জাতীয়
ছায়ানটের বর্ষবরণ এবারও হলো ভার্চুয়ালি
১৯৬৭ সালে থেকে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে সূর্যোদয়ের সাথে সরব হয়ে ওঠে রমনার বটমূল। প্রভাতী আয়োজনের মাধ্যমে বর্ষবরণের সকাল শুরু করে সংগঠনটি। সেই সঙ্গে রাজধানীর মানুষের প্রধান লক্ষ্য হয়ে ওঠে এই অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ।
১৯৭১ সাল মুক্তিযুদ্ধের বছর ছাড়া প্রতিবছরই এই পরিবেশনা চলেছে। তবে গতবছর এর ব্যতিক্রম ঘটে। করোনা মহামারির কারণে সীমিত পরিসরে বিটিভিতে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয় অন্যান্য বছরের অনুষ্ঠানগুলোর রেকর্ডের ভিত্তিতে।
করোনার কারণে একই অবস্থা এবছরও। আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকালে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল এবং বিটিভিতে বর্ষবরণের আয়োজন করেছেন।
পুরনো ও নতুন পরিবেশনের মিশ্রণে বাংলা বর্ষবরণের প্রতীকী, সংক্ষেপ ও ডিজিটাল আয়োজনটি সাজানো হয়। বিশেষ করে মানুষের মঙ্গল কামনা এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে উজ্জীবনী গান, বাণী ও কথন দিয়ে সাজানো ছিল অনুষ্ঠান।
শুরুতেই রাগালাপে সরোদবাদন করেন ইউসুফ আলী খান। এরপর 'পূর্বগগনভাগে দীপ্ত হইল সুপ্রভাত' সম্মিলিতভাবে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করে ছায়ানটের বড়দের দল। 'অন্ধকারের উৎস হতে' একক রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন আব্দুল ওয়াদুদ। 'আমি ভয় করব না', রীবন্দ্রনাথের এই গানটি এককভাবে গেয়ে শোনান সেঁজুতি বড়ুয়া। 'এলো এলো রে বৈশাখী ঝড়' সম্মেলক নজরুল গীতি উপস্থাপন করে ছায়ানটের ছোটদের দল।
সবশেষে কথন পর্বে অংশ নেন ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার অর্ধশতবর্ষ পূর্ণ করছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে, নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আপনারা ছায়ানটের প্রীতি ও ভালোবাসা গ্রহণ করুন। ১৯৬৭ সাল থেকে নগরজীবনে নববর্ষকে আবাহন জানানোর জন্য ছায়ানট রমনার বটমূলে যে সুর ও বাণীর আয়োজন করে আসছে তাতে প্রথম ছেদ পড়ে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে, আর গত বছর মহামারির কারণে।’
ছায়ানট সভাপতি বলেন, 'সংক্রমণের প্রকোপে এবছরেও তা আয়োজিত হচ্ছে অনলাইনে, অর্থাৎ সীমিত পরিসরে। উৎসবের আমেজ নেই; স্বজন হারানোর বেদনা আর সংক্রমণের শঙ্কা আজ সর্বজনের অন্তরে। তবে, পহেলা বৈশাখ বাঙালি জীবনে নিছক নববর্ষ উদযাপন নয়। আত্মপরিচয়ের সন্ধানে বাঙালি যে পথপরিক্রমায় অংশ নিয়েছে, সে পথ মসৃণ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল, নববর্ষের আয়োজন সর্বধর্মের বাঙালিকে ঐক্যসূত্রে যুক্ত করে, তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।'
সন্জীদা আরও বলেন, ‘লাখ প্রাণের আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সংস্কৃতির যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন হয়েছে। অর্ধশতবর্ষ পরে ধ্বংসস্তুপ থেকে জেগে ওঠা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে ঈর্ষণীয় সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি আমাদের আশাবাদী করে তোলে। কিন্তু ধর্মের মর্মবাণীকে উপেক্ষা করে নতুন অবয়বে উত্থিত ধর্মবিদ্বেষ সম্প্রীতির সমাজকে বিনষ্ট করতে সচেষ্ট। লোভের বিস্তার বৈষম্য সৃষ্টি করছে। খণ্ডবিচ্ছিন্নভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটছে সামাজিক অবক্ষয়ের। দেশের অগ্রযাত্রাকে অক্ষুণ্ণ রেখে নেতিবাচক প্রবণতাকে রোধ করবার জন্যে অতীতের মতো বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার প্রসার, মানবিক সমাজ গঠনের এক অবলম্বন হয়ে উঠতে পারে। আমরা আশা করছি অন্ধকারের উৎস থেকে আলো উৎসারিত হবে। নতুন বছর বয়ে আনবে সর্বজনের জন্য মঙ্গলবার্তা। আলো আসবেই।'
সবশেষে ছায়ানট শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ করা হয় অনুষ্ঠান। সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানটি দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল (https://youtu.be/drDGKeM9cgM) থেকে।
শেখ সোহান
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ