খুলনা
অন্যকে ফাঁসাতে চিংড়াখালীেত ফের হত্যাকাণ্ড!
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম হত্যার বছর না পেরোতেই ফের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ১৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে আবুল কাশেমের বাড়ির পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই ব্যক্তির নাম জাকির হোসেন।
তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন এবং আবুল কাশেমের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে এলাকায় পরিচিত। পরপর দুইটি হত্যাকাণ্ডে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে জাকির হোসেন হত্যাকাণ্ডের দায়ভার আবুল কাশেম পরিবারের ওপর চাপাতে তোড়জোড় শুরু করেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আক্কাস তালুকদার বুলু।
জাকির হোসেনের পরিবারের ভাষ্যমতে, ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে স্থানীয় নারিকেলবাড়িয়া বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয় জাকির। পরে রাস্তা থেকে তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে চেয়ারম্যান আলী আক্কাস তালুকদার বুলুর অনুসারীরা। কিন্তু এ ঘটনা কেউ জানার আগে ওই রাতেই চেয়ারম্যান বুলু পুলিশ নিয়ে আবুল কাশেমের বাড়ি হাজির হন। এসময় তার ছোট ছেলে তারেক মাহমুদকে গ্রেফতার করতে বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তবে তারেক ঢাকায় অবস্থান করায় তাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ।
চেয়ারম্যান বুলুর দাবি, জাকির হোসেনকে হত্যা করেছে আবুল কাশেমের ছোট ছেলে তারেক মাহমুদ ও তার অনুসারীরা। তবে তারেক ঢাকা থাকায় হত্যাকাণ্ডে তার জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন ওই চেয়ারম্যান।
এলাকাবাসীর দাবি, চিংড়াখালীতে আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর তার ছোট ছেলে তারেক মাহমুদ এলাকাবসীর অনুরোধে পরবর্তী নির্বাচন করতে রাজি হন। এতে ক্ষুব্ধ হন চেয়ারম্যান বুলু। তাই পথের কাঁটা সরাতে তাদেরই ঘনিষ্ঠজনকে হত্যা করে তারেকের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন বুলু।
জাকির হোসেনের পরিবার দাবি করেন, শুরু থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের জন্য আবুল কাশেমের পরিবারকে দায়ী করে মামলা করতে চাপ দেন চেয়ারম্যান বুলু। তবে নিহত জাকির হোসেনের পরিবার ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে কাশেম পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি হননি। পরে চেয়ারম্যান বুলুর চাপে পুলিশ বাদী হয়ে আবুল কাশেমের তিন ছেলে মাকসুদ, মোস্তাফিজ ও ছোট ছেলে তারেক মাহমুদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
আবুল কাশেমের ছেলে তারেক মাহমুদ বলেন, চেয়ারম্যান বুলু শুধু আমার বাবাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত থাকেনি। তিনি আমাদের ঘনিষ্ঠজনদের হত্যা করে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছেন। এমনকী জাকির হত্যার দায়ে আমাদের নামে মামলা করে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে এমনকী এলাকাছাড়া করার জন্য বুলু উঠেপড়ে লেগেছে। এ ঘটনায় তিনি পুলিশকে ব্যবহার করছেন।
মোরেলগঞ্জ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হবে।
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//