরুর মূল্য কিছুটা কম হলেও দুম্বার মূল্য তুলনামূলক বেশি। একটি গরুর মূল্য ৩৫০০ দিরহাম থেকে শুরু, আর একটি দুম্বার মূল্য ৫০০ দিরহাম থেকে শুরু।
দুবাইয়ের বাংলাদেশি প্রবাসীরা জানান, ঈদের দিনে দেশকে মিস করলেও প্রবাসী সহকর্মীদের সাথে আনন্দ উপভোগে দেশে পরিবারের সাথে না থাকার অভাব কিছুটা ভোলা যায়।
এএম/