জাতীয়
‘ব্যক্তি ও রাজনৈতিক স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহারকারীরা আলেমদের শত্রু’
ব্যক্তি ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহারকারীরা প্রকৃত আলেমদের শত্রু। বললেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মুকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘ধর্মের নামে অরাজকতা, তথাকথিত ধর্মীয় নেতাদের ধর্মহীনতা এবং শান্তির ধর্ম ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মো. মামুনুর রশিদ বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি আয়োজিত আলেমদের এ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
প্রকৃত আলেমদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে না, তারা আল্লাহপাকের কাছে প্রার্থনা করেন, মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করার জন্য বয়ান করেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে কিছু আলেম নামধারী ব্যক্তিবর্গ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে নিজেদের আখের গোছানোতে লিপ্ত।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন বাবুনাগরী-মামুনুল হকের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি বেরিয়ে এসেছে। কোন দেশে দোকান আছে, ক’টা লরি আছে, এগুলো বেরিয়ে এসেছে। মাদ্রাসা দেখিয়ে বিভিন্ন দেশ এবং দেশের বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে থেকে তারা চাঁদা সংগ্রহ করে। আর সেই টাকা দিয়ে পরস্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে যায় ফুর্তি করার জন্য। এমনকি যাকাত-ফিতরার টাকাও তারা আরাম আয়েশের জন্য নিজেদের একাউন্টে নিয়ে গেছে। এরা কি আলেম! এরা আলেম নামধারী কলঙ্ক।
‘মন্ত্রীদের জন্য দেয়া পুলিশের সুরক্ষা ছাড়া আমার পেছনে কোনো গাড়ি থাকেনা আর মামুনুল হক সাহেব যখন বের হতো, সামনে পাঁচটা পেছনে পাঁচটা এমনকি বিভিন্ন সময়ে আরো বেশিও গাড়ি থাকতো’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘এই টাকা কিসের টাকা! তার কি কোনো ইন্ডাস্ট্রি আছে, তার কি কোনো ব্যবসা আছে! ব্যবসা হচ্ছে মাদ্রাসা দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। যারা এই সমস্ত কাজ করছে তারা হচ্ছে ইসলামের শত্রু।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইসলামের কথা বলে যারা মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়, ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দেয়, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়, এরা ইসলামের শত্রু। যারা ধরা পড়েছে তারা ছাড়াও ইসলামের শত্রু আরো আছে, তাদেরকেও চিহ্নিত করে বর্জন করা ও তাদের মুখোশ উন্মোচন করা প্রয়োজন। এই মুখোশ উন্মোচনের কাজটি করার জন্য আলেমদের প্রতি আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’
‘বিএনপি সরকার ইসলামের কথা বলে আলেম-ওলামাদের অনেক কিছু দেবে বলে কোনো কিছু দেয় নাই’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের সরকার আলেম ওলামাদের জন্য অনেক কাজ করেছে, ভবিষ্যতেও করবে। বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই আজকে ইসলামের খেদমতে নানা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কওমী সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন, তাদেরকে সরকারি চাকরিও দিয়েছেন। তার নির্দেশে সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ, প্রায় ৮৪ হাজার মসজিদভিত্তিক মক্তব, প্রতিটি মক্তবের আলেমকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেয়ার বিষয়টি যেমন জনগণকে জানানো প্রয়োজন তেমনি তারা ইসলামের কথা বলে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, সেটিও জনগণকে আপনাদের জানানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।'
মন্ত্রী এসময় ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের নীতির এক চুলও পরিবর্তন আমাদের সরকার করে নাই।’
ইসলামের সেবায় সরকারের বহুমুখী কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আলেমদের গ্রেপ্তার করেনি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে যারা অপরাজনৈতিক চিন্তা থেকে অঘটন ঘটানোর অপতৎপরতায় লিপ্ত জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করেছে। এরাই আমরা আলেমদেরকে গ্রেপ্তার করেছি এই কথা বিভিন্ন আঙ্গিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর চেষ্টা করে। আমি মনে করি তারা বাঙালির জাতি, ইসলাম এবং দেশের শত্রু।’
ইউনাইটেড ইসলামী পাটির চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য ড. মুফতি মাওলানা কাফিল উদ্দিন সরকার সালেহী প্রধান বক্তা হিসেবে এবং ইউনাইটেড ইসলামী পাটির মহাসচিব শাইখুল হাদিস মাওলানা মুফতি শাহাদাত হোসাইন সভায় বক্তব্য রাখেন। সভাশেষে সকলে দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রার্থনায় যোগ দেন ।
এএ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ